নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা শাখা(ডিবি)’র অভিযানে নগদে টোপ চক্রের ২ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলোঃ মোঃ রোমান মোল্লা (৩০) ২। মোঃ রাকিব শেখ (২২) তারা উভয়েই রাজবাড়ী সদর উপজেলার সুলতান প[উর ইউনিয়নের লক্ষনদিয়া গ্রামের বাসীন্দা ।
রাজবাড়ী ডিবি’র ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান খান এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন । তিনি জানান, রাজবাড়ী পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান এর নির্দেশনায় এবং প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে গতকাল ১৫ই জুন ১৭.২৫ ঘটিকার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মনিরুজ্জামান খান, অফিসার ইনচার্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা, রাজবাড়ী এর নেতৃত্বে এসআই মোঃ মোতালেব হোসেন, এসআই মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, এসআই জাহাঙ্গীর মাতুব্বর, সঙ্গীয় অফিসার-ফোর্সসহ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে রাজবাড়ী জেলার রাজবাড়ী সদর থানাধীন সুলতানপুর ইউনিয়নের রাজাপুর সাকিনস্থ জনৈক মোঃ মোকলেছ মোল্লা (৫০), পিতা-মৃত হায়দার মোল্লা এর পুকুর চালার পূর্ব উত্তর কোনে কলা বাগানের ভিতর হতে ১। মোঃ রোমান মোল্লা (৩০), পিতা-মোঃ নূর ইসলাম মোল্লা, ২। মোঃ রাকিব শেখ (২২), পিতা-মোঃ জনাব আলী শেখ, উভয় সাং-লক্ষনদিয়া, ইউপি-সুলতানপুর, থানা-রাজবাড়ী সদর, জেলা-রাজবাড়ীদ্বয়কে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধি সেজে লোভনীয় অফার এবং আকর্ষনীয় পুরস্কারের লোভে ফেলে প্রতারণার মাধ্যমে অসহায় মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে নগদ একাউন্টের মাধ্যমে টাকা গ্রহন করে আত্মসাৎ করার অপরাধে হাতে-নাতে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকালে উক্ত আসামীদ্বয়ের হেফাজত হতে প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত মোট ০৩ টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীদ্বয় স্বীকার করে যে, তারা নির্জন কলাবাগানে বসে দীর্ঘদিন যাবৎ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধি সেজে বিভিন্ন মানুষকে ফোন করে লটারীর মাধ্যমে লোভনীয় পুরস্কার পাবার বয়ান দিয়ে টোপে ফেলে বোকা বানিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে প্রতারকের ক্ষপ্পরে পড়া অসহায় সরল মানুষের টাকা নগদ একাউন্টের মাধ্যমে গ্রহন করে আত্মসাৎ করে আসছিল। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায় যে, ‘‘তারা গ্রেফতারের পূর্বে ইং ১৫/০৬/২০২৩ খ্রি: তারিখ সকাল ১০.০০ ঘটিকা থেকে মোবাইল নম্বর ০১৪০৪-৯৮০৬৪৬ তে ফোন বয়ান দেন যে, ‘‘আসসালামু আলাইকুম, আমি বাংলালিংক অফিস থেকে কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি সাব্বির অথবা সুমন বলছি। বর্তমানে আমরা বাংলালিংক থেকে আপনার যে নাম্বারে ফোন করেছি, এ নম্বরটি কি আপনি ব্যবহার করেন, না আপনার পরিবারের অন্য কেউ ব্যবহার করে? আপনি নম্বরটি ব্যবহার করে গত মাসে বা চলতি মাসে আমাদের অফিস থেকে দুইশত বা তিনশত টাকার কোন বোনাস পেয়েছেন? আপনি যে নম্বরটি ব্যবহার করছেন বাংলালিংক ফোন কোম্পানীর ১২ বছর নের্টওয়ার্ক সার্ভিস উদযাপনে আপনি ৮ লক্ষ ৬৫ হাজার ২৫০ টাকা পুরস্কার পাচ্ছেন। পুরস্কারটা পেতে যাচ্ছেন শুধুমাত্র কোম্পানীর নম্বর ব্যবহার করার জন্য। আপনি পুরস্কার পাবেন কখন, কোথায় পাবেন এবং কিভাবে পাবেন তাহা ০১৯১১-৮৭৪৮৫৬ এই নম্বরে ফোন করে জানতে পারবেন।” তখন ভিকটিম বর্নিত নাম্বারে ফোন করলে ধৃত প্রতারক বলেন, ‘‘আপনাকে অনেক ধন্যবাদ কল করার জন্য, আপনি যে পুরস্কার পাবেন, তাহা দুই ভাগে পাবেন, প্রথমটি আপনার মোবাইলে নগদ টাকা পাবেন ৬৫,২৫০/- টাকা যা দিয়ে আপনি আগামী ০৭ বৎসর ফ্রি কল করতে পারবেন। এজন্য রেজিস্টেশন বাবদ আপনাকে খরচ সহ ৫শত টাকা ০১৯৬১৭৯৩৮০৬ এই নম্বরে পাঠাতে হবে।” ভিকটিম বর্নিত নগদ নাম্বারে যদি টাকা দেয়, তাহলে প্রতারক ভিকটিম কে একটি ৬৫,২৫০/- টাকার ম্যাসেজ পাঠায়। যে ম্যাসেজে লেখা থাকে, টাকা ৬৫,২৫০ রিচার্জ সফল হয়েছে, ব্যালেন্স চেক ইনবক্স (ধৃত আসামীর প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত জব্দকৃত মোবাইল এর সেন্ড ম্যাসেজ চেক করে বর্নিত ম্যাসেজের সত্যতা পাওয়া যায়)। তখন প্রতারক ভিকটিমকে আবারও বলে বাকী ৮,০০,০০০(আট লক্ষ) টাকা আমাদের কোম্পানী থেকে সরাসরি বাড়ীতে গিয়ে পৌছে দিয়ে আসবে। সেজন্য আপনাকে রেজিস্টেশন বাবদ একই নগদ নম্বর ০১৯৬১৭৯৩৮০৬ তে খরচ সহ ৩,০০০/ টাকা পাঠাতে হবে। ভিকটিম তখন প্রতারকের ফাঁকিতে বিশ্বাস স্থাপন করে প্রতারকের দেওয়া উক্ত নগদ নম্বরে খরচ সহ টাকা যদি পাঠিয়ে দেয়, প্রতারক আবারও ভিকটিমকে ফোন করে বলে, আপনার বাড়ীতে একজন পুলিশ, একজন ম্যাজিষ্ট্রেট এবং আমরা কোম্পানীর সিনিয়র জুনিয়র অফিসার আপনার বাসায় গিয়ে আট লাখ টাকা দিয়ে আসব, সেজন্য আপনাকে তেল খরচ বাবদ আরো ৩ হাজার টাকা দিতে হবে। ভিকটিম তেল খরচ বাবদ খরচ সহ ৩,০০০/- টাকা বর্নিত নগদ নম্বরে যদি পাঠায় তবে প্রতারক ভিকটিমের মোবাইল নম্বরটি ব্লক লিস্টে দিয়ে দেন। এ ভাবেই বাংলা লিংকের কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধি পরিচয়ে লটারীর মাধ্যমে পুরস্কার জেতার প্রলোভন দেখিয়ে টোপ দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল এই প্রতারক চক্র। এই প্রতারক চক্রটি নগদ নম্বর ০১৯৬১৭৯৩৮০৬ তে ৫ জানুয়ারী ২০২৩ থেকে ১২ জুন ২০২৩ পর্যন্ত ২,৭৮,৫০৪/- টাকা বিভিন্ন অসহায় মানুষের থেকে হাতিয়ে নিয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়।