রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের মুরারীপুর গ্রামের কানু মিয়ার আম বাগানের আম গাছ থেকে রবিবার সকালে মনির (৪০) নামে এক কোয়েল পাখি ও ডিম বিক্রেতার লাশ উদ্ধার করেছে রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশ। তবে এ মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানাগেছে, সকালের দিকে স্থানীয়রা আম গাছে ঝুলন্দ লাশ দেখতে পায় । পরে পরিবারকে খবর দিলে তারা ছুটে আসে। পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
নিহত মনিরের নিজ বাড়ী চাদপুরের মতলব থানার চাবাইত্তা গ্রামে ।তার বাবার নাম মহর আলী। সে ২০ বছর যাবত রাজবাড়ীতে একই ইউনিয়নের চার নং ওয়ার্ডের মৃত নুরু ভূইয়ার মেয়েকে বিয়ে করে বড় মুরারীপুর গ্রামে ৫নং ওয়ার্ডে স্ত্রী রওশানারাকে নিয়ে বসবাস করতো। তার একটি মেয়ে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী ।
সরেজমিনে সকালে মুরারীপুর গ্রামের কানুর বাগানে আম গাছের সাথে কাপড়েরর পাইড় দ্বারা গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত অবস্থায উদ্ধার করা হয়। গাছের ডাল থেকে প্রায় ৫ ফুট নিচে তার শরীর ঝুলছিল, আর পা ছিল মাটি থেকে প্রায় এক ফুট উপরে ঝিলেছিলো। ঝুলন্ত লাশের গায়ে প্রাথমিকভাবে কোন আঘাতের দাগ দেখা যায় নি । গায়ের কাপড়ের কোন এলোমেলো ভাব দেখা যায় নি।
এলাকাবাসী বলছে ,যদি কেউ এত উপরে গাছ থেকে গলায় এ কাপড়ের পাইড় পেঁচিয়ে লাফ দেয়,তাহলে কাপড়ের পাইড় ছিড়ে যাওয়ার কথা। তাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের দাবী জানান এলাকাবাসী।
স্থানীয় ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইব্রাহিম মোল্লা বলেন, নিহত মনির কোন নেশার সাথে জড়িত ছিলো না ,কারো সাথে কোন ঝামেলাও ছিলো বলে তথ্য পাওয়া যায় নি। তাদের একটি মেয়ে সন্তান তাকেও জিজ্ঞাসা করেছিলাম তোমার মা-বাবা কোন ঝগড়া করেছিলো কিনা, ঝগড়াও হয় নি। তাহলে কেন মনির আত্ন হত্যা করলো বা কিভাবে সে মারা গেলো তা সুষ্ঠ তদন্ত করা দরকার। তিনি রো বলেন, রামকান্তপুর তাতিপাড়া কবর স্থানে তাকে রাত নয়টায় জানাজা নামাজ শেষে দাফন করা হয়েছে।
নিহত মনিরের স্ত্রী রওশনারা বলেন, তার স্বামী ভ্যান যোগে রামকান্তপুর স্কুল এলাকায় ও গ্রামগঞ্জে ঘুরে ঘুরে কোয়েল পাখি ও ডিম বিক্রি করতো। পরিবারের লোকজন বলেছেন- এটা আত্মহত্যা হতে পারেনা। কেউ হয়তো হত্যা করে তাকে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে ।
এলাকার মোফাজ্জল ও মহসিনের ফার্ম থেকে কোয়েল পাখি কিনে ভ্যানে করে গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিক্রয় করতো। সে রাতে কোয়েল পাখি কেনার জন্য তার কাছে প্রায় ১২ হাজার টাকাও ছিলো।
খুবই ভাল লোক ছিল, বাড়ি থেকে সন্ধ্যার আধা ঘন্টা আগে বেড়িয়ে যায়, সাথে ১টা টর্চ লাইট ও গামছা ,মোবাইল ছিল। মৃত্যুর পর মোবাইল, গামছা, লাইট ও স্যান্ডেল সাথে পাওয়া যায় নাই।
রাতে বাড়ীতে না আসায় আমরা তার মোবাইলে ফোন করে মোবাইল বন্ধ পাই। এরপর সকাল খবর পেয়ে কানুর বাগানে আম গাচের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায পাওয়া যায়। নিহত মনিরের স্ত্রী রওশনারার দাবী তার স্বামীকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আত্নহত্যার মত কোন ঘটনা বা ঝগড়া বিবাদ তাদের মধ্যে ছিলোনা।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন , লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ময়না তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা পক্রিয়াধীন ।
-প্রতিবেদন-০১