উজ্জল হোসেন, পাংশা : রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের চরঝিকুরি মধ্য পারা গ্রামের মৃত আফতাব উদ্দিন সাহার পরিবারের তিনজন জন্ম থেকে অন্ধ তারা দেখেনি পৃথিবীর আলো দেখতে পায়নি এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকা তাদের মায়ের চেহারা। এমনকি তারা তিন ভাই বোন দেখতে পায়নি নিজেদের চেহারা, দেখতে পায়নি পৃথিবী আলো বাতাস।
এ বিষয়ে আব্দুল লতিফ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমরা পাঁচ ভাই তিন বোন এর মধ্যে দুই ভাই এক বোন অন্ধ আমরা ছোটবেলা থেকেই কিছুই দেখি না দেখতে পাইনি এই পৃথিবীটা কেমন। দেখতে পাইনি বাবা মায়ের মুখ। আমাদের চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হয়, অসুস্থ হলে চিকিৎসা করতে আরো বেশি কষ্ট হয় এমনিতেই মানুষের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে মানবতার জীবনযাপন করছি আমরা খুব কষ্টেই। এর মধ্যে অসুস্থ হলে চিকিৎসাই করব নাকি দুই থেকে তিন বেলা পেটে দুই মুঠো ভাত দিব। এবিষয়ে রবিউলের অন্ধ বোন বলেন আমরা তিন ভাইবোন অন্ধ আমরা একসাথেই খাওয়া দাওয়া করি আমাদের তিনজনের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা দিয়ে আমরা একসাথে মিলেমিশে খাই। আমার এক অন্ধ ভাই বিয়ে করেছে সেই ভাবি রান্না করে দেয় আমরা সেটা খাই, দিন খেয়েও যায় আবার না খেয়েও যায়। এ বিষয়ে অন্ধ রবিউল বলেন আমাদের চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হয় আমার দুইটা ছেলে সন্তান আছে তাদের সাহায্যে আমি চলাফেরা করি আমি আমার বাবা-মায়ের মুখ দেখতে পায়নি দেখতে পাইনি পৃথিবীর আলো, মানুষ কেউ কিছু বললে সেটা শুনতে পাই কিন্তু কে বলছে কথাটি তাকে দেখতে পাইনা।
এ বিষয়ে অন্ধ রবিউলের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী বড় ভাসুর ও ননদ তারা সবাই অন্ধ তাদের খাওয়া দাওয়া সব ব্যবস্থা আমাকে করতে হয়। তাদের কোন অসুস্থ হলে তাদের চিকিৎসার জন্য মানুষের কাছ থেকে টাকা চেয়ে তাদের চিকিৎসা করাতে হয়। আমি একা মানুষ এই তিনজন অন্ধ মানুষের খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে চিকিৎসা সহ তাদের যাবতীয় খরচ আমাকে করতে হয় আমি একা এইগুলো করতে পারিনা তাই সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ তারা যদি আমার এই অন্ধ পরিবারের পাশে এসে একটু সহযোগিতা করে তাহলে আমি এদেরকে একটু হাসি খুশি রাখতে পারব।
বিষয়টি সম্পর্কে চরঝিকুড়ী গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, আমি আমার পরিবারের কাছ থেকে শুনেছি তারা ছোটবেলা থেকেই অন্ধ। তাদের চলাফেরা করতে খুব কষ্ট হয়। আরো একজন বলেন, তারা ছোটবেলা থেকেই অন্ধ তাদের জীবন চলছে কষ্টের মধ্য দিয়ে, অনেক সময় খেয়ে না খেয়ে তাদের দিনরাত কাটে। সবাই যদি একটু সহযোগিতা করে তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও কমবে।