স্টাফ রিপোর্টারঃ জাতীয় নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা সহ গণহত্যায় অভিযুক্ত সকলের বিচার, সংস্কার, স্থানীয় নির্বাচন ও পরে জাতীয় নির্বাচনের দাবী জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল ,সাবেক এম পি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর ২৮শে ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) সকালে রাজবাড়ী শহিদ খুশি রেলওয়ে মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামী কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। সভায় সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও জেলা আমীর এডভোকেট মো: নুরুল ইসলাম ।
তিনি বলেন, ২হাজার ছাত্রের জীবন ,৩হাজার ছাত্র জনতা আহত ও পঙ্গু হয়েছে। নির্যাতিত মানুষেরা ক্ষতস্থানের চিহ্ন নিয়ে এখনোও হাঁসপাতাল, দেশে বিদেশে ,বাড়ীতে এখনোও আহাজারি করছে। অকুতোভয় নিয়ে দেশের ছাত্র-জনতা এই আন্দোলনকে একটি সার্বজনীন আন্দোলনে রুপ দিয়েছিলো। ছাত্রদের সেই আন্দোলনের তোপের মুখে হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। আর গিয়ে উঠেছে ভারতে । মানুষ মনে করেছিলো শেখ হাসিনাকে সড়ানো যাবে না ২০৪১ সালের ভিশন নিয়েছিলো । কিন্তু ছাত্র-জনতার তোপের মুখে রান্না করা খাবার খেয়েও যেতে পারেনি হাসিনা । ভারতে বসেও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
এখন আমাদের দায়িত্ব হলো, যারা রক্ত দিয়ে নতুন বাংলাদেশ দিয়ে গেলো তাদের ঋণ পূরণ করা। তারা একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলো ,যেখানে কোন বৈষম্যর শিকার হবে না । ভাত কাপড় চিকিৎসা সহ অন্যান্য কোন ক্ষেত্রে তাদের কোন সমস্যা হবেনা। ন্যায় বিচার পাবে, বৈষম্যহীন অর্থনীতি হবে । একটি কল্যান রাষ্ট্র ,যেখানে মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে। এদের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে ।
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামি একটি নতুন বাংলাদেশ গড়বে , সেই বাংলাদেশ হলো মানুষের অধিকার, মানুষের ইনসাফ ও সুবিচারের বাংলাদেশ । যেখানে কারোও অভাব থাকবে না। সকল পেশার মানুষের মুক্তি হবে । কিন্তু সেই বাংলাদেশ গড়তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড.ইউনুস যৌক্তিক সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনের জন্য তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জামায়াত ইসলাম ড.ইউনুস কে কথা দিয়েছে একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন দিন আমরা আপনার পাশে আছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে সেই অভিযাত্রা শুরু হয়েছে । কিন্তু দুঃখ জনক আমরা লক্ষ করছি সেই নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্ত করার জন্য দেশিয় ও আন্তর্জাতিকভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন ফন্দি করে এই ৬মাসে সরকারকে অনেকবার থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিপ্লবের পরে চার বার ক্যু করার চেষ্টা করা হয়েছে। জুডিশিয়াল ক্যু ,আনসার কান্ড, সচিবালয়ে আগুণ এই দাবি সেই দাবি করে সরকারকে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফেসিস্ট হাসিনা ভারতে বসে নির্বাচন বানচাল করার চক্রান্ত করছে । আবার দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি আমরা যারা একই সাথে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করেছি ,তাদের মধ্যেও দেশে প্রশাসন ও দলের মধ্যে যেন ফ্যাসিবাদের বাসা বেঁধেছে । এখনোও প্রশাসনের রন্ধে রন্ধে ফ্যাসিবাদের পেতাত্বারা ঘাপটি মেরে বসে আছে। তারা মাঝে মাঝে উস্কানি দিচ্ছে। তানাহলে আমরা যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলাম ,সেখানে কেন এত বিভক্তি । আমাদের খেয়াল রাখতে হবে দেশের স্বার্থ। দেশের স্বার্থ ছাড়া দলের স্বার্থ যারা বড় করে দেখে তারা কখনোও দেশের কল্যান কামনা করে না ।
তিনি আরোও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের দাবী, জাতীয় নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা সহ গণহত্যায় অভিযুক্ত সকলের বিচার, সংস্কার, স্থানীয় নির্বাচন ।স্থানীয় মানুষের জনদূর্ভোগ দূর করতে স্থানীয় নির্বাচন আগে লাগবে। নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি বন্ধের দাবী জানান তিনি। এ সময় তিনি মিথ্যা মামলায় আটক জামায়াতের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবী জানান। রাজবাড়ীতে জামায়েতে ইসলামের পক্ষে ভোট চেয়ে ,নির্বাচনে জয়লাভের আশা প্রকাশ করেন। ইসলামী শাষন কায়েমে কল্যান রাষ্ট্র গঠনের প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন ।
সুত্রঃ https://youtu.be/beW4-bi_Zdk