উজ্জল হোসেন, পাংশা (রাজবাড়ী) : পাংশা উপজেলার ২৭ নং মেঘনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রশংসাপত্র নিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীসহ অবিভাবকদের ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রশংসাপত্র নেওয়া বাবদ ১শত পঞ্চম টাকা থেকে ২শত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য বেসরকারি টেলিভিশনের রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি স্থানীয় সাংবাদিক শাহীন রেজা।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে গেলে সাংবাদিক শাহিন রেজা প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রশংসাপথ নেওয়া বাবদ কত টাকা করে নেন ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে তাতে প্রধান শিক্ষক রেগে সাংবাদিকে হুমকিসহ নানান কথাবার্তা বলতে শুরু করেন(ভিডিও সংরক্ষণ)।
অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমন, ইসমাইল, সিমু জানায়, তারা পঞ্চম শ্রেণি শেষ করে এখন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হবে। এরজন্য বিদ্যালয় থেকে প্রশংসাপত্র দরকার। বিদ্যালয়ে প্রশংসাপত্র নিতে এলে শিক্ষকেরা ১ শত পঞ্চম থেকে দুইশত টাকা দাবি করেন।
মোছাঃ এনি নামে একজন অভিভাবক বলেন, আমার ছেলের সার্টিফিকেট আনতে গিয়েছিলাম স্কুলে। শিক্ষকেরা আমাকে বললো টাকা ছাড়া সার্টিফিকেট দিই না। দুইশত টাকা লাগবে। পরে ১শত পঞ্চম টাকা দিয়ে নিয়ে এসেছি। আরেক অভিভাবক মোছাঃ চাম্পা বেগম বলেন, ১শত টাকা দিয়ে স্কুল থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে আসছি শিক্ষককেরা বলছে আরও পঞ্চাশ টাকা দিতে হবে।
সাংবাদিক শাহীন রেজা বলেন, পাংশা উপজেলার ২৭ নং মেঘনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এবছর পঞ্চম শ্রেণি থেকে যে সব শিক্ষার্থী উত্তির্ন হয়েছে তাদের ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বিদ্যালয় থেকে একটি প্রত্যায়ন পত্রের প্রয়োজন হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনিসুর রহমান ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে প্রত্যায়ন পত্র নেওয়ার জন্য একশত পঞ্চাশ থেকে দুইশত টাকা নিচ্ছে। টাকা ছাড়া কোন শিক্ষার্থীকে প্রত্যায়ন পত্র দিচ্ছে না তিনি। এমন অভিযোগ পেয়ে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনিসুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তার ছেলে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন এই ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন।
প্রধান শিক্ষক মোঃ আনিসুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, প্রথমে ওই সাংবাদিক আমাকে ভয় দেখায়। পরে আমি বলেছি আমার ছেলে কিন্তুু সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন এছাড়া কিছু বলি নাই।
অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উনি এসেই আমাকে বলছে কার হুকুমে আপনি সার্টিফিকেটে টাকা নিচ্ছেন? আমি ইউএনওকে জানাবো। সার্টিফিকেট প্রিন্ট করে আনতে কিছু খরচ হয় আমাদের এজন্য দুই, চার, দশ, পঞ্চাশ টাকা কেউ খুশি হয়ে দিলে আমরা সেটা নিই।
এ বিষয়ে পাংশা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কে এম নজরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম তৈফিকুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সার্টিফিকেট দেওয়ার সময় কোন টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা এ কাজ করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।