Friday, June 20, 2025

আষাঢ়ের আগমন জানান দিচ্ছে গাছে ফুটা কদম ফুল

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলা বর্ষপঞ্জির ষষ্ঠ মাস আষাঢ়, যার মধ্য দিয়েই শুরু হয় বর্ষাকাল। এই সময় গ্রামীণ বাংলায় প্রকৃতি যেন এক নতুন ছন্দে নেচে ওঠে। মাঠে-ঘাটে, জলাভূমিতে, ধানক্ষেতে কিংবা গ্রামের মেঠোপথে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে বর্ষার সজীবতার স্পর্শ। আর এই রূপের নিঃশব্দ দূত হয়ে ওঠে একটিই ফুল—কদম ফুল।

রাজবাড়ী জেলার গ্রামাঞ্চলে এখন গাছের ডালে ডালে ফুটা কদম ফুলের মিষ্টি গন্ধে যেন বলে দিচ্ছে—”এসেছে আষাঢ়”। সাদা-হলুদ মিশ্র রঙের গোলগাল এই ফুলটি শুধু সৌন্দর্যেই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির আবেগ, প্রেম, ভালোবাসা,স্মৃতি আর বৃষ্টি ভেজা দিনের একান্ত অনুভব।

ভোরের শিশিরভেজা বাতাসে কদম ফুলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে। সেই সুবাসে মিশে থাকে বর্ষার আগমনী সুর।
এ ফুল বাঙালির সংস্কৃতিতে শুধু একটি ঋতুবার্তাই নয়, এটি একটি আবেগ, একটি চেতনার নাম।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ কিংবা আধুনিক কবিদের রচনাতেও বারবার ফুটে উঠেছে কদম ফুলের সৌন্দর্য । বিশেষ করে বর্ষার বর্ণনায় এ ফুল যেন এক অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ।

গ্রামের মেয়েরা আজও কদম ফুল গুঁজে ঘুরে বেড়ায় চুলে, হাতে। স্কুলগামী শিশুরা কদমগাছে ঢিল ছুঁড়ে মজা করে ফুল পাড়ে। কেউ কেউ আবার ভালোবাসার মানুষের জন্য তুলে আনে কদম ফুলের ছোট্ট এক গুচ্ছ—ভালোবাসার প্রতীক হিসাবে।
আষাঢ় মানেই কদম ফুল, কাদামাটির পথ, বৃষ্টির টাপুর টুপুর ধ্বনি, আর হৃদয়ে শুদ্ধ অনুভূতির বন্যা।

প্রকৃতি ধরা দেয় তার পূর্ণ রূপে। কৃষকের মনে ফিরে আসে আশার আলো, মাঠে শুরু হয় আমন ধানের প্রস্তুতি। পাট কাটার ব্যস্ততা বাড়ে। নদী-নালা, খাল-বিল টলমল জলে ভরে উঠে, আর সেই জলে খেলে বেড়ায় রুই, কাতলা, শিং, মাগুরের মতো রকমারি মাছ।

কদম ফুলের ফুটফুটে উপস্থিতি শুধু ঋতুর বার্তাবহ নয়, এটি প্রকৃতি ও মানুষের আত্মিক সম্পর্কের এক নিরব ভাষা। এই সম্পর্কেই গাঁথা আছে আমাদের জীবন, স্মৃতি, সংস্কৃতি ও আবহমান বাংলার শিকড়।আষাঢ়ের আগমন মানেই এক নতুন সুর, নতুন সম্ভাবনা। আর সেই শুরুটা যেন জানিয়ে দেয় নিঃশব্দে ফুটে থাকা একটি কদম ফুল।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here