মোজাম্মেলহক লালটু, গোয়ালন্দঃ হঠাৎ করে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শত শত একর জমিতে টমেটো, পিয়াজ, কালো বেগুন, মাস কলাই, ফেসারি কলাই, করলা,শাস সবজিসহ বিভিন্ন ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে।সেই সাথে পানিতে ডুবছে কৃষকের স্বপ্ন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অসময়ে নদীর পানি বৃদ্ধিও বৃষ্টি হওয়াতে দৌলতদিয়া ইদ্রিস পাড়া ও অংকের শেখের পাড়া দেবগ্রামের কাউয়াজানি, মুন্সী বাজার এলাকা, উজানচরের দেবেপুর এলাকায় শত শত বিঘা ফসলি জমিতে পানিতে ডুবে গেছে। পিয়াজ, টমেটো , মাস কলাই, ফেসারি কলাই, কালো বেগুন, করলা ক্ষেত। চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে চরঅঞ্চলের কৃষকেরা তাদের স্বপ্ন পানিতে ডুবছে। কৃষকেরা তাদের ফসলি কিছু বাঁচাতে তারা জমির মাঝে বান দিয়ে পানি ঠেকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে তাতে তাদের শেষ রক্ষা হচ্ছে না। অনেক কৃষকেরা বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে লোন নিয়ে জমিতে ফসল চাষ করেছিলো। তারা তাদের ফসল বিক্রি করে লোন পরিশোধ করার কথা ছিলো। কিন্তু অসময়ে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলি জমিতে পানি এসে ডুবে গেছে তাদের ফসল হতাশার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে কৃষকের। এ অবস্থাতে কি ভাবে লোন পরিশোধ করবেন কৃষকেরা। কৃষকের সারা বছরে স্বপ্ন পানিতে ভাসছে।
কৃষক ইউছুফ মোল্লা বলেন, আমি লোন নিয়ে দুই বিঘা জমিতে পিয়াজ ও দুই বিঘা জমিতে টমেটো আবাদ করেছিলাম। একদিনের মধ্যে আমার এক বিঘা জমিতে নদীর পানি চলে আসে। আমি জমির মাঝ খান থেকে উচু করে একটি বান দিয়েছিলাম পানি ঠেকানোর জন্য কিন্তু তাতে কোন কাজ হলো না। বিকেলে আবার পানি বাড়াতে আমার বানের উপর দিয়ে পানি এসে ভাসিয়ে গেলো আমার পিয়াজ ক্ষেত। তার একদিন পরে টমেটো ক্ষেতে পানি ডুকে যায়। এতে আমার সারা বছরের পরিকল্পনা নষ্ট হয়ে গেলো। এখন কি করে লোন পরিশোধ করবো বুঝে উঠতে পারছি না।
আরেক কৃষক মোস্তাফা বলেন, আমি চার বিঘা জমিতে পিয়াজ ও টেমেটো, কালো বেগুন চাষ করে ছিলাম। অসমে নদীতে পানি বাড়াতে আমার টমেটো ক্ষেতে পানিতে ডুবে গেছে। পিয়াজ ক্ষেতের কিছু অং শ পানিতে ডুবে গেছে। এখন বাদ বাকী ফসলি জমি পানির হাত থেকে বাঁচাতে জমির মাঝে বান দিচ্ছি। যাতে পানি পিয়াজ ক্ষেতে ডুকতে না পারে। বেগুন ক্ষেতের চার পাশে বান দিয়ে পানি ঠেকাতে পানিনি। এবছর আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেলো।
গোয়ালন্দ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ছালমা আক্তার বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় নদী পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৪ সেন্টিমিটার। তিনি আরো বলেন এরকম অসময়ে নদীতে পানি বৃদ্ধি পায় আগে কখনো দেখিনি। এপানিতে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি অফিসার মো. খোকনুজ্জামান বলেন, উপজেলার ফসলি জমি পানিতে ক্ষতি হয়েছে ১৬ তারিখ পর্যন্ত ১৮৫ হেক্টর। আরো ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জরিপ করা হচ্ছে ।