উজ্জল হোসেন, পাংশা(রাজবাড়ী) : রাজবাড়ীর পাংশায় স্বপরিবারে হত্যার উদ্দেশ্য বসত ঘরের দরজা ও বাড়ির মেইন গেট বাহির থেকে আটকিয়ে গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৬জুন) দিবাগত রাত ২ টা ৩০ মিনিটের দিকে পাংশা পৌর শহরের মৈশালা গ্রামে (ফায়ার সার্ভিসের পিছনে) তাঁতিপাড়া এলাকার লিটন কুমার কুণ্ডুর বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, লিটন কুমার কুন্ডুর বাড়ীর খরির ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় এবং আগুন মূহুর্তের মধ্যে
সম্পুর্ণ বসত ঘরে ছড়িয়ে পরে। অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে পাংশা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে দুই ঘন্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ততক্ষণে বসত ঘরের পাঁচটি কক্ষের সকল আসবাবপত্র ও একটি খরির ঘর পুড়ে যায়। এতে প্রায় তিন লক্ষাধিক পরিমান টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং স্বপরিবারে জানে বেচে গেছেন বলে জানান পরিবারটি। খবর পেয়ে পাংশা পৌর মেয়র ও পাংশা মডেল থানা পুলিশ ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন।
শ্রী বলেন, প্রতি দিনের ন্যায় ভাই টিটু কুমার কুন্ডু, ছেলে প্রত্যয় কুমার কুন্ডু ও মা মুক্তি রানী কুন্ডু রাত ১১ টার দিকে স্ব স্ব ঘরে ঘুমিয়ে পরেন। হঠাৎ রাতে ঘরে আগুন লাগার বিষয়টি টের পেয়ে ঘরের মধ্যে থাকা বিদ্যুতের মেইন সুইজ বন্ধ করে ঘর থেকে বাহির হতে গেলে ঘরের দরজা খুলতে পারি না। সে সময় চিৎকার করতে থাকি এবং ঘরের জানালা ভেঙে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি বসত ঘরের পাঁচটি দরোজা ও বাড়ির মেইন গেট বাহির থেকে আটকানো। পরে ঘরের সকল দরোজা খুলে দিয়ে ভাই, ছেলে ও মাকে নিয়ে খরির ঘরে লাগা আগুন নিভাতে ব্যস্ত হয়ে পরি।
তিনি ধারণা করে বলেন, কে বা কাহারা কোন রাসায়নিক প্রদার্থ দিয়ে আমাদের স্বপরিবারকে হত্যার উদ্দেশ্য ঘরের দরোজা বাহির থেকে আটকে দিয়ে এই অগ্নিকান্ড ঘটানো হয়েছে। তবে এলাকার কারো সাথে তার পরিবারের কোন সদস্যের কোন মত বিরোধ নেই বলে জানান।
লিটর কুমার কুন্ডুর ভাই টিটু কুমার কুন্ডু বলেন, ভাইয়ের চিৎকার শুনে ঘর থেকে বাহির হতে গিয়ে দেখি বাহির থেকে দরোজা আটকানো। পরে ভাই এসে দরোজা খুলে দিলে ঘর থেকে বাহির হয়ে দ্রুত খরির ঘরের আগুন নিভাতে যাই তখন মুহুর্তেই ৫-১০ সেকেন্ডের মধ্যে সম্পুর্ণ বসত ঘরে ছড়িয়ে পরে। এ অগ্নিকাণ্ডে আমাদের চারটি প্রাণ ছাড়া আর কোন কিছুই রক্ষা করতে পারি নাই।
তিনি আরো বলেন, এটা শুধু অগ্নিকাণ্ডই নয় আমাদের এখান থেকে উচ্ছেদ ও সম্পুর্ণ হত্যার উদ্যেশ্যে করেই এই অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
পাংশা ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন অফিসার মো. রয়েল আহম্মেদ বলেন, বাড়িটি আমার ফায়ার ষ্টেশনের নিকটেই। আমরা স্বচোখে দেখে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় ২ ঘন্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। কোন রাসায়নিক প্রদার্থ দিয়ে অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, কোন রাসায়নিক প্রদার্থের আলামত পাওয়া যায়নি।
পাংশা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) উত্তম কুমার ঘোষ জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা অভিযোগ দেবে বলে জানিয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।