মোজাম্মেল হক লাল্ট গোয়ালন্দ: রাজবাড়ির গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ব্রি ধান ৪৯ ক্ষেত গুলোতে লক্ষীর গু রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ায় কৃষকের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, লক্ষীর গু রোগ টি মূলত ধানের বীজ থেকেই হয়ে থাকে।যে ধান লক্ষীর গু রোগে আক্রান্ত হয় সেই ধান থেকে বীজ রাখে ধানের আবাদ করলে সেই ধানে এই লক্ষীর গু রোগে আক্রান্ত হবে। মাঠের মধ্যে একটি ধান ক্ষেতে যদি লক্ষীর গু রোগে আক্রমণ করে। তাহলে বাতাসের মাধ্যমে ওই মাঠের প্রত্যেকটা ধান ক্ষেতেই লক্ষীর গু রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়বে। রোগ আক্রামণোর শুরুর দিকে পুষ্পমঞ্জরী এবং পরে দানা আক্রান্ত হয়। শীষের প্রতিটি দানায় ১ সেমি ব্যাসযুক্ত কমলা মখমলের মতো ডিম্বাকৃতি পিণ্ড দেখা যায়। ক্রমশ এগুলো হলুদাভ সবুজ বা সবুজাভ কালো বর্ণধারণ করে। এককটি শীষে গুটা কয়েক জীবাণু বল তৈরী হয়। গাছের অন্যান্য অংশ আক্রান্ত হয় না। সব ক্ষেত্রেই দানার ওজন এবং অস্কুরোদগ্রম হার কম হয়।
কৃষক কাদের জানান, আমি দুই বিঘা ব্রি ধান ৪৯ আবাদ করেছি। যখন ধান গুলো ঝেড়ে ধানের শীষ বের হলো তখন কোন সমস্যা ছিল না।যখন ধানে চাপ দিলে সাদা পানি বের হয় ঠিক সেই সময়টাই রোগ আক্রান্ত করে ফেলে। দুইবার ধান খেতে বিষ দিয়েছি তাতে কোন লাভ হয়নি। কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে আলাপকালে জানতে পারলাম এই রোগটা ধানের বীজ থেকেই হয়ে থাকে। এই রোগটি বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে অন্য ক্ষেতেও হতে পারে। তাই এই ধান থেকে বীজ সংগ্রহ করা যাবে না। আগে থেকে বুঝতে পারিনি তাই এই ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল। এই রোগটি সারা মাঠে প্রত্যেক ধানক্ষেতেই দেখা দিয়েছে।
কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, আমি এ বছরে আমার দেড় বিঘা জমিতে ব্রি ধান ৪৯ আবাদ করেছি। ধান অনেক ভালো হয়েছে ফলনও অনেক ভালো হয়েছিলো কিন্তুু হঠাৎ করে প্রতিটি ধানের শীষে লক্ষীর গু রোগটি দেখা দিয়েছে।প্রথমে কম দেখা গেছে এখন সারা খেতে প্রত্যেকটা শীষেই হয়ে গেছে।হাত দিয়ে ধানের শীষ ধরলে হলুদের মত উড়ে উড়ে চলে যাচ্ছে পাউডারের মত।এ বছরে আমার অনেক লোকসান হবে।সেলো মেশিন দিয়ে পানি দিয়েছি সেই মেশিনের তেলের দামও উঠবে না এবছর চাউল কিনে খেতে হবে। এই রোগে আমার ধানক্ষেতের বড় ক্ষতি করে ফেলছে।
গোয়ালন্দ উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা গত কয়েক বছর ব্রি ধান ৪৯ এই জাতটি বেশি পরিমাণ লক্ষ্মীর গু রোগ দেখা দিয়েছে। এটি একটি বীজ বাহিত রোগ বা ছত্রাক বাহিত রোগ। এ বছরে কিছু কিছু জায়গা থেকে আমাদের কাছে রিপোর্ট আসছে লক্ষীর গু রোগ সম্পর্কে। আমরা প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি ইতিমধ্যেই। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। এই বীজগুলো থেকে বীজ সংগ্রহ করা যাবে না। এগুলো খেয়ে ফেলতে হবে। এই উপজেলায় এবছরের ৩ হাজার ৩শত হেক্টর জমিতে ব্রি ধান ৪৯ আবাদ হয়েছে।’