দৌলতদিয়ায় নদী গর্ভে দৌলতদিয়া একমাত্র মসজিদটি-হুমকিতে দেড়শতাধিক মানুষ বাড়ী ঘর,মসজিদ সহ জমি সব চলে যায় নদীতে।
সোমবার (৩০ আগষ্ট) আবার ভাঙন শুরু হয়েছে পদ্মায়। আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন মানুষ। সকালে সাড়ে ৭ টার দিকে জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া চার নং ফেরিঘাটে সিদ্দিক কাজি পাড়ায় অবস্থিত সিদ্দিক কাজি পাড়া জামে মসজিদটি পদ্মানদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এলাকা বাসির তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। সর্বগ্রাসী পদ্মা সব কিছুই বিলীন করে নিয়ে যাচ্ছে তার বুকে।এ সময় দশ টি পরিবারের ঘর ভাঙ্গন কবলে পরে।
এব্যাপারে মসজিদের ইমাম জুবায়ের হোসেন বলেন আমি ৭-৫০ এর সময় খবর পেয়ে মসজিদে ছুটে আসি ইতিমধ্যে মসজিদের বেশ কিছু অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন কিছুদিন আগেই আমরা বিআইডব্লিউটিএর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছিলাম তারা বললো এ ব্যাপারে আমাদের কোন বাজেট নেই।
পদ্মার পাড়ে ঘরবাড়ি ভাঙানিয়ে ব্যাস্ত আছেন যার নামে এই গ্রাম সেই সিদ্দিক কাজির সাথে তিনি বলেন আজ সকাল থেকেই ভাঙন শুরু হয় ইতিমধ্যে আমি, হান্নান কাজি, হারুন সেক সহ দশটি বাড়ি ও মশজিদ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আরো একশো বাড়ি ভাঙনের আতংক রয়েছে সেগুলো এখান থেকে সরিয়ে নিতে হবে। এখানকার
পদ্মার পারে দাড়িয়ে বৃদ্ধ চোখের পানি মুছতে মুছতে বললেন সর্বনাশী পদ্মা আমার কিছুই রাখে নাই। বাড়ি ঘর জমি জিরাত কিছুই বাদ রাখেনি। সব কিছু বিলীন করে নিয়ে আজ আমি সর্বশান্ত। আল্লাহর ঘর সেটাও আজ নিয়ে নিল। সর্বনাশা পদ্মার ক্ষুধা তবুও মিটে না। গত পঁচিশ বছর শুধু আশ্বাস ছাড়া আমরা আর কিছুই পাইনি। শুষ্ক মৌসুমে যদি জিও ব্যাগ ফেলা হতো বা বাঁধ দেওয়া হতো আজ অনেক গুলো পরিবার বেচে যেতো। ভরা মৌসুমে ব্যাগ ফেলে কিছুই হয়না শুধু কিছু মানুষের পকেট ভারি হয়।
এছাড়াও ঝুঁকিতে রয়েছে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটটি যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যাবে এই দক্ষিণ বঙ্গের যোগাযোগ মাধ্যমটি। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ইতিমধ্যে লঞ্চ ঘাটের এক পাশের রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আরো ঝুঁকিতে আছে ৪ ও ৫ নং ফেরিঘাট। একনম্বর ফেরিঘাট বন্ধ অনেক দিন ধরেই।
পাশেই বিআইডব্লিউটি জিও ব্যাগ ফেলছে অধিকাংশ গ্রাম বাসীর অভিযোগ জিও ব্যাগ সেভাবে ফেলা হয়না কোন অফিসার বা মন্ত্রী এলে ফেলা হয় আর অন্য সময় তেমন ফেলা হয় না। এবং শুষ্ক মৌসুমে যদি জিও ব্যাগ ফেলা হতো তাহলে হয়তো তারা রক্ষা পেতেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সি জানান, জরুরিভাবে নদী ভাঙন প্রতিরোধ করা না হলে দৌলতদিয়া ঘাট মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। সুতরাং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করি ঘাট রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।
বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা অঞ্চলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মকবুল হোসেন জানান , ভাঙ্গনের খবর পেয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে জরুরিভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে শুরু করেছি। এটা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত ভাঙন রোধ করতে না পারলে এখানকার ৩,৪,৫ ও ৬ নং ফেরিঘাট, ঘাটের পাঁকাসড়ক, বহু ঘরবাড়ি ও স্হাপনা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলেও জানান তিনি।