মোজাম্মেলহক লালটু, গোয়ালন্দ :আমাদের ছেল মেয়েরা এগুলো কখনো চোখেই দেখেনি! এ কথাগুলো বলছিল দৌলতদিয়া ইউনিয়নের দ্বীপখ্যাত চরাঞ্চলের কুশাহাটা পায়াক্ট বাংলাদেশ প্রাক-প্রাথমিক শিশু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা।
অবহলেতি চরাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা নতুন বছরে নতুন বইয়ের পাবারপর আবার নতুন করে পেলো উপহার সামগ্রী খেলনা ভর্তি বাক্স।
খেলনা ভর্তি বাক্স পেয়ে চরাঞ্চলের শিশুদের অভিভাবকেরা বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা জীবনে এই খেলনাতো আগে কখনো চোখেই দেখেনি!
জানা যায়, রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে ৮-১০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে পদ্মার মাঝে অবস্থিত দুর্গমমচর কুশাহাটা। ওই চরের বাসিন্দাদের ঝড়-বৃষ্টি ও নদীর সাথে যুদ্ধ করেই চলে জীবন-জীবীকা। দুর্গমচর কুশাহাটা বর্তমানে ১৫৪টি পরিবারের প্রায় সহস্রাধিক মানুষ বসবাস করে। চরে বসবাসকারীদের নিজস্ব কোন জমি নেই, তারা অন্যের জমি বাৎসরিক টাকা দিয়ে বসবাস করে। তাদের শিশুদের জন্য নেই কোনো সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নেই কোনো হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট, চিকিৎসা কেন্দ্র। চরের বাসিন্দাদের প্রধান পেশা কৃষি ও মৎস্য শিকার। গত মঙ্গলবার ১০ জানুয়ারি বিকেল বেলা এসব অসহায় পরিবারের শিশুদের বিনোদনের জন্য ১২৫ জন শিশুর খেলার সামগ্রী দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন অপারেশন জেনারেশন নামের একটি সংস্থা। সংস্থাটির পক্ষ থেকে আমরেকিার (ইউএসএ) লাভিং গিফট বক্স ফর চিলড্রেন(গিফট বক্স) বিতরণ করেন।
গিফট বক্স বিতরণ অনুষ্ঠানে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সী।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস পারভীন, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য চম্পা খাতুন, পিআইও আবু সাইদ মন্ডল, অপারেশন জেনারেশন সংস্থার প্রোগ্রাম ইনচার্জ প্রশান্ত বিশ্বাস, পায়াক্ট বাংলাদেশ সংস্থা ম্যানেজার মো. মজিবুর রহমান খান জুয়েল, প্রোগ্রাম অফিসার (শিক্ষা) শেখ রাজীব, অপারেশন জেনারেশন সংস্থার মালতী বৈরাগী প্রমুখ।
চরের শিশুদের অভিভাবকেরা গিফট বক্স পেয়ে বলেন, আমাদের শিশুদের তো ঠিক মতো পরিচর্যাই করতে পারিনা আবার খেলনা কিনে দেব কই থেইকা? এসব খেলনা তো আমরাই জীবনে চোখে দেখিনি, আমাদের শিশুরা তো দূরের কথা! যারা আমাগো শিশুদের এসব খেলনা দিলো তাদেরকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।