মোজাম্মেলহক, গোয়ালন্দ( রাজবাড়ী): রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পদ্মা ও যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন ঝুুঁকিতে রয়েছে লঞ্চ ও ফেরি ঘাট সহ কয়েক শত পরিবার। এই বর্ষা মৌসুমের আগেই দৌলতদিয়া পাটুরিয়া ঘাটকে আধুনিক নৌ বন্দরের উন্নয়ন করনের কাজ করার কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত সেই কাজের ছিটা ফোঁটা দেখা যাচ্ছে না। বর্ষার আগেই ঘাটের কাজ শুরু করা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
রাজবাড়ী পাউবো ও বিআইডাব্লিউটিএ এর সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়া ঘাটের পশ্চিমে দেবগ্রাম প্রান্তে ৬ কিলোমিটা এবং পাটুরিয়া ঘাটে ২ কিলোমিটা স্থায়ীভাবে আধুনিক করণ করতে বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃক গত বছরের জানুয়ারীতে ৬৮০ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়েছে। কাজটি বাস্তবায়নের জন্য রাজবাড়ী পাউবোকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নিদিষ্ট সময়ে ঘাটের কাজ শুরু করতে না পারায় নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ার কারনে এ কাজের বর্তমান ব্যয় হবে ১ হাজার কোটি টাকা থেকে ১২’শ কোটি টাকা পর্যন্ত।
সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড ও ২ নংওয়ার্ড এবং ৩ নং ওয়ার্ড নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট ও লঞ্চ ঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। লঞ্চ ঘাটের বিপরীতে পশ্চিমে লালু মন্ডল পাড়া থেকে নদীর তীরবতী দেবগ্রাম ইউনিয়নের অন্তর মোড় পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এক মাস ধরে পদ্মা নদীর তীরবতী অঞ্চলে ভাঙনে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার ভিটা মাটি ছেড়ে অনত্র চলে গেছে। নদীতে বিলিন হয়েছে কয়েক শত বিঘা কৃষি জমি। আরো ভাঙন ঝুুঁকিতে রয়েছে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট, ফেরি ঘাট, টার্মিনাল, বাজার, স্কুল, মাদ্রাসা সহ ৮ টি গ্রামের প্রায় ২ হাজার পরিবার।
লালু মন্ডল পাড়ার কৃষক সেলিম বলেন, আমার বসত বাড়ী সহ ৫ বিঘা জমি ছিলো। বসত বাড়ীসহ ৩ বিঘা আবাদি জমি নদীতে চলে গেছে।এখন নদীর তীরবতী বিঘা ২ জমি আছে সেখানেই কোন রকম একটি ছাপরা ঘর করে আছি।এ বছর যদি নদী শাসনের কাজ না করে তাহলে অনত্র চলে যেতে হবে। তিনি আরো বলেন গেলো বছর নদী শাসনের জন্য যে সকল জিও ব্যাগ নদীতে ফেলা হয়েছিলো সে গুলো নদীতে পড়েনি সে সকল জিও ব্যাগ ডাঙার উপদিয়ে ফেলা হয়েছে। ঐসব জিও ব্যাগ গুলো সঠিক ভাবে নদীতে ফেললে কিছুটা নদী শাসন হতো তাতে আমাদেন অনত্র স্থানে যেতে হতো না। এখন নদীতে যে ভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে আর নদী পারে থাকা সম্ভব না।
রাজবাড়ী পাউবো উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.আরিফুর রহমান অংকুর বলেন, আমরা নকশা করে বিআইডাব্লিউটিএ নিকট দিয়েছি। বিআইডাব্লিউটিএ সেই নকশাটি ঠিক আছে কি না দেখার জন্য বুয়েটে পাঠিয়েছে। সেখান থেকে নকশাটি আমাদের নিকট আসলে আমরা ঘাট অধুনিক করণের কাজ শুরু করবো।
নিদিষ্ট সময়ে কাজ না করায় কাজের বর্তমান ব্যয় হবে ১ হাজার কোটি টাকা থেকে ১২’শ কোটি টাকা পর্যন্ত।
দৌলতদিয়া নদী বন্দর আধুনিক করণ প্রকল্পের পরিচালক ও বিআইডাব্লিউটিএ’র তত্তাবধায়ক পরিচালক মোহাম্মদ তারিকুল হাসান বলেন, বুয়েট থেকে নকশা অনুমোদন হয়নি এবং জমি অধিগ্রহনের কাজ সম্পুর্ন হয়নি। এসকল কাজ সম্পুর্ন হলে ঘাট আধুনিক করণ উন্নয়নের কাজ শুরু করা হবে।