মোজাম্মেলহক, গোয়ালন্দঃ পদ্মা সেতু উদ্বোধনে দক্ষিণ বঙ্গের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার খ্যাত দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে যানবাহন ও যাত্রীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় ঘাটে প্রতিদিন খেটে খাওয়া ও ক্ষুদ্র হকাররা সংসার নিয়ে পড়েছে বিপাকে।
জানাগেছে, দৌলতদিয়া ঘাটে হকাদের সংখ্যা রয়েছে ১৪ শত ১১ জন। তাদের মধ্যে দৌলতদিয়া ঘাট হকার বহু মুখী সমবায় সমিতি লি: রয়েছে ৮ শত ৮১ জন, লঞ্চ ঘাট হকার সমিতিতে রয়েছে ১৭০ জন হকার, ফেরিঘাট ঐক্য কল্যাণ সমিতিতে রয়েছে ৩শত৬০ জন এসকল হকারদের হাক ডাকে মুখর থাকে ঘাট এলাকার লঞ্চ ও ফেরি ঘাট । সেখানে কেউ ছোলা, শসা, চানাচুর, ঝালমুড়ি, তিলে খাজা, পিয়ারা, ডাব, বাদাম ভাজা, পান সিগারেট, পানি, চকলেট,বই, ইত্যাদি বিক্রি করেন তারা। লঞ্চ ও ফেরির সাইলেন্ড আর যাত্রীদের কোলাহলের মধ্যে হকারা হাক ডাকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে শিশু কিশোরসহ নৌ ঘাটের যাত্রীদের কাছে বিভিন্ন প্রকার জিনিস পত্র বিক্রি করে চলতো তাদের সংসার। যতই বিক্রি হবে ততই ভালো চলবে তাদের সংসার কিন্তু পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়াতেই তাদের সংসারের চাকা ঘুড়াতে কঠিন বিপাকে পড়তে হচ্ছে ঘাটের হকারদের।
ঘাটে তিলে খাজা বিক্রিতা গোলজার বিশ্বাস বলেন, আমি আজ ১৫ বছর যাবৎ ঘাটে হকারি করে সংসার চালাচ্ছি। আগে প্রতিদিন ঘাটে খাজা বিক্রি করছি ১২ শত টাকা হতে ১৩ শত টাকা পর্যন্ত পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়াতে গাড়ি ওযাত্রী খুবী কম রয়েছে তাতে আগের মত বিক্রি করতে পারছি না। এখন সারা দিনে ৩ শত থেকে৪ শত টাকা বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়েছে এতে সংসার চলবে কেমন।
ঘাটের আরেক হকার ছামাদ বলেন, আমি আজ ১৩ বছর যাবৎ ঘাটে হকারি করে সংসার চালিয়ে আসছি। ঘাটে কখনো খাজা বিক্রি করি কখনো পিয়ারা বিক্রি করি। আজ কয়েক দিন যাবৎ পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়াতে ঘাটে গাড়ি ও যাত্রী কমে যাওয়ায় বেচাবিক্রি কমে গেছে তাতে সংসার চলবে কেমনে। এটা ছেড়ে দিয়ে কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে ঘাটের হকারদের।
দৌলতদিয়া ঘাট হকার বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সাধারন সম্পাদক মো. লালটু মন্ডলবলেন, দৌলতদিয়া ঘাটে মোট হকারের সংখ্যা রয়েছে ১৪ শত ৩ জন এসকল হকারা প্রতিদিন ঘাটে ইনকাম করে সংসার চালায়।পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়াতে সকল গাড়ি পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় চলে যাচ্ছে। দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে গাড়িও যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ায় হকারদের বেচা বিক্রি খুবি কম হচ্ছে। এতে করে তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
বিআইডাব্লিউটিসি ঘাট সহকারি ম্যানেজার মো. খোরশেদ বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনে ঘাটের উপর গাড়ি ও যাত্রীর কমে গেছে। ফেরি ঘাটের দুপাশে খাবার হোটেল গুলো বন্ধ হয়েছে গেছে এবং কয়েকটি লঞ্চ বন্ধ রয়েছে যাত্রী না থাকায়। ঘাটের হকাররাও পড়েছে এখন বিপাকে তাদের আর আগের মত বেচাবিক্রি হচ্ছে না। এই নৌরুটে ছোট বড় মিলে ১৮ ফেরি চলাচল করছে।