গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ল্যাব) আমিরুল ইসলাম রনি এ পর্যন্ত একাই করেছেন তিন হাজারের অধিক লোকের করোনার নমুনা পরিক্ষা। লোকবল কম থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি একাই জনসাধারণকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।স্হানীয়রা তাকে করোনা ফাইটার বলে অভিহিত করছেন।
জানা গেছে, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) পদ সংখ্যা ৩ টি । কিন্তু গত ৭/৮ বছর ধরে রনি একাই প্রচন্ড ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছেন। ইনডোর ও আউটডোর রোগীর পাশাপাশি প্রতিদিন বহু সংখ্যক করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরিক্ষা করতে হচ্ছে তাকে।এতে করে রোগীদের প্রতিনিয়তই দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এ বিষয়ে মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ল্যাব) আমিরুল ইসলাম রনি জানান, করোনার এ দুঃসময়ে একদিকে সাধারণ রোগীদের নানা পরিক্ষা-নিরিক্ষা, অন্যদিকে প্রতিদিনই বহু সংখ্যক করোনার নমুনা পরিক্ষা করাতে আসা লোকজনের চাপ। এ অবস্থায় তিনি একা ভিষনভাবে হিমশিম খাচ্ছেন।রোগীদেরও সব সময় যথাযথ সেবা দেয়া যাচ্ছে না।
রনি জানান,তার কাজটি প্রচন্ড রকম ঝুঁকিপূর্ণ। প্রথম দিকে সুরক্ষা পোশাক পড়ে কাজ করলেও কাজে অসুবিধা হওয়ায় এখন তাও পড়েন না। রোগীদের রেজিষ্টার্ড মেইনটেইন করা,নমুনা নেয়া, পরিক্ষা করা,রিপোর্ট লেখা ও সরবরাহ করাসহ ল্যাবের সকল কাজ তাকে একাই করতে হয়।
তিনি আরো বলেন,নিজের জীবনের মায়া করিনা।যতক্ষণ ভালো আছি,সুস্থ্য আছি ততক্ষন মানুষের সেবা দিয়ে যাব।তবে চিন্তা করি আমি যদি পজিটিভ হয়ে যাই, তখন এখানকার অবস্হা কি হবে।তবে হাসপাতালের অনেক ষ্টাফ এর মধ্যে একাধিকবার পজিটিভ হয়েছেন।কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমি এখনো পজিটিভ হইনি।তবে আমার মা ও স্ত্রী পজিটিভ হয়েছিলেন একবার করে। হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী, গত বছরের এপ্রিল হতে চলতি আগষ্ট মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত এ হাসপাতালে ৩ হাজার ৫৩১ টি করোনার নমুনা পরিক্ষা করা হয়েছে।। এর মধ্যে পজিটিভ হয়েছেন ১০৬৬ জন এবং নেগেটিভ হয়েছেন ২৪৬১ জন।ফলাফল পাওয়া যায় নি ৪ জনের।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, রনির কাজটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।তার উপর সে একা। এ অবস্হার মধ্যেও সে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে চলেছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্যান্য ষ্ঠাফরা তাকে বিশেষ প্রয়োজনে সহায়তা দিয়ে থাকেন।