রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ রাজবাড়ী আদালতে মামলায় প্রক্সি দিতে আসা যুবকের জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজবাড়ীর দুই নম্বর আমলী আদালতে এই ঘটনাটি ঘটে। কারাগারে যাওয়া যুবকের নাম বিজন কুমার হালদার (৩০)। তাঁর বাড়ি পাংশা পৌর শহরের পারনারায়নপুর গ্রামে। তিনি রবিউল ইসলাম ওরফে মুন্নু নামে এক যুবকের পক্সি দিতে এসেছিলেন। জানা যায়, চলতি বছরের ১২ এপ্রিল মামলাটি দায়ের করেন জালাল উদ্দিন বিশ^াস। মামলায় উপজেলা যুবলীগের বহিস্কৃত আহŸায়ক ফজলুল হককে (৪০) প্রধান আসামী করে সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩-৪জনকে আসামী করা হয়। মামলায় ফজলুল হক ও তাজুল ইসলাম জামিনে আছেন। মামলায় সাত নম্বর আসামী ছিলেন রবিউল ইসলাম ওরফে মুন্নু। বৃহস্পতিবার মামলার অভিযোগপত্র দেওয়ার কথা ছিল। মামলার পাঁচজন আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। এসময় মুন্নুর পরিবর্তে আদালতে হাজির হন বিজন কুমার হালদার। আদালতের বিচারক জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাজবাড়ী আদালতের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, আসামীদের শনাক্ত করার দায়িত্ব আইনজীবীদের। জানতে পেরেছি, ওই মামলায় চার্জশীট দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেওয়া হয়নি। পাঁচজন আসামী আদালতে হাজির হয়। রবিউল ইসলাম মুন্নুর পরিবর্তে বিজন কুমার হালদার নামে একজন হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু আদালত জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিজন কারাগারে প্রথমে রবিউল ইসলাম বলেই নিজেকে পরিচয় দেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তিনি সত্যতা স্বীকার করেছেন। মামলার বাদী জালাল উদ্দিন বিশ^াস বলেন, আমি ওই সময় এজলাস কক্ষে ছিলাম। বিজনকে কাঠগড়ায় দেখেছিলাম। ভেবেছি আরেক জালালের দায়ের করা মামলা। কারণ আমার মামলায় বিজন আসামী ছিলনা। রাতে প্রশাসনের কাছ থেকে জানতে পারলাম যে, বিজন আমার দায়ের করা মামলায় প্রক্সি দিতে গিয়েছিল। তাঁর জামিন না মঞ্জুর করেছেন আদালত। মামলায় আসামীপক্ষের আইনজীবী শহিদুজ্জামান বলেন, আমি সকালে পাঁচজন আসামী উপস্থিত আছে মর্মে সই করে ঢাকা গিয়েছিলাম। আমরা প্রথম দিন জাতীয় পরিচয়পত্র দেখি। এরপর আর সাধারণত দেখা হয়না। আর গতকাল মামলা পরিচালনা করেছে জাহিদুল ইসলাম মোল্লা। তবে জাহিদ উদ্দিন মোল্লার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
বিজনের বাবা অশান্ত চন্দ্র বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে গৌতম নামে একজন বিজনকে ডেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরেই চলে আসার কথা ছিল। সে রান্না করা ভাত খেয়ে যাওয়ারও সময় পায়নি। সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের দোকান থেকে জানতে পারি বিজনকে জেলে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আমার ছেলের বিরুদ্ধে থানায় বা অন্য কোথায়ও কোনো মামলা নেই। সে ঢাকার বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী। এখানে বালুর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আমি গরীব মানুষ। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। রাজবাড়ীর জেল সুপার আবদুর রহমান বলেন, আদালত আমাদের কাছে যেনামে আসামী পাঠিয়ে দেয় আমরা সেভাবেই বুঝে নেই। আমাদের কাছে তিনি রবিউল ইসলাম মুন্নু নামেই পরিচয় দিয়েছে। এছাড়া এখানে ফিঙ্গার প্রিন্টের কোনো ব্যবস্থা নেই।