মোঃ ইমদাদুল হক রানা : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বাঘুটিয়া স্বর্গীয় অনিল রঞ্জন সরকারের বাসভবনে ১৯তম বার্ষিকী শ্রী শ্রী তারকব্রক্ষ্ম মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান ও অখন্ড ২৪ প্রহর লীলা কীর্তন অনুষ্ঠানে সমাপ্তি হয়েছে। গত ৮ নভেম্বর থেকে শুরু হয় এই অনুষ্ঠান।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪ টায় গীতা ও শ্রী মহম্ভগদত পাঠ ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে নামযজ্ঞানুষ্ঠানের শুভ সুচনা হয়। এতে পাঠক ছিলেন মাগুরার মহারাজ শ্রী চিন্ময়ানন্দ দাস ব্রক্ষ্মচারী ( চঞ্চল গোস্বামী) রাত ৮টায় শ্রী রাধাকৃষ্ণের শুভ রাসলীলা বিগ্রহ পূজা উদযাপন ও প্রসাদ বিতরণ। রাত ১১টায় শ্রী শ্রী তারকব্রক্ষ্ম মহানামযোজ্ঞের মঙ্গল ঘট স্থাপন ও শুভ অধিবাস উদযাপন।
বুধবার (৯ নভেম্বল) থেকে রবিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত ২৪ প্রহর ব্যাপী শ্রী শ্রী তারকব্রক্ষ্ম মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান। এবং ঐদিনই সকাল থেকে রাধাকৃষ্ণের আট প্রহরব্যাপী লীলা কীর্তন। রবিবার (১৩ নভেম্বর) রাধাকৃষ্ণের রাসলীলা শেষে কৃষ্ণভক্ত ও নগর কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে শ্রীমনমহাপ্রভূর ভোগবাস অনুষ্ঠান ও ভক্তগণের মাঝে মহাপ্রসাদ বিতরণ করে আয়োজকবৃন্দ।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বাঘুটিয়া গ্রামের স্বর্গীয় অনিল রঞ্জন সরকারের বাসভবনে আয়োজিত ১৯তম বার্ষিকি মহানামযজ্ঞানুষ্ঠান তত্ত্বাবধান, পরিচালনা, পৃষ্ঠপোষকতা ও সার্বিকভাবে সহযোগীতায় করেন বাঘুটিয়া গ্রামের গৌর ভক্তবৃন্দ। ১৯তম মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানে যারা মহানাম সুধা পরিবেশন করেন তাদের মধ্যে ছিল রাজবাড়ীর যোগমায়া সম্প্রদায়, মাগুরার রূপ নারায়ণ সম্প্রদায়, রাজবাড়ীর চন্দ্রাবলী সম্প্রদায়, বরিশালের শোভাশ্রী সম্প্রদায়, বরিশালের দেবী দূর্গা সম্প্রদায়, রাজবাড়ীর অদ্বৈত সম্প্রদায়। লীলা কীর্তন পরিবেশনায় গাজীপুরের কিশোর কুমার পাল, সাতক্ষীরার শ্রীমতী অঞ্জলী রাণী সরকার ও বগুড়ার প্রতিমা দেবী।
এবিষয়ে বাঘুটিয়া গ্রামের শী অখিল বন্ধু দাস বলেন, দীর্ঘ দেড়যুগ পার করে ১৯তম বার্ষিক এই উৎসব আমাদের গ্রামে পালিত হলো। অনুষ্ঠানে রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভক্তবৃন্দের পদচারনায় মুখরিত ছিলো আমাদের গ্রাম। সকলে মিলে গ্রামের এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করছি। বার্ষিক এই আয়োজনে গ্রামের ভক্তরা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে। স্বর্গীয় অনিল রঞ্জন সরকারের পরিবারের সদস্যরাও এই আয়োজনে অনেক বড় ভূমিকা রাখেন বলেও জানান তিনি।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী প্রেমানন্দ দাস বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও আমাদের গ্রামের স্বর্গীয় অনিল রঞ্জন দাসের বাড়ীতে নামযজ্ঞানুষ্ঠান সুন্দরভাবে সমাপ্ত হয়েছে। দেশ বরেণ্য শিল্পীরা ২৪ প্রহরব্যাপী কীর্তন পরিবেশন করেছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভক্তবৃন্দ এই নামযজ্ঞানুষ্ঠান শুনতে ভীড় জমিয়েছিলেন। এটা ছিলো ভক্তদের মহামিলন।
বাঘুটিয়া মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির সভাপতি শী সুবোধ কুমার দাস বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৯ বছর যাবৎ আমাদের গ্রামে এই ধর্মানুষ্ঠান পরিচালনা করে আসছি। আমাদের এই ধর্মানুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষ্ণ ভক্তবৃন্দ এখানে আসে এবং অতি আনন্দের সাথে অনুষ্ঠান উপভোগ করাসহ ঠাকুরের প্রসাদ গ্রহণ করে ধন্য হয়। এবারেও তার ব্যাতিক্রম ছিলোনা। সোমবার (১৪ নভেম্বর) দধিমঙ্গল ও মোহন্ত বিদায়ের মধ্যদিয়ে যথেষ্ট সুন্দরভাবে অনুষ্ঠানের সমাপন হয়েছে।