Thursday, December 12, 2024

আসন্ন রমজান মাসকে ঘিরে দ্রব্যে মুল্যের উর্ধগতি

মোঃ ইমদাদুল হক রানা (বালিয়াকান্দি) : নিয়মিত বাজারে মনিটরিং না করায় বেড়ে যাচ্ছে শাকসবজিসহ নিত‍্যপণ‍্যের দাম। বাজারগুলোতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মাছ, মাংস ও ডিমের দাম। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়ছে সমাজের স্বল্প আয়ের মানুষগুলো।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজবাড়ী জেলা বালিয়াকান্দি উপজেলার সর্ব বৃহত হাট বহরপুরে ঘুরে দেখা যায়, কাঁচাবাজারে আলু, বেগুন, লাউ, শিম, গাঁজর, টমেটো, শসা, পিঁয়াজ, রসুন, শুকনা মরিচ, কপিসহ কয়েকটি সবজির দাম গত দুই সপ্তাহ আগের চেয়ে কেজিতে ৪ / ৫ টাকা বেড়ে গেছে। মাছ, মাংস ও ডিমের মূল‍্যও সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে। বিভিন্ন ধরনের সবজিতে ঠাসা বহরপুর কাঁচাবাজার। সরবরাহ পর্যাপ্ত হলেও দাম নিয়ে রয়েছে ক্রেতাদের অসন্তোষ। দোকান ভেদে একই সবজি বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে। গতকাল হাটে শিম নলডোগা প্রতিকেজি ৪০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, দেশি রসুন ১২০ টাকা, আদা মোটা ১০০ – ১১০ টাকা, আদা দেশি ১৪০ টাকা, টমেটো ৩৫ টাকা, কাঁচামরিচ ১৬০ টাকা, পিঁয়াজ মূলকাটা ৩৫ – ৪০ টাকা কেজি, রসুন পুরাতন ১২০ টাকা কেজি, পটোল ৬০ টাকা গাঁজর ৪০ টাকা, শসা ৩৫ টাকা, ঢেঁরস ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, গোল বেগুন ৫৫ টাকা, করলা ৫০ টাকা, মুলা ১৫ টাকা, লাউ আকার ভেদে ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ফুলকপি প্রতি পিস ২০ টাকা, লেবুর হালি ২০ টাকা, ধনেপাতা ১০০ গ্রাম ২০ টাকা, লালশাক একমুঠো ছোট ১০ টাকা, পালংশাক একমুঠো ১০ টাকা, লাউশাক একমুঠো ২০ টাকা, মিষ্ঠি কুমড়া প্রতিফালি ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা, ডাঁটাশাক ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা মুঠো দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে মাছের দামদর উঠানামা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করছে বিক্রেতাগণ। বাজারে প্রতিকেজি পাবদা ৭শ’ থেকে ৭৫০ টাকা, ১ কেজি ওজনের বোয়াল ৯শ’ থেকে ১ হাজার টাকা, রুই কাতলার প্রতিকেজি ৩৫০ থেকে ৪শ’ টাকা, পাঁচমিশালী মাছ ৪শ’ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি, শিং মাছ প্রতিকেজি ৭৫০ থেকে ৮শ’ টাকা, দেশি মাগুর ১ হাজার টাকা কেজি, টাকি ছোটবড় মিলিয়ে সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি, শৈল ৬শ’ টাকা প্রতিকেজি, টেংরা ৫শ’ টাকা কেজি, ফার্মের পাঙ্গাস ২শ’ টাকা কেজি, তেঁলাপিয়া ১৮০ থেকে ২১০ টাকা কেজি, সিলভার কার্প ছোট ১৩০ টাকা, বড় ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস প্রতিকেজি ৭০০ টাকা, খাসির মাংস ৯ শ’ থেকে ১ হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি প্রতিকেজি ৪৩০ টাকা, লিয়ার ৩৫০ টাকা, সোনালী মুরগি ৪শ’ টাকা, দেশি হাঁস ৩৬০ টাকা, চীনা হাঁস ৩৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। কবুতর জোড়া ৩শ’ টাকা হিসাবে বিক্রয় করতে দেখা যায়। ফার্মের ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম প্রতি হালি ৬০ টাকা ও হাঁসের ডিম হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। খোলাবাজারে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা থেকে ২শ’ টাকা লিটার, সুপার ১৮০ টাকা লিটার, পাম ১৭০ টাকা লিটার, চিনি ১১৫ টাকা, গরুর দুধ ৬৫ – ৭০ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংসের দোকানদার মোঃ জহুরুল ইসলাম খাঁ, আবু মুসা খাঁ, মোঃ রমজান আলী, মোঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গত সপ্তাহেও ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। কিন্তু এ সপ্তাহে গরুর বাজার চড়া হওয়ায় প্রতিকেজি ৭শ’ টাকা করে বিক্রি করতে হচ্ছে।
খাসির মাংস বিক্রেতা মোঃ শওকত আলী খা জানান, দুই সপ্তাহ আগেও খাসির মাংস ৮শ’ থেকে সাড়ে ৮শ’ টাকা বিক্রি করেছি। এখন বাজারে খাসি ক্রয় করতে হচ্ছে ৯শ’র উপরে। একারণেই এখন দাম বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। আগে যেখানে ২টা থেকে ৪টা খাসি জবাই দিতাম এখন ১টা জবাই দিলেও বিক্রির অভাবে পরে থাকে। এমন চলতে থাকলে ব‍্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।
চায়ের দোকানে আলোচনারত মানুষের মুল আলোচনার বিষয় এখন দ্রব্যে মুল্যের উর্ধগতি। কেউ কেউ বলছে প্রতি বছরের ন্যায় রমজানের আগেই শুরু হয়ে গেছে মুল্য বৃদ্ধি।
এব‍্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও স্থাণীয় প্রশাসন হস্তক্ষেপ করলে বাজার অনেকটাই স্বাভাবিক থাকবে বলে ধারণা করছে হাটে কাঁচাবাজার করতে আসা অনেক সচেতন মহল। আসন্ন রমজানে এমন অবস্থা চলমান থাকলে খেটে খাওয়া মানুষগুলো রমজানের রোজা রাখতে পারবেন না। প্রশাসনের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন অনেকেই।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here