জবেদা। জন্ম ১৯৩৫ সালের ১২ জুন। ১৩ বছর বয়সে তার বিয়ে হয় রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের ছোট হিজলী গ্রামের সোদু মোল্যার সাথে। বিয়ের ৬মাস না যেতেই স্বামী সোদু মোল্যা মারা যান। কিন্তু জীবনে বিয়ে একটি, এ বিশ্বাস নিয়ে বুকের মাঝে চাপা রেখে অদ্যবদী স্বামীর ভিটেতে বসবাস করে আসছেন। নিঃসন্তান থাকার কারণে ভাসুরের ছেলে শমসের আলীকে ছেলের মতো লালন-পালন করেন। সে খাবারও তাকে দেয় না। তার জীবন সংসার চলতে থাকে সরকারী ভাবে প্রদত্ত বিধবা ভাতা আর গর্ভবতী নারীদের সন্তান প্রসবের সহযোগিতা করে। দু,বেলা খেয়ে না খেয়ে তার জীবন সংগ্রাম খুব সুখেই চলছিল। এরই মাঝে ১৯৭৫ সালের ২২ জুলাই তার ও ভাসুরের ছেলে শমসের মোল্যার নামে ৮শতাংশ জমি ৮৬৮৭ নং কবলা দলিলমূলে রেজিষ্ট্রি করেন। রেজিষ্ট্রি করার পর থেকেই ওই জমি ভোগদখল করে আসছেন। বর্তমানে তার অংশের জমিতে নারুয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে লাল নিশান টাঙ্গিয়ে বলে আসে জমিটি সরকারী খাস জমি। এরপরই তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এমনিতেই জরাজীর্ণ ঘরে দু,বেলা খেয়ে না চলছিল এখন মনে হচ্ছে মাথার উপর নেই কোন ছাদ। এভাবেই জীবনের ঘটে যাওয়া কথাগুলো বলছিলেন বিধবা নিঃসন্তান জবেদা।
তিনি বলেন, আমি বিধবা নিঃসন্তান ও ভুমিহীন হওয়ার কারণে জমিটি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য আবেদন করি। আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সরেজমিন তদন্ত করেছেন। আবেদনটির কোন সুরহা হওয়ার আগেই স্থানীয় কিছু লোকের ইন্ধনে আরেক ভাসুরের ছেলে জলিল মোল্যা তার জমি থাকা সত্বেও ভুমিহীন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে বন্দোবস্তের জন্য আবেদন করেছে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমি মৃত্যুর পর সবই তো আমার ভাসুরের ছেলেরা পাবে। তারপরও আমাকে কেন হয়রানী করা হচ্ছে। আমি প্রশাসনের নিকট সুষ্টু তদন্ত পুর্বক সমাধান দাবী করছি। আর জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
নারুয়া ইউপি সদস্য মোঃ বিল্লাল হোসেন বলেন, আসলেই তিনি জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করেন। তার দলিলকৃত সম্পত্তি খাস হলেও একই দলিলের জমি তারটি ঠিক রয়েছে। বন্দোবস্ত আবেদন করেছেন। যা তদন্ত করলে সঠিকতা পাওয়া যাবে।
নারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, ভূমিহীন হওয়ার কারণে তাকে ভুমিহীন সনদ প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আম্বিয়া সুলতানা বলেন, আমি একটি আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।