নারী দিবস:
আজকাল কিছু কিশোর ও তরুণদের মধ্যে প্রচণ্ড নারীবিদ্বেষ দেখা যায়। ছেলেরা তো বটেই, এমনকি মেয়েদের মধ্যেও। উন্মুক্ত মিডিয়ার যুগে বিশেষ করে ফেসবুকে একটা গ্রুপ বা গোষ্টি নারীদের ব্যাপারে ব্যাপক কুৎসা গীবত এবং অপমান মুলক প্রচারনা চালাচ্ছে।আমার মনে হয় নারীবাদের ব্যাপারে ভুলভাল জানার কারণে, ‘নারীবাদী’ শব্দটা অনলাইনে এখন একটা গালি। নারী দিবসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবার বাধ্যতামূলক অংশগ্রহণ আমাদের তরুণদের নারীবাদ বিষয়ে সঠিক শিক্ষা দেয়া দরকার। স্কুল থেকে শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের প্রয়োজন ভুমিকা এবং তাদের প্রতি সম্মান বোধের শিক্ষা দেয়া জরুরী। আ আমার মতে, প্রতিবছর নারী দিবসে ছেলে-মেয়ে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেশের পুরুষদের মানসিকতার পরিবর্তন করে নারীর প্রতি সহিংসতা, অবমূল্যায়ন, ধর্ষণের মত ঘটনা কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের প্রতিবাদে এবং ন্যায়সংগত দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছিলেন নারী শ্রমিকেরা। এই শ্রম আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ পথপরিক্রমায় চালু হয় ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’।
বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে নারীর অধিকার, বিশেষ করে ভোটাধিকার প্রচারের প্রচেষ্টার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নারী দিবস (IWD) পালিত হয় । নারী ভোটাধিকারের প্রচারণায়, ১৯০৯ সালে আমেরিকার সমাজতান্ত্রিক দল প্রথমজাতীয় নারী দিবস, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে গণসমাবেশের মাধ্যমে বিশেষভাবে উদযাপন করা হয়েছিল; ১৯১৩ সাল পর্যন্ত এই দিনটি পালন করা হত। জার্মান কর্মী দ্বারা উৎসাহিত১৯১০ সালে আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক কংগ্রেসের সভাপতি ক্লারা জেটকিন মার্কিন ছুটির একটি আন্তর্জাতিক সংস্করণ তৈরি করতে সম্মত হন এবং ১৯ মার্চ, ১৯১১ তারিখে অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক , জার্মানি এবং সুইজারল্যান্ডে প্রথম আন্তর্জাতিক বিশ্বযুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। এই দিবস উপলক্ষে দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ সমাবেশে অংশ নেয় । পরবর্তী বছরগুলিতে অন্যান্য দেশে এবং বিভিন্ন তারিখে আন্তর্জাতিক বিশ্বযুদ্ধ পালিত হয়
গত শতকের সত্তরের দশকের মাঝামাঝি দিবসটি জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ বিশ্বরূপ পায়।
যে সময়ে পৃথিবীর নারীরা বিশ্ব জয় করছে সে সময়ে বাংলাদেশে নারীদের ঘর বন্ধী করে রাখা লেখা পড়ার নিরুৎসাহী করা এবং প্রতিবাদী নারীকে শারিরিক আঘাত করাকে আমরা আমাদের সংবিধান। আইন, বিচার নিয়ে রাষ্ট্রকে প্রশ্নের সম্মুখীন দাড়ঁ করাতে পারি। শুধু ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়া, বক্তৃকায় সভা সেমিনারে তালি পাওয়ার লোভে নয়। সমস্যা থেকে উক্তরনের উপায় বের করতে হবে। সামাজিক সাংসাকৃতিক দলগুলোর ভুমিকা রাখতে হবে। শিল্প সাহিত্য কে দাস বানানোর মানসিকতার মানুষ দিয়ে উত্তরন সম্ভব নয়।
নেহাল আহমেদ
কবি ও সাংবাদিক