Friday, September 20, 2024

দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন রাজবাড়ীর চামড়া ব্যাবসায়ীরা 

  • রাজবাড়ীতে চামড়া কিনে লাভের আশায় ক্ষতির মুখ দেখছে চামড়া ব্যাবসায়ীরা । চামড়ার মৌসুমী ব্যাবসায়ীরা মুলতঃকোরবানীর আগে বেশ কিছু টাকা ধার কর্য করে নামেন এ ব্যাবসায়। এবার চামড়ার দাম না পেয়ে ক্ষতির মুখে পরেছেন অনেক চামড়া ব্যাবসায়ী।

রাজবাড়ীতে চামড়ার ব্যাবসা করে নজরুল ইসলাম অনেক অর্থ কামিয়েছিলো, এক নামে অনেকে তাকে চামড়া ব্যাবসায়ী বলে জানতো। দীর্ঘদিন চামড়ার ব্যবসার সাথে সে  জড়িত।এখন সব হারিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। চামড়া ব্যবসায়ী এ রকম অনেকেই এখন সর্বশান্ত  হয়ে গেছেন।গত কয়েক বছর চামড়ার ব্যবসায় ধস নেমেছে।

আক্তার হোসেন দীর্ঘদিন চামড়া ব্যবসার সাথে জড়িত গত দু মাসে অন্তত দশ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে।অনেকেই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন।এক সময় জাতীয় আয়ের একটা বড় উৎস ছিল চামড়া শিল্প।নানা জটিলতায় কিংবা সংশ্লিষ্টদের  অবহেলার কারনে চামড়া শিল্প এখন রুগ্ন শিল্পে পরিনত হয়েছে।সবচেয়ে বিপদে পড়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

রাজবাড়ী চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন মূলত এক বছরের চামড়ার পয়সা দিয়ে সারা বছরে তাদের চলতে হয় স্থানীয় ভাবে যে চামড়া সংগ্রহ হয় তাতে কোন রকম খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকা যায়।রাজবাড়ী চামড়া ব্যবসায়ীদের আরেকটা সমস্যা হল এখানে কোন কোম্পানির এজেন্ট নাই।তাদের কেনা চামড়া বিক্রি করতে হয় কুষ্টিয়ায়। কোরবানির ঈদের পর লাভের আশায় গরু ও ছাগলের চামড়া কিনে মজুদ করেছিলেন তারা। এখন বিক্রি করতে না পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাদের অনেকেই । এখনও কোনো মহাজন কিংবা কোন কোম্পানির এজেন্ট চামড়া কেনার আগ্রহ দেখাননি। এভাবে চামড়া মজুদ করে রাখলে কয়েক দিন পর নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাদের দুশ্চিন্তা, যে টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন তার পুরোটাই লোকসান হয়ে যাবে। রাজবাড়ীর কয়েকজন চামড়া ব্যাবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা প্রতি বছর কোরবানির ঈদের সময় চামড়া কিনে লবণ দিয়ে রাখেন। পরে তারা ঢাকা , কুষ্টিয়া সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করে থাকেন।

চামড়া ব্যাবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি এই কোরবানি ঈদে নিজের এবং আত্বীয় স্বজন ও পরিচিত জনদের থেকে টাকা ধার করে ৩০ টাকা ফিট হিসেবে ৬ লক্ষ টাকার চামড়া ক্রয় করেছেন। কিন্তু এখনো একটা চামড়াও বিক্রি করতে পারেননি। তিনি বলেন ঈদ গেছে প্রায় ১৫ দিন হয়ে গেলো আর ১৫ দিনের গেলে চমড়া গুলো নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু এখনো কোন চামড়া বিক্রি করতে না পারায় খুবই দুশ্চিন্তায়  আছি। সর্বস্ব হারানোর ভয়ে দিন কাটছে ।

রাজবাড়ীর চামড়া ব্যাবসায়ী বিপ্লব বলেন, আমি ৩০-৩৫ টাকা ফিট হিসেবে গরুরু চামড়া কিনেছি প্রায় ৮ লক্ষ টাকার। এখনো একটা চামড়াও বিক্রি করতে পারছি না। লবণ দিয়ে সংগ্রহ করে রেখেছি। আর ১৫-২০ দিনের মধ্যে চামড়া বিক্রি করতে না পারলে চামড়া গুলো নষ্ট হয়ে যাবে। খুব দুশ্চিন্তা মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।

একই অভিযোগ রাজবাড়ীর অনান্যা চামড়া ব্যাবসায়ীদের।তারাও কেউ ২ লক্ষ টাকা কেউ ৩ লক্ষ টাকার চামড়া ক্রয় করেছেন। তারা আরো বলেন, তাদের খোজ খবর কেউ রাখেন না। কোন ব্যাংক ও তাদের সহজ ঋন সুবিধা দেন না।

এবিষয়ে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, চামড়া একটি জাতীয় সম্পদ। চামড়া যেন নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে আমি খোজ খবর রাখবো এবং এই বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলবো।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here