Friday, November 15, 2024

ঢাকিদের জীবন

নেহাল আহমেদঃ ঢাকের শব্দ যেন অন্য জগতের ধ্বনি।পূজা পার্বনের অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ ঢাকের শব্দ। পূজাপার্বণ এলেই কদর বেড়ে যায় ঢাক-ঢোল তৈরির কারিগরদের। একসময় যেখানে বছরের পুরো সময়টাই তাদের ব্যস্ততায় কাটতো ঢাক-ঢোল তৈরিতে। এখন এ কাজটি তাদের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে বেছে নিয়েছেন নতুন পেশা।আগে ব্যান্ডস দল সব জায়গায় যেতো শোভাযাত্রার তাদের কমই আনা হয়। মিছিল মিটিং,শোভাযাত্রার স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েদের আনা হয়।

বছরে শুধু সনাতন ধর্মের পুজা গুলোতে কটা দিন ঢাকের বোল তুলে ৮ থেকে ৮০ বছরের সকলের মনে আনন্দের ঢেউ তোলেন, ঢাকের বোল তুলে মানুষের মনে আনন্দ দান করলেও সারা বছর নিজেরা থাকেন নিরানন্দে। পুজোর সময় দুটো পয়সা উপার্জন করলেও বছরের বাকি সময় গুলোয় পরিবার নিয়ে তারা থাকেন চরম অর্থকষ্টে।

কেমন যাচ্ছে ঢাকিদের জীবন। ঢাক-ঢোল তৈরির শিল্পে জড়িত মানুষদের। সমাজে আধুনিকতার ছোয়ায় সব কিছুই ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে। বাদ্যযন্ত্রও এখন ব্যবহার হয় ডিজিটালভাবে। মানুষ এখন ঢাক চায়না ঢাকিও চায়না। তাইতো হাতের তৈরি ঢাক-ঢোল, তবলা, খোল ও অন্য বাদ্যযন্ত্রের কদর কমতে শুরু করেছে। এখন যেন মানুষ এসব বাদ্যযন্ত্র শুধু বাসায় সাজিয়ে রাখতেই কিনে নিয়ে যায়।

তবু কোনো উৎসব এলেই ঝিমিয়ে পড়া ঋষিপাড়ার মানুষজন যেন কিছুটা প্রাণ ফিরে পায়। এ সময় ঢাক-ঢোলসহ নানা বাদ্যযন্ত্রের শব্দ ভেসে আসে ওই পাড়া থেকে। রাজবাড়ী ঋষিপাড়ায় একসময় শতশত ঢাক-ঢোলের কারিগর ছিল। বাদ্যযন্ত্র তৈরি, মেরামত ও পূজাপার্বণসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর আয় দিয়ে চলত তাদের সংসার। মোহন ঢাকি বললের আগের মত রমরমা আর হাসিখুশির দিন আর নেই। ব্যান্ড বাদক বংশী বাদকদের আয়-রোজগার কমে যাওয়ায় এ সব লোকজন ছেড়ে দিচ্ছে পূর্বপুরুষের পেশা। বেছে নিচ্ছেন অন্যত পেশা।বংশের নতুন কারো এ পেশার উৎসাহ দেন না।

তবে আশার কথা হচ্ছে বাদ্যযন্ত্র যতই আধুনিক হোক। গুণের বিচারে সবসময় এগিয়ে থাকবে, ঢাক-ঢোলের আওয়াজের মধুরতা।কিছু কিছু পার্বন ঢাকের শব্দ ছাড়া চলে না।আধুনিক রুচি এবং ঐতিহ্যে ফিরে আসছে নতুন প্রজন্ম।

দূর্গা পূজোর এই সময়ে বেশ কিছু অর্ডার পেয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন রাজবাড়ীর ঢাকিরা ।তাদের সুদিন ফিরে আসবে এমন প্রত্যাশা এবং বিশ্বাস নিয়ে কথা বললেন রনজিৎ ঢাকি।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here