নেহাল আহমেদ,রাজবাড়ী: প্রতিটি স্থানের নামকরণ করা হয় ওই এলাকার ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে।জনশ্রুতি আছে ঠিক তেমনি রাজবাড়ী রামদিয়ার নামকরণ করা হয় তৎকালীন রাম বাবুর বিখ্যাত তিলের মটকা খাজা থেকে। পরে সেটি রাম দিয়ার মটকা বলেই পরিচিতি লাভ করে। সেই থেকে এই এলাকায় রামদিয়া রেলস্টেশন, রামদিয়া বাজার, রামদিয়া বি এম বি সি উচ্চ বিদ্যালয়সহ একাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে রামদিয়া নামটি কত বছর আগে থেকে রয়েছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
রামদিয়া বি এম বি সি উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপিত কাল দেখা যায় ১৯৩১ সাল। এ থেকে অনুমান করা যায় ব্রিটিশ শাসন আমল হতেই রামদিয়া নামটি চলে আসছে।তিলের মটকা রাজবাড়ীর আদি বিখ্যাত একটি আইটেম,এটি মূল আদি পুরোনো রামদিয়ার হিন্দু সম্প্রদায়গণ তৈরী করে আসছে দীর্ঘদিন,এজন্য বলা হয়ে থাকে রামের মটকা,রামের মটকা ছানার আবরণ ও তিলের আবরণ দ্বারা তৈরী করা হয়ে থাকে!মুখরোচক তিলের খাজার খ্যাতি এখন শুধু রাজবাড়ীই নয়, সারাদেশেই এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। রামদিয়ার তিলের খাজা উপাদেয় এবং দাম কম বলে এটি গ্রামে-গঞ্জে, শহর-বন্দরে সবখানে অত্যন্ত জনপ্রিয়। রেলওয়ে স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, ফেরি বা লঞ্চঘাটসহ অলিতে গলিতে সর্বত্রই পাওয়া যায় এ তিলের খাজা। সরোজমিনে দেখা যায় রামদের তৈরি মটকা পাওয়া না গেলেও কিছু মুসলমান বাড়ী এখনো তিলের মটকা তৈরি হচ্ছে।ঠিক ভাবে প্রচার এবং জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারনে এখন আর তেমন লাভ করতে পারছেনা।তা ছাড়া নানান রকম মিষ্টি আর বাহারী বিজ্ঞাপনের কাছে হেরে যাচ্ছে এই সুস্বাদু খাবার। তিলের খাজা তৈরির প্রধান উপকরণ তিল ও চিনি। চুলায় চাপানো বড় লোহার কড়াইয়ের মধ্যে চিনি জালানোর পর তৈরি হয় শিরা। নির্দিষ্ট তাকে আসার পর নামানো হয় চুলা থেকে। হালকা ঠাণ্ডা হলে, চিনির শিরা জমাট বেঁধে যায়, তখন শিঙের মতো দো-ডালা গাছের সঙ্গে হাতে টানা হয় জমাট বাঁধা চিনির শিরা।
একপর্যায়ে বাদামি থেকে সাদা রঙে পরিণত হলে কারিগর বিশেষ কায়দায় হাতের ভাঁজে ভাঁজে টানতে থাকেন। তখন এর ভেতরে ফাঁপা আকৃতির হয়। শিরা টানা শেষ হলে রাখা হয় পরিষ্কার স্থানে। নির্দিষ্ট মাপে কেটে তাতে মেশানো হয় খোসা ছাড়ানো তিল। এভাবেই তৈরি হয় তিলের খাজা। পরে এগুলো প্যাকেটজাত করে চালান দেওয়া হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে।