Saturday, April 12, 2025

জল ঘর 

পাংশা:  রাজবাড়ী জেলায় পাংশা রেলস্টেশন গেলে চোখে পড়বে একটি পুরোনো লালচে পানির ট্যাংক। বিশেষ কোনো গুরুত্ব না থাকলেও পরিত্যক্ত এই ট্যাংকটি প্রায় শতাব্দীর পর শতাব্দী আগের ইতিহাস হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে সগৌরবে। এত বছরেও এটির লাল রং ঝকঝক করছে। এমনকি একটি ইটও এ পর্যন্ত খসে পড়েনি। এটি ১৮৬৯ সালে ব্রিটিশদের তৈরি রেলের জলঘর।সবুজ আগাছায় ছেয়ে থাকা লালচে এ ভবনের নাম জলঘর।

 

ইতিহাস থেকে জানা যায় ব্রিটিশ আমলে ১৮৬২ সালে প্রথম ভারতের কলকাতা থেকে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার জগতি পর্যন্ত যোগাযোগের জন্য রেলপথ নির্মাণ করা হয়।১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি দেশের বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার জগতি থেকে বর্তমানে রাজবাড়ীর (তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা) গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া (পদ্মা নদীর) ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার এক লাইনের রেলপথ বানানো হয়।রাজবাড়ী রেল ষ্ট্রেশন তৈরি করা হয় ১৮৯০ সালে ।তখনকার সময়ে রেলগাড়ি টানার জন্য কয়লাচালিত ইঞ্জিন ব্যবহার করা হতো। কয়লাচালিত ইঞ্জিন প্রচণ্ড গরম হয়ে যেত। গরম ইঞ্জিন শীতল করার জন্য কুষ্টিয়ার জগতি ও দৌলতদিয়া ঘাট রেলস্টেশনের মাঝামাঝি পাংশা রেলওয়ে স্টেশনের পাশে নির্মাণ করা হয় এ জলঘর।

রাজবাড়ী জেলায় পাংশা রেলস্টেশন গেলে চোখে পড়বে একটি পুরোনো লালচে পানির ট্যাংক। বিশেষ কোনো গুরুত্ব না থাকলেও পরিত্যক্ত এই ট্যাংকটি প্রায় শতাব্দীর পর শতাব্দী
জল ঘর

১৮৬৯ সালে ইট, খোয়া ও চুনের সংমিশ্রণে গোলাকার ও লম্বা এ ভবন নির্মাণ করা হয়। ৩৫-৪০ ফুট উঁচু এ জলঘর। ঘরের দরজা রাখা হয় রেললাইনের দিকে। জলঘরের ওপরের দিকে ওঠা ও নিচে নামার জন্য লোহার পাত দিয়ে সিঁড়ি বানানো হয়।ব্রিটিশ শাসনামলে এ জলঘর ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান শাসনামল শুরু হওয়ার পরপরই জলঘরটি থেকে রেলগাড়ির ইঞ্জিনে পানি দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত জলঘরের ব্যবহার বন্ধ রয়েছে।জলঘরটি কালের সাক্ষী হয়ে আছে পাংশার বুকে। এর লাল রং এখনো ঝকঝকে, দেয়ালের কোনো স্থান থেকেই এখন পর্যন্ত একটি ইট বা খোয়ার অংশবিশেষ খুলে পড়তে দেখা যায়নি।

 

নেহাল আহমেদ –

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here