Monday, November 18, 2024

ঢাকা মেডিকেলকে ৪ হাজার শয্যার আধুনিক হাসপাতালে উন্নীত করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার ক্রমবর্ধমান রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ৪ হাজার শয্যার আধুনিক হাসপাতালে উন্নীত করবে।

সরকার প্রধান বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকায় তাদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে কর্তৃপক্ষকে খুবই কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই, আমরা এই হাসপাতাল থেকে যাতে একই সময়ে ৪ হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারে সে লক্ষ্যে ঢাকা মেডিকেলকে সুন্দর, আধুনিক ও বৃহৎ হাসপাতালে উন্নীত করার জন্য একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রীর আজ তাঁর অফিস থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৭৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণ দানকালে এ কথা বলেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ এ্যালামনাই ট্রাস্ট কলেজের শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
তিনি বলেন, আশা করি, আমরা খুব শিগগির ঢাকা মেডিকেলকে ৪ হাজার শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করার কাজ শুরু করতে পারব।
শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞান ও চিকিৎসা বিজ্ঞান সামনের দিনগুলোতে বিকাশ লাভ করবে। তাই বাংলাদেশকেও একই গতি বজায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
আমাদের দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা কম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুষ্টিমেয় সংখ্যক ব্যক্তি চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণায় নিয়োজিত আছেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান যুগে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর পর্যাপ্ত গবেষণা খুবই প্রয়োজনীয়। কাজেই, চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার প্রতি আমাদের আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার স্বাস্থ্য খাতের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর ব্যাপক গবেষণা চালাতে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ  দেবে।
তিনি আরো বলেন, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিস্তারিত গবেষণার জন্য যে পরিমাণ তহবিলের প্রয়োজন, আমি আপনাদের তা দেব।’
তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সম্প্রসারণের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তা বিপুল সংখ্যক মানুষকে আধুনিক চিকিৎসা প্রদানের একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে।
প্রধানমন্ত্রী রোগীদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানোর জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রোগীরা সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা পাচ্ছে।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ৫০টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করছে।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সারাদেশের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি মানুষকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনতে বঙ্গবন্ধু প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করেছিলেন।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু শিশু হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও গণস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট নির্মাণ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার প্রতিটি পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অনুসরণ করে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছে।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, তাঁর সরকার স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নত করতে বেশ কিছু বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার চিকিৎসা-সেবার ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে একটি সমীক্ষা চালিয়ে কিছু জেলায় ১০০ শয্যার হাসপাতালকে ২৫০ ও ৫০০ শয্যার হাসপাতালে পরিণত করেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যসেবাকে সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি।’
এ সময় শেখ হাসিনা হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, বেশ কয়েকটি জেলা হাসপাতালে অ্যানেস্থেসিওলজিস্টের অভাবের কারণে কোনও অস্ত্রোপচার করা হয় না। এছাড়া, অনেক আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না।
তিনি চিকিৎসকদের প্রত্যন্ত এলাকায় না থাকার মানসিকতার সমালোচনা করে বলেন, এ কারণে গ্রামের লোকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সবাই (চিকিৎসকরা) ঢাকায় থাকতে চায়, তাদের কেউ ঢাকার বাইরে যেতে চায় না। যখন আপনাকে গ্রামে পোস্টিং দেয়া হবে, তখন সেখানে থেকেই আপনাকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিষয়টির প্রতি যথাযথ মনোযোগ দিতে হবে।
শেখ হাসিনা চিকিৎসকদের স্মরণ করিয়ে দেন যে তাঁর সরকার প্রতিটি নাগরিক সুযোগ-সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিচ্ছে, যাতে গ্রামের বাসিন্দারা নগরের বাসিন্দাদের মতো সুবিধা উপভোগ করতে পারে।
ডিএমসি অ্যালামনাই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. জুলফিকার রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, এমপি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্রঃ ১০ জুলাই, ২০২৩ (বাসস)

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here