মোজাম্মেল হক লালটু, গোয়ালন্দ: কৃষিকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে উন্নত ফসল ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। এরই ধারাবাহিতকতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সমলয় প্রকল্পের মাধ্যমে বীজতলা পদ্ধতিসহ চাষাবাদ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়ন তেনাপচা এলাকায় হাইব্রিড ধান বীজতলা পদ্ধতির মাধ্যমে অতিরিক্ত খাদ্য শস্য উৎপাদনের যোগান দেওয়ার চেষ্টা কৃষকদের মাধ্যমে সমলয় প্রকল্পের ।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, এস এল আট হাইব্রিড ধান ও বঙ্গবন্ধু একশত ব্রি ধান ৫০ একর জমিতে বীজতলা পদ্ধতিতে ধানের চারা তৈরি করা হয়েছে। এই হাইব্রিড ধান ১০০ থেকে ১৪৫ দিনের মধ্যে ঘরে আসবে। তাই স্বল্প জমিতে অধিক ধান উৎপাদন করে মানুষের খাদ্য চাহিদা পুরণ করতে হবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশনায় গোয়ালন্দ উপজেলায় প্রথমবারের মতো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমলয় পদ্ধিতে বোরো ধান চাষাবাদের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে সরকারি কৃষি প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় কৃষকরা নতুন মাত্রায় ট্রে-তে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। ব্লকে ৮০ জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে বোরো ধানের সমলয়ে চাষাবাদ ট্রেতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে এবং এগুলো পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।তবে এবার ট্রেতে বোরো ধানের বীজতলা তৈরিতে নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে।
তেনাপচা গ্রামের কৃষক ইদ্রিস সেক, রোকন উদ্দিন শেখ, সাদ্দাম হোসেন রফিকসহ সুবিধাভোগী কৃষকেরা জানান, বোরো ধান চাষাবাদে আগে কখনো ট্রে-তে ধানচারা উৎপাদন করা হয়নি। স্থানীয় কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় এই প্রথমে ট্রে-তে বীজ বপন করা হচ্ছে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়তো ভালো চারা ও অধিক ফলন নেয়া যেতে পারে। তাছাড়া বিনামূল্যে ধানের চারা, বীজ বপন ও কর্তনের সুবিধা পেয়ে তারা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
দেবগ্রাম ইউনিয়ন ব্লকের কৃষি বিভাগের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিলন মন্ডল জানান, এ বছর সরকারের বিশেষ প্রণোদনা কর্মসূচির মাধ্যমে সমলয় চাষাবাদ আওতায় আনা হয়েছে ১৫০ বিঘা জমি। বর্তমান সরকারের এই সহায়তায় বাংলার কৃষকরা উৎপাদন খরচ কম এবং বেশি লাভবান হওয়ায় কৃষি যান্ত্রিকীকরণের দিকে ঝুঁকছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খোকন উজ্জামান কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন। তিনি আরও জানান, ট্রেতে বীজতলা তৈরি করা হয় ১৬ ডিসেম্বর। চারার বয়স এখন ১৩ দিন চলছে। ৩০ দিন হলেই জমিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে কৃষকের জমিতে চারা রোপণ করে দেয়া হবে। পাশাপাশি কৃষকরা কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে কৃষকদের ধান কর্তনও করে দেওয়া হবে। যা বিগত দুই বছর ধরে সরকার এই প্রনোদনা বাস্তবায়ন করে আসছে।