Thursday, September 19, 2024

দৌলতদিয়ায় পদ্মার পানি বিপদ সীমার উপর। প্লাবিত স্কুল সহ বাড়িঘর

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পয়েন্টে প্রতিদিন পাবি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর এর ফলে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। দৌলতদিয়ার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পদ্মা পারের নাসির সরদারের পাড়া, সালাম ফকিরের পাড়া ও মুন্সি পাড়া গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতেই পানি উঠেছে এতে বিশুদ্ধ পানি সহ রান্নাবান্নার সমস্যা দেখা দিয়াছে। অধিকাংশ পরিবার গৃহস্থ হওয়ার কারনে গরুছাগল নিয়ে মারাত্মক সমস্যার মধ্যে রয়েছে। মানবেতর জীবনযাপন করছে পানি বন্দি পরিবারগুলো।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় গোয়ালন্দ উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলর দেবগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। রাস্তা, ঘাট, ব্রীজ, কালভার্টসহ তলিয়ে গেছে সবজি ক্ষেত ও বিভিন্ন ফসলি জমি। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। বন্যার্তরা গবাদি পশু নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। সঙ্কট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার। ভেঙ্গে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। চরাঞ্চলের মানুষেরা ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকে আশ্রয় নিয়েছে বেড়িবাঁধ এলাকায় আত্মীয় স্বজনদের কাছে। আর যাদের যাওয়ার কোন স্থান নেই তারা পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সি বাজার এলাকার হজো সেকের বাড়ির সামনে দিয়ে পানির স্রোত যাচ্ছে। ছোট একটা কালভার্ট ডুবে গেছে। এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় লিটন মোল্লা ও হাবি সেকের সঙ্গে তারা বলেন কি সমস্যায় আছি দেখেন।গোয়ালন্দ বাজার থেকে গো-খাদ্যনৌকায় নিয়ে এসেও, পানির মধ্যে দিয়ে এগুলো রাখার ও জায়গা নেই। প্রায় মাস খানেক ধরে পানিবন্দী হয়ে আছি, বাড়ির চার পাশে পানি, ছোট বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বিপদে আছি। কোনসময় কি হয়। চুলো পানিতে ডুবে গেছে। রান্নাবান্না খুবই সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া ক্ষেত খামার পানিতে ডুবে যাওয়ায় বাড়ির পুরুষরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এখন পর্যন্ত কেউ ত্রান সহায়তা নিয়ে আমাদের কাছে আসেনি। আমরা খুবই কষ্টে জীবন পার করছি।

দৌলতদিয়া পদ্মার পানি বিপদ সীমার উপর প্লাবিত বাড়িঘর সহ স্কুল।

কথা হয় নাসির সরদারের পাড়ার মগবুল মোল্লা ও ইবাদত সরদারের সাথে। তারা বলেন এখানে একটা আশ্রয়স্থল হলে সবাই অন্তত আশ্রয় নিতে পারতাম। সরকার সাহায্য সহযোগিতা করছে আপনারা কেমন পাচ্ছেন? এই প্রশ্নের জবাবে মাত্র দুজন বললেন তারা সরকারের পক্ষ থেকে দশ কেজি করে চাল পেয়েছেন। বাকি দুই-একজনকে মেম্বার আশ্বাস দিয়েছে সাহায্য আবার আসলে তারা পাবেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সবাই সাহায্য পাবেন এমন কথার উত্তরে তারা জানান এগুলো কাগজ কলমের কথা বাস্তবে এগুলো হয় না।

গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু সাঈদ মন্ডল জানান, প্রথম দফায় পানি বেড়ে থেমে যাওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় আগের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। এতে করে নতুন নতুন এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ পানি বন্দী এবং বন্যা কবলিতদের সঠিক তথ্য প্রদানের জন্য উপজেলার উজানচর, দেবগ্রাম, দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বন্যা কবলিত প্রায় ২ হাজার পরিবারের জন্য সাড়ে ১৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় দফায় উপজেলার উজানচর ইউনিয়নে আরো ২০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এর আগে ৩০০ পরিবার পানিবন্দী ছিল। সে হিসেবে ৫০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দেবগ্রাম ইউনিয়নে দ্বিতীয় দফায় আরো ৬০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এর আগে আরো ৬০০ পরিবার পানিবন্ধী ছিল। সবমিলে এই ইউনিয়নের ১২০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here