রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া একই সাথে জমজ তিনটি শিশুর জন্ম দিয়েছেন হত দরিদ্র পরিবারের গৃহবধু মোছা. ববিতা বেগম (২৮)। ফুটফুটে তিনটি ছেলে সন্তান জন্ম দিয়ে পরিবারে আনন্দের আমেজ বিরাজ করলেও তাদের লালন- পালন ও চিকিৎসায় অতিরিক্ত ব্যায়ের কারণে বিপাকে পড়েছেন ববিতা ও তার পরিবার । এ নিয়ে রাজবাড়ী জার্নালে গতকাল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে বাচ্চাদের তিন মাসের খাদ্য ও নগত অর্থ নিয়ে তাদের পাশে এসে দাঁড়ালেন গোয়ালন্দের মানবিক ইউএনও আজিজুল হক মামুন। হতদরিদ্র গৃহবধু ববিতা বেগম গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের শাহাদত মেম্বার পাড়ার দিনমুজুর মো. কিরণ মুন্সির স্ত্রী।
এর আগে সরেজমিনে জানা গেছে, নদী ভাঙ্গনে সহায়-সম্বলহীন ববিতা কিরণের পরিবার এসে আশ্রয় নেয় দৌলতদিয়া শাহাদত মেম্বার পাড়া। সেখানেই তিন শতাংশ জমি লীজ নিয়ে গড়ে তোলেন ছোট্ট একটি বসত বাড়ি। জীবন ও জীবিকার তাগিদে কখনো হকারী, কখনো বা দিনমুজুরের কাজ করে কোনমতে চলছিলো ৭বছর বয়সী একটি ছেলেকে নিয়ে তাদের অভাবের সংসার। এরিমধ্যে তাদের ঘর আলো করে একই সাথে জন্ম নেয় আরো তিনটি পুত্র সন্তান। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া ওই তিন শিশু- তামিম, তাছিন ও তানজিল এর লালন-পালন ও চিকিৎসা নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন পরিবারটি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে গেলে আশ্বাস মিললেও, মিলেনি কোন সহযোগিতার। এ অবস্থায় হতদরিদ্র পরিবারের জন্ম নেওয়া যমজ তিন সন্তানের খাদ্য ও নগত অর্থ দিয়ে সাহায্যসহ পুরো দায়িত্ব নিয়েছেনউপজেলা নিবার্হী অফিসার।
যমজ তিন সন্তান জন্ম দেয়া গৃহবধু ববিতা বলেন, নভেম্বর মাসের ৪ তারিখে আল্লাহ্ আমার কোলজুড়ে ফুটফুটে তিনটি পূত্র সন্তান দিয়েছেন। এই তিনটি সন্তান লালন-পালন করতে গিয়ে ধারদেনা করে আমরা খুব বিপদের মধ্যে আছি। তিনটি সন্তানের জন্য প্রতিদিন একটি ল্যাকটোজেন ওয়ান ও মিসরি লাগে যার দাম প্রায় সাড়ে ৬শ টাকা। এর উপর আবার আমাদের নিজেদেরও তো পেট আছে। আমার স্বামী দিনমুজুরের কাজ করে প্রতিদিন আয় করে ৪শ থেকে ৫শ
টাকা। যার কারণে প্রতিদিনই কারো না করো কাছ থেকে ধারদেনা করে ওদের খাবার যোগাতে হয়। আজ আমরা চিন্তামুক্ত হলাম আমার যমজ তিন সন্তানে লালন পালনের ও চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন গোয়ালন্দের ইউএনও স্যার।তাতে আমি ও আমার পরিবারে সবাই খুশি হয়েছি।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুল হক খান মামুন বলেন, এক সঙ্গে তিনটি শিশু জন্ম নেওয়ার বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে অবগত হলাম। প্রথমে নতুন অতিথি যারা আসেছেন তাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছি। তারা যেন সু- নাগরিক হিসেবে বড় হয়ে ওঠে। এবং পরিবারের যারা বাবা-মা আছেন তাদেরকেও অভিনন্দন জানাই। আজকের শিশু আগামি দিনের ভবিষ্যৎ। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে যমজ তিন সন্তানের তিন মাসের খাদ্য ও নগত অর্থ দিয়েছি পরবর্তীতে আরো দিবো। আমি এই পরিবারে পাশে আছি বাচ্চাদের লালন পালন ও চিকিৎসা দায়ভার আমি নিলাম এবং এদের থাকার জন্য প্রধান মন্ত্রীর উপহারের একটি ঘরও প্রদান করবো ।