নেহাল আহমেদ,রাজবাড়ীঃআজ মনসা পূজা । মনসা নাগ পঞ্চমীও নামেও পরিচিত। মনসা দেবী সাপদের দেবতা। মনসা তুষ্ট হলে সাপ তুষ্ট থাকে। এবং তারা তুষ্ট থেকে আমাদের সুখ সমৃদ্ধি দান করে। তাই হিন্দু ধর্মালম্বীরা এই দিনে বিশেষ করে দুধ আর কলা পূজার প্রধান উপাদান হিসাবে উপস্থাপন করেন।
গ্রন্থে পাওয়া তর্থ্য মতে মনসা হলেন একজন লৌকিক হিন্দু দেবী। দেবী ভাগবত পুরাণ সহ আরও অনেক পুরাণে দেবী মনসার উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রধানত বাংলা অঞ্চল এবং উত্তর ও উত্তরপূর্ব ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে তার পূজা প্রচলিত আছে। সর্পদংশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে, সর্পদংশনের প্রতিকার পেতে, প্রজনন ও ঐশ্বর্যলাভের উদ্দেশ্যে তার পূজা করা হয়। মনসা ঘট স্থাপন করে পুজো করা হয়। মনসা নাগ-রাজ (সর্পরাজ) বাসুকীর ভগিনী এবং ঋষি জরৎকারুর (জগৎকারু) স্ত্রী। তার অপর নামগুলি হল বিষহরি বা বিষহরা (বিষ ধ্বংসকারিণী), নিত্যা (চিরন্তনী) ও পদ্মাবতী।প্রাচীন কাল থেকে ভারতের সর্প পূজা প্রচলিত থাকলেও সর্প – সংস্কৃতির সূচনা ঘটেছিল আজ থেকে প্রায় ছয় হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরে। পিরামিডের মধ্যে ও অন্যত্র মিশরের রাজা অর্থাৎ ফারাওদের ব্যবহৃত যেসব রাজকীয় সামগ্রী পাওয়া গিয়েছে তার ভিতর তাঁদের যে শিরস্ত্রাণ মিলেছে, তাতে সর্পচিহ্নলাঞ্চিত মুকুটও রয়েছে । উদ্যত ফনা সর্পের এই প্রতিকৃতি মুকুটে শোভিত হওয়ার ফলে ধারণা হয় যে মিশরে সর্প- সংস্কৃতি রাজকীয় পেয়েছিল । এছাড়া ‘মেডুসা’ নামে যে মিশরীয় দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায় তাঁর মূর্তিটি বিস্ময়কর ভাবে সর্প শোভিত। তিনি গলায়, হাতে, বাজুতে, কোমরে, পায়ে যেসব অলংকার ধারণ করে আছেন সেগুলি এক একটি সাপের আকৃতি।
অন্যদিকে কেউ কেউ মনে করেন সর্পকে দেবতা হিসেবে পূজা করার রীতি প্রথম চালু হয়েছিল ইউফ্রেটিস নদী তীরবর্তী তুরানি জাতির মধ্যে। তারপর এই জাতির শাখা বিভিন্ন দেশে উপনিবিষ্ট হলে সেইসব অঞ্চলে সর্প পূজা বিস্তৃত হয়।তবে সর্পের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মনসাকে এই উপ মহাদেশে দীর্ঘদিন ধরে পূজা করে আসছেন। এই মনসা মঙ্গল নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে।লোকশ্রুতিতে জানা যায় চাদঁ সওদাগরের সপ্ত ডিঙ্গা রাজবাড়ী জেলার হড়াই নদীতে ডুবে ছিলো।অনেক পর্যটক এখনো সেই ডিপি টা দেখতে আসেন।