গত কয়েকদিনে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীতে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ২১ জেলার প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট এলাকায় ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। আর ভাঙ্গন আতংকে রয়েছে পদ্মা পাড়ের হাজারো বাসিন্দারা।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) হঠাৎ করে ভোর রাত থেকে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গন লঞ্চ ঘাট থেকে ১ নং ফেরিঘাট এলাকার মধ্যে ৩ টি পয়েন্টে অন্তত ৫০ মিটার এলাকা ধ্বসে গেছে। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ভাঙ্গন রক্ষায় ফেলানো জিও ব্যাগ। এতে করে ওই এলাকায় বড় ধরনের ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে ফেরিঘাটসহ সংলগ্ন মজিদ শেখের পাড়ার দেড় শতাধিক পরিবার।এছাড়া ৭ নং ঘাট ও ঘাট সংলগ্ন সাত্তার মেম্বার পাড়ার অর্ধশত পরিবারও চরম হুমকিতে রয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে লঞ্চঘাট এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলছে। হঠাৎ করে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ বন্ধ করে দেন তারা । তাদের গাফলতির কারনে আজ নতুন করে ৫ পরিবারের ভিটামাটি নদী গর্ভে চলে যায়। তারি প্রতিবাদে নদী ভাঙ্গন এলাকার লোকজন ক্ষেপে গিয়ে ঘরের টিনের চাল দিয়ে ঢাকা খুলনা মহাসড়কটি আটকে দেয়। পরে থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সে সময় ফেরিঘাট রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত পানিউন্নয়নবোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ কতৃপক্ষের কোন তৎপরতা লক্ষ করা যায় নি। সেখানে অন্তত ৩ টি পয়েন্টের জিও ব্যাগ ধসে প্রচন্ড ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। পাশ দিয়েই বয়ে যাচ্ছে তীব্র স্রোত।এ সময় পাড়ের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য বাবু মোল্লা, বেনজির আহমেদ, বিলাস বেপারিসহ কয়েকজন বলেন, আমরা অনেক আগে থেকে এখানে ভাঙন ঝুঁকির বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ কতৃপক্ষকে বলে আসছি। মাঝে দিন দশেক আগে কিছু জিও ব্যাগ ফেলেছিল।কিন্তু গত ৩ দিন ধরে এখানে ৩ টি পয়েন্টে ৫০ মিটারের মতো এলাকা ধসে গেলেও তারা কোনই ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আরেকটু পানি বেড়ে গেলে ভাঙন পরিস্হিতি ভয়াবহ রুপ নেবে।তখন ঘাটের সাথে সাথে এখানকার অন্তত ২ শ পরিবারের ভিটেমাটি বিলীন হয়ে যাবে।
যাদের ভিটামাটি নদীগর্ভে চলে গেছে সাহেরা বেগম,বেনজির বেপারী, রফিক শেখ,মমিন সরদার,বাবু মন্ডল সহ অনেকেই বলেন, শুস্ক মৌসুমে এ এলাকা থেকে প্রভাবশালীরা বালু কেটে নিয়ে যাওয়ায় এখন অল্পতেই আমাদের গ্রামটি ধসে যাচ্ছে। তবে এখনো সঠিক ভাবে নদীতে জিও ব্যাগ ফেললে পাড়ের বাড়িঘরগুলো রক্ষা করা সম্ভব।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল জানান, দৌলতদিয়ার লঞ্চঘাট,ফেরিঘাট ও ঘাট সংলগ্ন কয়েকটি গ্রাম এবং ঘাটের উজানে আরো কয়েকটি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়ে গেছে। ঘাটগুলো ছাড়াও হুমকিতে রয়েছে বহু পরিবার। জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ কতৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আজিজুল হক খান মামুন বলেন, আমি ভাঙন পরিস্হিতি সরেজমিন দেখে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি।আশা করছি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।