স্টাফ রিপোর্টার: দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে ১৪ বছর বয়সী এক শিশুকে বিক্রির চেষ্টাকালে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ। শিশুটির বাড়ি রাজশাহীর কাটাখালী থানা এলাকায়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার চর চান্দা গ্রামের খান শহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন জাহিদ (৩৫) ও বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর যমুনাবাড়ি এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে মো. জসিম উদ্দিন (২২)।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লির এক বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে ।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় গ্রেফতার দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় যৌনপল্লীর বাড়ির মালিক চম্পা বেগম (৫০) ও আপন মন্ডল (২৪) নামে আরেকজনকেও আসামি করা হয়েছে। তারা পলাতক রয়েছে।
জানা গেছে, শিশুটির বাবা স্থানীয় বাজারে দর্জির দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। বাবাকে সহযোগিতা করতে স্থানীয় এক পরিচিতের মাধ্যমে প্রায় দুই মাস আগে সাভার আশুলিয়ার কাঁঠালতলার একটি গেঞ্জি কারখানায় কাজ নেয় শিশুটি। এক মাসের বেশি কাজ করার পর কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। কারখানায় জসিম উদ্দিন ও বগুড়ার খামাড়কান্দি শাপগ্রামের আপন মন্ডল নামে দুইজন কাজ করতো। শিশুর মাসিক বেতনের দায়িত্বভার পড়ে কারখানার লাইনম্যান জসিম উদ্দিনের ওপর। বেতন না দেওয়ায় শিশুটির বাবা ৯ অক্টোবর আশুলিয়া থেকে তার মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যান।
গত ২২ অক্টোবর রাতে আসামি আপন মন্ডল ফোন করে শিশুটিকে জানায়, তোমার বেতন হয়েছে এবং নতুন চাকরির ব্যবস্থা করেছে। এ কথা বলে তাকে বেতন নিয়ে যেতে বলে। কথামতো মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) আপনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে রাত ৮টার দিকে সাভার জামগড়ায় আসতে বলে। জামগড়ায় পৌঁছালে ১, ২ ও ৪ নম্বর আসামি আশুলিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে দৌলতদিয়া নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লির চম্পার বাড়িতে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে রেখে পরদিন সকালে নতুন কর্মস্থলে নিয়ে যাবে বলে জানায়।
পরদিন বুধবার ১, ২ ও ৪ নম্বর আসামি তাকে পতিতাবৃত্তির কথা বোঝাতে থাকলে শিশুটি কান্না করতে থাকে। স্থানীয় লোকজন বুঝতে পেরে থানা-পুলিশকে খবর দেয়। বিকেলে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, বুধবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার এবং দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাতেই শিশুটির বাবা মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করেন। অপর দুই আসামি চম্পা বেগম ও আপন মন্ডল পলাতক রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়। শিশুটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’