- রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় ‘স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত লাকসই প্রযুক্তির প্রয়োগ ও সম্প্রসারণ শীর্ষক সেমিনার ও প্রদর্শনী’ দুইদিন ব্যাপি উনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা একদিনে শেষ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ।
মেলার দ্বিতীয় দিনে বালিয়াকান্দি সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এসে কাউকে না পেয়ে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ। আয়োজনকারীদের এই ধরণের সিধান্তে হতবাক স্থানীয়রা।
তবে মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানেন না মূল নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এর প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. সানজিদা মোস্তাফী। তিনি বলেন, ওখানে কি এখন কিছুই নেই!
সোমবার দুপুরে সরেজমিন বালিয়াকান্দি সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কোন লোকজন নেই। স্টলের চারটি ব্যানার টাঙানো রয়েছে, বাকীগুলো খুলে নেয়া হয়েছে। মাঝখানে ডেকোরেটরের মালামাল গোছানো রয়েছে। উপজেলার একাধিক কর্মকর্তা জানান, রোববার মেলা শেষ হয়ে গেছে।
জানা যায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এর আয়োজনে ৭ ও ৮ অক্টোবর দুইদিন ব্যাপি সেমিনার ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ বাবদ ১ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিলো। কিন্তু আয়োজনকারীরা প্রথম দিনেই সেমিনার ও বিজয়ী প্রদর্শিত স্টলগুলোর মধ্যে পুরস্কার বিতরণ ক্েরই অনুষ্ঠান শেষ করেন। কিন্তু ব্যানারে দুই দিন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা দেখে ৮ অক্টোবর (সোমবার) সকাল ১০ টা থেকেই প্রদর্শনী স্থানে আসতে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা। তারা এসে স্টলগুলো ফাঁকা দেখতে পান। গতকাল মেলায় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৬ টি স্টল অংশগ্রহণ করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, প্রথম দিন এসে আমরা ব্যানার ও বেশ কয়েকজন বক্তার বক্তব্য শুনে বুঝতে পারি সেমিনার ও প্রদর্শনী দুইদিনের হবে। সেই হিসেব করে আমরা দল বেধে বেশ কয়েকজন বন্ধুরা মিলে বালিয়াকান্দি সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসেছিলাম। এসে বিদ্যালয়ের মাঠের স্টলগুলো ফাঁকা দেখি। পরে জানতে পারি মেলা গতকালই শেষ হয়ে গিয়েছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আবুল কালাম আজাদ উক্ত সেমিনার ও প্রদর্শনীর প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, প্রশাসনের অনেক অনুষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমাদের সাথে কোন আলোচনা করে না। দ্বিতীয় দিনে মেলা হয়েছে কিনা ঠিক বলতে পারবো না।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো: হাসিবুল হাসান বলেন, অনুষ্ঠানটি আমরা আয়োজন করলেও এটি নিয়ন্ত্রণ করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ। পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এক দিন হয়েছে। দ্বিতীয় দিনেও আমাদের সকল সাপোর্ট ছিলো, মূল আয়োজনকারী প্রশাসন নয় এটা ‘বিসিএসআইআর’ এর বিষয়।
এই বিষয়টি জানতে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এর প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. সানজিদা মোস্তাফী বলেন, ধর্মঘট ও কারোনার কারণে মেলা একদিনে শেষ করা হয়েছে। তবে দুইদিন করতে পারলে ভালো হতো। ওখানে কি এখন কিছুই নেই!