মোঃ আমিরুল হক ঃ রাজবাড়ী, ফরিদপুরে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি ধরনের তাপদাহ। তীব্র রোদ আর গরমে অশস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ ও গবাদী পশুর পাশাপাশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ধান, পাট, মরিচ, বেগুন, কলাসহ বিভিন্ন সবজিও। এমতো পরিস্থিতিতে ফসলের ক্ষতি রোধে কৃষকের কি কি করণীয় তা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে তিনি ধান, পাট, সবজিসহ অন্যান্য ফসলের পরিচর্যা নিয়ে আলোচনা করেন।
তার দেওয়া পরামর্শমূলক বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো-‘আপনারা জানেন যে বর্তমানে বোর ধানটা মাঠে রয়েছে। প্রতিটি মাঠেই দেখা যাবে এখন ধানে ফুল রয়েছে। কিছু কিছু ধানে দুগ্ধ আছে, কিছু কিছু ক্ষিও অবস্থায় আছে। বর্তমানে পোকা মাকড় রোগ বলায় তেমন না থাকলেও তাপমাত্র দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে মাঠের বিভিন্ন ফসলে কোনো কোনো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমরা জানি যে কৃষক ভাইদের ধানের কিছু সমস্যা হচ্ছে। এতে ধানের তেমন কোন ক্ষতি হয়না। তবে তাপমাত্রা যদি ৩৫ ড্রিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে চলে যায় সে ক্ষেত্রে ধান চিটা হয়ে যেতে পারে। ধানের বর্তমান যে স্তরে আছে সে ক্ষেত্রে আমাদেরে কৃষক ভাইদের করনীয় হলো আপনাদের ধান অবশ্যই ফুল অবস্থায় আছে এবং এই সময় ধানের ক্ষেতে পানি থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়া বর্তমানে তাপমাত্রা আধিক্য, এ কারনে ধান গাছের গোড়ায় সরসময় ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পানি ধরে রাখতে হবে। আপনারা ১০ রিটার পানি ভিতরে ১শ গ্রাম পটাশ মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করতে পারেন। তাহলে আশা করা যায় য়ে তাপদাহে ধান ফসলে আমাদের তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। এখন আম, লিচসহ অনন্যা ফলের গাছে গুটি দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত তাপদাহে তা ঝরে পড়তে পারে, সে ক্ষেত্রে আমাদের ফল চাষি ভাইরা আছেন তারা গাছের চারি দিকে রিং করে পানি সেচ দিবেন, এবং তা অবশ্যই পড়ন্ত বিকাল বেলা দিতে হবে। কারন আপনি যদি সকালে সেচ দেন সে ক্ষেত্রে দুপুরের রোদে কিন্তু পানি বাস্প হয়ে উড়ে চলে যাবে। তাই আপনারা অবশ্যই পড়ন্ত বিকালে পানি দিবেন। এসময় পানি দিলে রাতের মধ্যে গাছ পানি শোসন করে ফুল ও ফলে পরিপক্কতা আনয়ন করতে পারবে।
কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলাম আরো জানান, বালিয়াকান্দি উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদে আমাদের কৃষি বিভাগের সেবাদান কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে কৃষকের কৃষিভিত্তিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন। সাপ্তাহিক সকল কর্মদিবসে তারা প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের সাথে তারা ফসল উৎপাদন, ফসলের রোগ, বালাই, সমস্যা নিয়ে কাজ করে থাকেন। এছাড়াও মুঠোফোনের জাতীয় সেবা নাম্বরসহ প্রতিটি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মুঠোফোন নাম্বার কৃষকদের নিকট রয়েছে। যেকোন সময় ফসলের সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ গ্রহণ করতে পারছেন।