মোজাম্মেল হক লালটু, গোয়ালন্দ ( রাজবাড়ী): এবছরে দৌলতদিয়া আক্কাছ আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ৫ নং ওয়ার্ড আইনউদ্দিন বেপারী পাড়ার মো. রশিদ মন্ডলের তৃতীয় কন্যা সুমাইয়া আক্তার। তার পরিবারে অভাব অনাটন থাকার পরও ছোট বেলা থেকেই লেখা পড়ার উপর খুবী মনোযোগী হওয়ায় তার বাবা স্কুলে ভর্তি করে দেন। প্রাইমারী বিদ্যালয় থেকে ৫ ম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়ে আক্কাছ আলী বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শেণীতে ভর্তি হয়। সে সময় তার পরিবার তার লেখা পড়ার খরচ বহন করতে না পাড়ায় সুমাইয়া পড়াশুনা বন্ধ করে দিতে চাই তার পরিবার। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক জানার পর সুমাইয়ার লেখা পড়ার জন্য সম্পূর্ণ খরচ বহন করেন প্রধান শিক্ষক।
জানাগেছে, এবছরে আক্কাছ আলী বিদ্যালয় থেকে মোট ৪৮ জন শিক্ষার্থী এস এস সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে তাদের মধ্যে থেকে এক মাত্র সুমাইয়া আক্তার জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ ৫ পেয়েও অর্থের অভাবে কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা মধ্যে পড়েছে অদ্য মেধাবী শিক্ষার্থী সুমাইয়ার পরিবার। তাদের পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৬ জন তার বাবা একা ছোট্র একটি মুদি দোকান করে কোন রকম সংসার চালাচ্ছে এমস্থায় তার বাবার পক্ষে মেয়েকে কলেজে ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।
শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে অনেক সহযোগিতায় করছে। বিনামূল্য আমাকে পড়া শুনার সুযোগ করে দিয়ে ছিলো। সে জন্য আমি আজ জিপিএ ৫ পেয়েছি। আমার বাবা ছোট্র একটি মুদি দোকান করেন তাতে সংসার ভাল ভাবে চলে না।তারপর পরিবারে ৬ জন সদস্য। আমার বাবার পক্ষে আমাকে কলেজে ভর্তি করা সম্ভব না। আমি যদি বাহীরের কোন সহযোগিতায় পাই তাহলে আমি ভালো কোন কলেজে ভর্তি হতে পারবো। আমি ভবিষ্যতে ফরেন্স অফিসার হতে চাই।
সুমাইয়ার বাবা রশিদ মন্ডল বলেন, আমি একজন নদী ভাঙন লোক। আমি কোন ছোট একটি মুদি দোকান করে সংসার চালাচ্ছি। তাতে আমার অনেক কষ্ট হয়। তার পরে আবার মেয়ের পিছনে টাকা খরচ করবো কি ভাবে। আমার মেয়ে পরীক্ষায় ভালো করেছে শুনছি। ওর কলেজে ভর্তির জন্য যদি সমাজের কোন বৃত্তশালী লোক এগিয়ে আসে তাহলে কলেজে ভর্তি করা সম্ভব। তা না হলে আমার পক্ষে সম্ভব না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন বলেন,অত্র বিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালের এসএস সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে সুমাইয়া আক্তার।জি পিএ ৫ পেয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। সুমাইয়া একজন অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী। আমার বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই অদ্যবতী পর্যন্ত ওর সার্বিক সহযোগিতা করে আসছি এবং আগামী অর্থাৎ একাদশে ভর্তির যাবতীয় কার্যক্রম আমি দেখভাল করবো। পাশা পাশি সমাজের বৃত্তশালী ব্যক্তিরা অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীর সুমাইয়ার পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।