Saturday, November 2, 2024

গরমে পথচারীদের প্রিয় তালের শাস 

মোজাম্মেলহক ,গোয়ালন্দ( রাজবাড়ী)উপজেলা সংবাদদাতাঃ  চলছে মধুমাস জৈষ্ঠ্য । এই মাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হরেক রকমের সুস্বাদু ফল। ফলের তালিকায় রয়েছে- আম, জাম, কাঠাল, লিচু ছাড়াও অন্যতম আরেকটি ভিন্নধর্মী ফল তালের শাস। তালের শাসের নরম অংশটি খুবই সুস্বাদু। গ্রাম্য ভাষায় এটি “তালকুই” নামে বেশি পরিচিত। প্রচণ্ড গরমে তালের এই শাস মানুষের কাছে খুবই প্রিয়।

তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ। গরমে অস্থির পথচারীদের এক মুহূর্তের জন্য হলেও তৃষ্ণা স্বস্তি এনে দিচ্ছে কচি তালের শাস। প্রচন্ড গরম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের পিপাসা চাহিদা বেড়েছে। ডাবের দাম বেড়ে যাওয়ায়, ডাবের পানির পরিবর্তে কচি তালের শাস খেয়ে পানির চাহিদা পুরন করছে। বছরের শুরুতে মৌসুমি এ ফলের চাহিদা বেড়েছে। মিষ্টি ও রসালো পানির কারনে বিক্রিও হচ্ছে ভালো দামে।

সরেজমিনে দেখা যায়, গোয়ালন্দ বাজার, বাসস্ট্যান্ড,পৌর জামতলা থেকে শুরু করে দৌলতদিয়া ঘাটের ট্রাক টার্মিনাল, ফেরি ঘাট, রেলওয়ে ষ্টেশন বিভিন্ন স্থানে এখন বিক্রি হচ্ছে কচি তাল শাস । ছোট বড় প্রকার ভেদে প্রতিটির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি করছে বিক্রেতারা।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার কোলারহাট এলাকার পাইকারি তাল বিক্রেতা শামীম শেখ বলেন, তারা গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে গাছ চুক্তিতে তাল সংগ্রহ করি। গত বছরের চেয়ে এবার দামটা একটু বেশি। আকারভেদে প্রতি হাজার কচি তালের দাম ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা।
দৌলতদিয়া রেলস্টেশন এলাকার খুচরা কচি তাল শাস বিক্রেতা আনু মোল্লা বলেন, গরম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে এখন তালের শাসের ভালো চাহিদা রয়েছে। প্রতি পিচ ১০ থেকে ২০ টাকায় দরে বিক্রি করছি। বিক্রিও বেশ ভালো। তবে বেশি দামে ক্রয় করার কারনে লাভ কম হচ্ছে।

বিক্রেতারা আরো জানান, তালগাছ থেকে ফল কেটে আনা একটি কষ্টকর বিষয়। কাটার জন্য অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে কেটে আনতে হয়। একটি গাছে ৩০০ থেকে ৩৫০ ফল পাওয়া যায়। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম দিকে বিক্রি শুরু হয়, চলে পুরো মাস জুড়ে।

গোয়ালন্দ কৃষি অফিসার মোহাম্মদ খোকন উজ্জামান বলেন, বাণিজ্যিক ভাবে এই অঞ্চলে তাল গাছের তেমন বাগান নেই। সাধারণত বসত বাড়ী বা রাস্তার পাশে মানুষ তালগাছ রোপন করে থাকে। তালগাছ লম্বা হওয়ার কারনে বজ্রপাত রোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাতাসের গতি রোধ করে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ আমিরুল হক শামীম বলেন,তালের শাসের পুষ্টি গুণ অনেক। প্রচণ্ড গরমে কচি তালের শাস এবং এর ভেতরের মিষ্টি পানি তৃষ্ণা মিটিয়ে শরীরে এনে দেয় আরামদায়ক অনুভূতি। তিনি আরো বলেন, তালের শাসে আশ থাকায় এটি হজমে সহায়ক। তালের শাস হাড় গঠনেও দারুণ ভূমিকা রাখে। কচি তালের শাস রক্তশূন্যতা দুর করে। মুখের রুচি বাড়ায়। এতে সুগার কম থাকায় ডায়াবেটিক রোগিরাও খেতে পারে।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here