Monday, November 18, 2024

একটি সেতু সংযুক্ত করতে পারে হাজার গ্রামবাসীর

মোঃ ইমদাদুল হক রানা : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়ন ও ইসলামপুর ইউনিয়নের গ্রামবাসীদের নিজেদের উদ্যোগে চন্দনা নদীর উপর সংষ্কার কাজ চলছে বাঁশের সেতুর।বরাবরের মত নিজেদের অর্থায়নে ও উপজেলা চেয়ারম‍্যানের সার্বিক সহযোগিতায় নবাবপুরের গাংচর পদমদী মীর মোশারফ হোসেন সংযোগ সরক ও ইসলামপুরের নারায়নপুর সিমানায় (মাচাল ঘাট) এ সেতুটি নবাবপুর ইউনিয়নের মোঃ রমজান আলীর উদ্যোগে আর দুইটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষের সাথে নিয়ে নির্মিত হচ্ছে।

শুস্ক মৌসুমে এই নদীতে পানি না থাকলেও বর্ষা মৌসুমে নদীর যৌবন থাকে। এই সময় নবাবপুর ইউনিয়নের প্রা ১৫টি গ্রামের মানুষ তাদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে বহরপুর হাটে যেতে পারে না। সেই সাথে এই এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় য়েতে অনেক নাজেহাল পোহাতে হয়। এই চিন্তা মাথায় নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের অবাধ যাতায়াত নিশ্চিত করতে গাংচর পদমদীর মোঃ রমজান আলী উদ্দ‍্যোগ নিয়ে এলাকাবাসীদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ২০০৬ সালে নিজেরা চাঁদা তুলে বাঁশ দিয়ে চন্দনা নদীর উপর নির্মাণ করেন মাঁচাল সেতু। সেই থেকে এই স্থানটি বহরপুর রামদিয়া সরকে মাচাল ঘাট নামে পরিচিত হয়।
কথা হয় বাঁশের সেতুর নির্মাতা রমজান আলীর সাথে তিনি বলেন আমার বয়েস হয়েছে এখন আর আগের মত চলাফেরা করতে পারিনা, তিনি আরও বলেন এখানে একসময় বাঁশের সাঁকো ছিলো,স্কুলের বাচ্চা এবং বয়ষ্ক লোকজনের সাকো পার হতে অনেক কষ্ট হত।অনেক স্কুল গামী ছাত্রছাত্রী সাঁকো পার হতে গিয়ে পিছলে পরে যেত। অনেকের বই খাতা ভিজে বাড়ী ফিরে যেত।তাদের স্কুলে যাওয়া হত না।তখন মাথায় আসে বাঁশের মাচাল। সাকো তৈরি করার।এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে নির্মাণ করে ফেলি।তিনি আরও বলেন আমি বেচেঁ থাকতে এখানে এখানে একটি ব্রিজ দেখে যেতে চাই এটা আমার এবং আমার এলাকাবাসীর দাবী।।

তৎকালীন সময়ে বাঁশের মাঁচাল সেতুটি নির্মাণে প্রায় লাখ খানেক টাকা ব্যয় হয়। এরপর দীর্ঘদিন সেতুদিয়ে পারাপার হতো দুই পারের মানুষ, ফসলের ভ‍্যান, মোটর সাইকেল সহ ছোট গাড়ী। সম্প্রতি বাঁশের সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে দুই পারের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।বৃদ্ধ রমজান আলী উভয় পাড়ের কিছু লোকজন নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে উপজেলা চেয়ারম্যানের স্মরণাপন্ন হন। সেতুটি পূনরায় সচল করতে হবে পরামর্শ করেন। সিদ্ধান্ত হয় বাঁশের পরিবর্তে কাঠ আর সিমেন্টের প্লিলার দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা করা। শনিবার (৩ জুন) সকালে সেতুটির পূণনির্মাণ কাজ মৌখিক উদ্বোধন করেন বালিয়াকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ।
কাঠের এই সেতু নির্মাণের অন্যতম উদ্যোক্তারা হলেন, কাঠের সেতু নির্মাণ কমিটির সভাপতি মোঃ রমজান আলী মন্ডল, ইসলামপুর ইউপি সদস‍্য কাজী শহিদুল ইসলাম সাহিদ, সাইফুল ইসলাম সেলিম মিয়া, আব্দুল মালেক শেখ, মোহাম্মদ আলী ব‍্যাপারী, খন্দকার মিরাজুর রহমান সান্টু, মোঃ মোস্তফা কামাল, নাদের আলী, আব্দুল আজিজ, মোঃ লিয়াকত সিকদার, মোঃ ছব্দুল বিশ্বাস প্রমূখ।

উদ্দ‍্যোক্তাগণ বলেন, সবজি,কলা, লেবু গ্রাম খ্যাত নবাবপুর ইউনিয়নের গাংচর পদমদী, বলদাখাল, দক্ষিণবাড়ী, নবাববাড়ী, আনন্দবাজার, কুরশি, বাগমারা, কামারদহসহ বেশকিছু গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক সবজি চাষিরা বছরব্যাপী উৎপাদিত মৌসুমি শাক-সবজি বিক্রি করতে বহরপুর, বাণীবহ ও রাজবাড়ী শহরে যোগাযোগের একমাত্র পথ ছিল এই বাঁশের মাচাল সেতু । সেটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এসব এলাকার সবজি চাষিরা তাদের উৎপাদিত শাক-সবজি বাজারে বিক্রি করা নিয়ে চরম বিপদে পড়েন।স্কুলকলেজের ছাত্রছাত্রীদের অনেকদূর ঘুরে স্কুলে যেতে হয়।

এই সেতুটিমেরামতের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ, কৃষি অফিস, উপজেলা পরিষদে বারবার মৌখিক অনুরোধ জানান এলাকার ছাত্রছাত্রীসহ প্রান্তিক চাষিরা। কিন্তু, কেউ মেরামতে এগিয়ে আসেনি। উপায় না দেখে সবজি চাষি ও গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে কাঠের পাটাতনের সেতু তৈরি করতে এগিয়ে আসে। এই কাজে উপজেলা চেয়ারম্যান এলাকার মানুষের সুবিধার্থে কাজে উৎসাহ দিতে তাদের সাথে নেমে পড়েন।

প্রান্তিক কৃষকরা বলেন, ‘কোনো উপায় না পেয়ে নিজেদের অর্থায়নে কাঠের সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেই। নবাবপুর ও ইসলামপুর ইউনিয়নের কয়েকি গ্রামের অধিকাংশ মানুষ সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। এরপর সার্বিকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। অনেকে এই স্থানে সেতুর দাবী নিয়ে বলেন, বিখ‍্যাত সাহিত‍্যিক মীর মোশাররফ হোনেন স্মৃতি কমপ্লেক্স একটু সামনেই। বহরপুর রামদিয়া সরকে মাচাল ঘাট নামক স্থানে দাড়ালে চন্দনা নদীর উপারে দেখাযায় প্রখ্যাত সাহিত্যিক মীর Adjust হোসেন সৃতি কমপ্লেক্সে যাবার রাস্তাটি নেই নদীপারাপারের ব্যবস্থা। এখানে ব্রীজ হলে কমপ্লেক্সের পথ অনেকটাই কমে যাবে। তাতে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here