Saturday, November 16, 2024

গোয়ালন্দে মুনস্টার স্কুলের ছাত্রী অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা

মোজাম্মেলহক লালটু, গোয়ালন্দ :রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মুনস্টার কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণি ছাত্রী রোজিনা আক্তার স্কুলে শিক্ষদের অপমান সইতে না পেরে ডিটারজেন্ট পাউডার খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। সে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের নছরউদ্দিন সরদার পাড়া মহল্লার নিজাম উদ্দিন শেখের মেয়ে। গুরুতর অসুস্থ্য ওই স্কুলছাত্রীকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

অসুস্থ্য স্কুলছাত্রীর বাবা নিজাম উদ্দিন শেখ জানান, তার মেয়ের ক্লাস রোল ৩। চলতি মাস সহ স্কুলের বিভিন্ন ফি বাবদ ১৯শ টাকা পাওনা ছিল। সপ্তাহখানে আগে ১৫শ টাকা পরিশোধ করে দেই। রোববার স্কুলে পরীক্ষা চলাকালে চলতি মাসের বেতন বকেয়া থাকায় তার মেয়েকে অপমান করে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেন প্রধান শিক্ষক। এরপর আমার মেয়ে অপমান সইতে না পেরে বাড়িতে এসে সবার অজান্তে ডিটারজেন্ট পাউডার (ওয়াসিং পাউডার) খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি পরিবারের লোকজন টের পেয়ে তার মেয়েকে দ্রুত গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। এসময় তিনি আরো বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ তার মেয়েকে এ ভাবে অপমান না করে অভিভাবক হিসেবে আমাকে বলতে পারতেন। আমি বেতনের চারশ টাকা পরিশোধ করে দিতে পারতাম।
স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ জানান, শেষ পরীক্ষার দিন শুধু রোজিনা আক্তারই নয়, বেতন বকেয়া থাকায় আরো প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি। রোজিনা যে এ ধরনের ঘটনা ঘটাবে তা তারা বুঝতে পারেননি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজিম জানান, মুনস্টার কলেজিয়েট স্কুল একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের বেতনেই শিক্ষকদের বেতন হয়। ইতিমধ্যে অন্তত ৪/৫ লাখ টাকা শিক্ষার্থীদের বেতন বকেয়া হয়ে রয়েছে। বকেয়া বেতন আদায়ের জন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি। তবে কোন শিক্ষার্থীকে কোন প্রকার অপমান করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। বরং বলা হয়েছে বেতন পরিশোধ করলে পরবর্তীতে এই পরীক্ষা নেয়া হবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. আঁখি বিশ্বাস জানান, ডিটারজেন্ট পাওডা খেয়ে অসুস্থ্য হওয়া ওই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও আরো কিছু সময় না গেলে ঝুকিমুক্ত বলতে পারছি না।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শরীফ মোহাম্মদ জানান, যে কোন ধরনের পয়জন খাওয়া রোগীর যে চিকিৎসার যে নিয়ম, এ ক্ষেত্রে সেটা করা সম্ভব হয় না। কারণ ডিটারজেন্ট পাওডার খাওয়া রোগীর শাস্বনালি এক ধরনের বার্নের সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে ৩ থেকে ৭ দিন পরও রোগীর অবস্থা খারাপ হতে পারে।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here