উজ্জল হোসেন, পাংশা: রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের নিভা গ্রামে জোরপূর্বক জমি জবরদখল করে পেঁয়াজ লাগানোর অভিযোগ উঠেছে এক পক্ষের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্তরা হলেন, একই গ্রামের মৃত মোশারফ মন্ডলের ছেলে মিলন মন্ডল, লিটন মন্ডল ও আতিয়ার রহমান মন্ডল। অভিযোগ তুলেছেন ওই গ্রামেরই আতিয়ার মন্ডলের ছেলে চান্নু মন্ডল। জানা যায় , ২০১৩ সালে পাট্টা ইউনিয়নের নিভা মৌজায় এস,এ ১৯৫, বিএস ফাইনাল ২৫৩ নং খতিয়ানের এস,এ ৫৩৪ ও বি,এস ৯৬৪ নং দাগের নাল ১ আনায় ৯ শতাংশ জমির মালিক বদর উদ্দিন মন্ডলের নিকট থেকে ক্রয় করেন চান্নু মন্ডল। জমি ক্রয়ের পর থেকে জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে বাঁধা প্রদান করে আসছিল মিলন মন্ডল গং। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই জমিতে পেঁয়াজ লাগানো হয়েছে। এসময় মাঠে কাজ করা কৃষকেরা বলেন, এই জমিতে চান্নু গম লাগিয়েছিলো। এখন মিলন পেঁয়াজ লাগিয়েছে। এব্যাপারে চান্নু মন্ডলের মা চাম্পা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে জমি কেনার পর থেকেই ওরা জমিতে যেতে দিচ্ছে না। তারা বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমার ছেলে এই জমিতে পেঁয়াজ লাগিয়েছিলো কিন্তু ১৫-১৬ দিন আগে মিলন ও তার ভাইয়েরা সহ ২০-২৫ জন জমিতে লাগানো গম নষ্ট করে পেঁয়াজ লাগিয়েছে। আমাদের জমির বৈধ কাগজ থাকা সত্ত্বেও আমরা জমিতে যেতে পারছি না। আমার ছেলে যাতে জমি বুঝে পায় সকলের কাছে সেই দাবী জানাই।
এছাড়াও পাট্টা ইউনিয়নের বিলজালিয়া গ্রামের মৃত কেয়ামদ্দিন মন্ডলের ছেলে শাহাদত মন্ডল সদর মন্ডলের অংশের ৯ শতাংশ জমি কিনে আজও জমিতে যেতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন মিলন গংদের বিরুদ্ধে।
তবে এসকল অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে মিলন মন্ডল বলেন, আমরা প্রায় ২৫-৩০ বছর আগে নবুয়ত মন্ডল, সদর মন্ডল ও বদর মন্ডলের নিকট থেকে ২৭ শতাংশ জমি ক্রয় করি। কিন্তু আজ-কাল করে দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও তারা জমি রেজি: করে দেয় নাই। আমরা এই জমিতে চাষাবাদ করে আসছিলাম। একপর্যায়ে বদর মন্ডল গোপনে চান্নুর নিকট ৯ শতাংশ জমি বিক্রি করে দেয়। এ বিষয়ে ইতিপূর্বে সালিশী বৈঠকে আমাদেরকে জমি রেজি: করে দেয়ার জন্য রায় প্রদান করে এলাকাবাসী। কিন্তু তারা আজও রেজি: করে দেয়নি। ওই সালিশের সভাপতি ছিলেন চান্নুর দাদা আব্দুল মন্ডল। জমিতে এখন আমরা পেঁয়াজ চাষ করছি। আমরা কারো জমি জবরদখল করি নাই। ওরা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বেড়াচ্ছে। জমির মূল মালিক বদর উদ্দিন মন্ডল বলেন, আমরা ২০০০ সালের দিকে মতিয়ার মন্ডলের নিকট জমি বন্ধক রাখি। পরবর্তীতে টাকা ফেরত দিয়ে জমি বুঝে নিতে চাইলে তারা বলে আমরা জমি কিনেছি, আমাদেরকে রেজি: করে দাও। যেহেতু আমরা জমি বিক্রি করি নাই তাই রেজি:ও করে দিই নাই। তারা জোরপূর্বক আমাদের জমিতে চাষাবাদ করছে। আমার নিজ নামীয় ৯ শতাংশ জমি আমি চান্নু মন্ডলের কাছে বিক্রি করেছি। সেখানেও তারা ঝামেলা করছে। চান্নু ওই জমিতে গম লাগিয়েছিল কিন্তু তারা সেটা নষ্ট করে পেঁয়াজ লাগিয়েছে। ইতিপূর্বে তারা এলাকাবাসীর মাধ্যমে সালিশ বসালেও সালিশের রায়ে আমরা কোন ভাই তাতে সই করি নাই।