মোজাম্মেলহক, গোয়ালন্দ: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট এলাকার ওমর আলী মোল্লা পাড়ায় ও গফুর মন্ডল পাড়ার সামনে হতে মাল্লাপট্রি ব্রীজ পর্যন্ত মরা পদ্মা নদী থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে অবাধে মাটি ও বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী চক্র।
মরা পদ্মা নদী থেকে মাটি ও বালু উত্তোলনের ফলে নদীর দু পাশে থাকা দুটি গ্রামের কয়েক শত পরিবারও রাস্তা ঘাট স্কুল মসজিদ সহ ফসলি জমি রয়েছে ঝুঁকিতে যে কোন সময় নদীতে ধসে পড়বে। জানাগেছে,দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট এলাকায় ওমর আলী মোল্লার পাড়া ও ইদ্রিস পাড়ার মাঝে মরা পদ্মা নদীতে তিন মাস যাবৎ অবাধে বাংলা ড্রেজিং মেশিন দিয়ে মাটিওবালু উত্তোলন করে তাহা বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে কাদের ফকির নামে এক মাটি খেকো। অন্য দিকে দেব গ্রাম আতরের বাজারে পাশে মরা পদ্মায় বাংলা ড্রেজিং মেশিন দিয়ে অবাধে মাটি ও বালু তুলে বিক্রি করছে মিনু নামে এক মাটি খোকো এবং ক্যানাল ঘাট এলাকা গফুর মন্ডল পাড়ায় দুই মাস ধরে মরা পদ্মায় দুটি বাংলা ড্রেজিং মেশিন দিয়ে মাটি ও বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে মাটি খেকো লোকমান ও আবজাল। নদীর দু পাড় ঘেসে যে সকল পরিবার গুলো বসবাস করছে তাদের বাড়ী ঘর কয়েক বার নদী গর্ভে চলে যাবার পর এখনে এসে বাড়ী ঘর করে কোন রকম বসবাস করছে। এখন যে ভাবে মরা পদ্মায় ড্রেজিং করে মাটি উত্তোলন করছে তাতে যে কোন সময় রাস্তসহ বাড়ী ঘর নদী গর্ভে চলে যাবে।এলাকা বাসী তাদেরকে বার বার মাটি উত্তোলনে নিষেধ করলে তারা শুনে না বরং উল্টে তাদেরকে ভয় ভীতি দেখানো হয়। পদ্মা পাড়ের মাটি খেকোদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে কেউ সাহস করে না। তারা সরকারী কাজের নাম করে অবৈধ ভাবে বাংলা ড্রেজিং মেশিন দিয়ে মরা পদ্মা নদী থেকে অবাধে মাটি কেটে বিক্রি করছে। স্থানীয়রা জানান,এই মরা পদ্মা নদী এখন বড় পদ্মা নদীর চেয়ে বেশি গভীর হয়েছে। কয়েক মাস ধরে মরা পদ্মা নদী থেকে কাদের ফকির ড্রেজিং মেশিন দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করায় এই নদী এখন বড় নদীর চেয়ে বেশি গভীর হয়েছে। সে কারো কথা মানে না। মাঝে মধ্যে দেখি অভিযান এসে পাইপ ভেঙ্গে দেওয়ার কিছুদিন পরই আবার দেখি চলছে ড্রেজিং মেশিন।এই মরা পদ্মা নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করে চলেছে বেপারী পাড়ার কাদের,দেবগ্রামের মিনু, ক্যানাল ঘাটের আবজাল, হারুন,ইসলাম,জিয়া, আইনদ্দিন পাড়ার ইসমাইল অবাধে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। যদি এই অবৈধ ড্রেজিং মেশিন বন্ধ না করা হলে এই দুটি গ্রামসহ রাস্তাঘাট, মসজি , মাদ্ররাসা ,স্কুল ও আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে যাবে। আমাদের ক্ষতি হলে তাদের কিছুই যায় আসে না। মরা পদ্মার পাড়ে বসবাসকারী মো. তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, এই ড্রেজিং মেশিন দিয়ে মাটি কাটায় নদী বহু ডিপ হয়েছে । এই ড্রেজিং মেশিনটি চলছে তিন মাস ধরে বর্ষার সময় যদি নদীতে স্রোত শুরু হলে প্রথমেই আমার বাড়ীটি ধসে পড়বে। তার পরে নদীর স্রোতে এক টানে গ্রাম শেষ হয়ে যাবে। কাদের ফকির দেশের ক্ষতি করছে। সরকারী রাস্তার কাজের কথা বলে কাদের মাটির ব্যবসা করে যাচ্ছে। রাস্তার কাজ হয়ে গেছে বহু আগেই তাও তারা বলে রাস্তার কাজ করছি আসলে তারা মাটি অন্য জায়গায় বিক্রি করছে। রওসনারা বেগম বলেন, বছর দুয়েক আগে নদীতে আমাদের বাড়ী ঘর ভিটা মাটি নদীতে চলে যাবার পর এখানে এসে বাড়ীঘর করেছি। যে ভাবে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে তাতে আবার ও আমাদের বাড়ী ঘর নদীতে চলে যাবে। মাটি খেকো কাদের ফকির বলেন,আমি তিন মাস যাবৎ ড্রেজিং মেশিন চালাচ্ছি।উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে কোন অনুমতি আনা হয়নি। এটা আমি করতে পারি নাই এটা চেয়ারম্যান জানে।রাস্তার কাজ করছি।
গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারি (ভূমি) মো.আশরাফুল রহমান বলেন,মরা পদ্মার ড্রেজিংতো এটা বলতে পারেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক্সেন মহাদয় ।আসলে আমি এ ব্যাপারে এখনো জেনে উঠতে পারি নাই। পানি উন্নয়ন বোর্ড এরা ভালো বলতে পারবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊপবিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অংকুর বলেন, আমাদের কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়নি।জেলা প্রশাসক এর সাথে আলাপ করে মোবাইল কোর্ট করতে হবে। আমরা তো অভিযান করি না। অভিযান করে জেলা প্রশাসক । প্রশাসনিক ক্ষমতা তাদের হাতে, আমাদের হাতে প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই।