- নদী গর্ভে বিলীন হয়েগেছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের চর সিলিম পুর সরকারি প্রাঃবিদ্যালয়। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিয়ে সংশয়ে পরেছে শিক্ষকেরা। গ্রামের শিক্ষার্থীরা এখন কোথায় শিক্ষা গ্রহন করবে এ নয়ে সংশয় রয়েছে অভিভাবকদের মধ্যেও।
দফায় দফায় নদী ভাঙ্গনের ফলে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের চর সিলিম পুর সরকারি প্রাঃবিদ্যালয় নদী গর্ভে বিলীন হয়েগেছে।
২৪শে সেপ্টেম্বর(শুক্রবার) বেলা ১২টার দিকে বিদ্যালয় টি ভাঙ্গন শুরু হয়। খবর পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়েগেছে। কিন্তু নদীতে তেমন পানি নেই নেই তেমন স্রোত এ সময় বিদ্যালয় টি নদীতে চলে যাওয়ায় চিন্তিত শিক্ষকেরা।
বিদ্যালয়টি প্রধান শিক্ষক ঈমান আলী জানান, ‘গতকালও বিদ্যালয়ের এ ভবনে আমি ক্লাস করিয়েছি। বর্ষার মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফেলানো বস্তার উপর স্কুল টি তিন বছর দাঁড়িয়ে ছিলো। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের টেঁকসই কাজ করার জন্য বার বার অনুরোধ করেছি। কিন্ত বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ড শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করছে। আপাতত তারা বালুর বস্তা দিয়ে কাজ করছে। তাদের কাজের গাফিলতির কারনে আজকে আমাদের বিদ্যালয়ের ভবন টি আজ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আমি খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমাদের উপরের কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তারা এসে সার্বিক অবস্থা দেখে গেছেন।’
নদী ভাঙ্গনের ফলে নদীর পাড়ে থাকা বাসিন্দারাও অন্যত্র চলে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের আরেকটি টিন শেড সেটিও স্থানান্তর করা হচ্ছে।
নদী পারের বাসিন্দা দিন মজুর জাগাঙ্গীরের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় ৭-৮ জন মিলে ঘড় বসতি ঘর ভেঙ্গে অন্যত্র যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কথা হলে জাহাঙ্গীর জানান, নদীর বাধ নির্মাণে কর্মকর্তারা অনেক অনিয়ম করছে। যখন কাজ করার দরকার তারা তখন কাজ করেনা, বর্ষার মৌসুমে কাজ করে । এ সময় কাজ করে তেমন ফল পাওয়া যায় না। তিনি আরো বলেন নদী থেকে অবাধে বালু উত্তলন করা হচ্ছে। আর এ বালু আনা নেওয়ার জন্য যে বলগেট চলাচল করে সে বলগেট বেড়িবাঁধ ঘেষে চলাচল করে। এ বলগেটের আঘাতে নদীর পাড়ের বালুর বস্তা সরে যায়। আমি গরীব মানুষ । আমি এখন কোথায় যাবো। এ চিন্তা করছি।
স্থানীয় বাসিন্দা শহীদ মিয়া জানান, সরকার আমাদের শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে দিচ্ছেন,আমরা এতে খুব আনন্দিত। কিন্ত কাজ টি বাস্তবায়ন করছে যে প্রতিষ্ঠান তারা খুব অবহেলার সাথে কাজ করছে। কাজের গুণগত মান ঠিক নাই। অন্যদিকে নদীতে অবাধে বালু উত্তোলন চলছে যার কারনে আজ স্কুল টি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
মিজানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান, নদী থেকে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাম খেয়ালীর কারনে বিদ্যালয়টি আজ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আমি আমাদের মাসিক মিটিং এ বার বার এ বিষয়ে কথা বলেছি। কিন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয় নি।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরীন আক্তার জানান, খবর পেয়ে বিদ্যালয় টি পরিদর্শন করেছি। হটাত করেই আজকে বিদ্যালয়টি নদী ভাঙ্গনের কারনে নদীতে চলে যায়। বিদ্যালয়ের ১০৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ের আরেকটি টিন শেড ঘর রয়েছে সেটি অন্য যায়গায় স্থানান্তর করে আমরা দুইদিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার উপযোগী করে তুলবো।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আব্দুল আহাদ জানান, নদীর পাড়ে কোন স্কুল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার নিয়ম নাই। এখানে বিদ্যালয় টি করা ছিলো অপরিকল্পিত। তাছাড়া নদীর পাড়ের মানুষের ঘড়ের নিরাপত্তার দায় আমার নয়। আমি দ্রুত নোটিশ করবো ও মাইকিং করবো ,যেন নদীর পাড়ের অবৈধ স্থাপনা ও বাসস্থান অন্যত্র সড়ানো হয়।