দেশের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটিরিয়া নৌরুটে শত শত যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহনের সারি দেখা গেছে।
শিমুলিয়া বাংলা বাজার নৌরুটে পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারনে এ নৌরুটে চাপ বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (বিআইডব্লিউটিসি) কর্তৃপক্ষ । আর এতে চরম দুর্ভোগে পরেছে যাত্রী,চালক হেল্পার। যাত্রীবাহী বাস অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাড় করা হচ্ছে ,তীব্র স্রোতের কারনে একটি ফেরী তীরে ভীড়তে ১৫-২০ মিনিট এর বেশী সময় লাগছে।
ফেরীতে নদী পারের অপেক্ষায় দেখা গেছে শতশত যানবাহন। কাভার্ডভ্যান সহ অপচনশীল পন্যবাহী ট্রাকের চালক ও হেলপারদের অমানবিক জীবন যাপন করতে হচ্ছে। তিন চারদিন তাদের রাস্তার সিরিয়ালে থাকতে হচ্ছে। এর ফলে তাদের গোসল -খাওয়াদাওয়া সহ খাবার দাবারের অসুবিধা হচ্ছে ।
গাড়ির চাপের পাশাপাশি নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় সব মিলিয়ে ফেরি পারাপার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শিমুলিয়া বাংলা বাজার নৌরুটে পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে দুই রুটের গাড়ির চাপ পড়েছে দেশের অন্যতম এই নৌরুটে।
দৌলতদিয়া-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে পাড়ের অপেক্ষায় গত তিন দিন ধরে রয়েছে ট্রাক চালক মিজান।তিনি জানান, গত মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) তিনি নদী পারের জন্য চুয়াডাঙ্গা থেকে দৌলতদিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে বের হন। গোয়ালন্দ মোড়ে পৌঁছানোর পর দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য তাকে দৌলতদিয়া-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের রাজবাড়ীর দিকে ঘুরিয়ে দেন। এরপর কেটে গেছে তিনদিন। এখনো ফেরির দেখা পাননি তিনি। তিনি বলেন এখানে থেকে বাথরুম গোসল সহ খাওয়া দাওয়ার চরম কষ্ট করতে হচ্ছে। তাঁর মতো আরো প্রায় চার পাঁচ শত চালকের একই অবস্থা।
আরেক চালক আফজাল হোসেন বলেন, তার লাইন খরচের টাকা শেষ হয়ে গেছে। মহাজন কে ফোন করে কিছু টাকা এনেছেন। গাড়ি চললে এক অবস্থা কিন্তু অলস ভাবে বসে থাকলে খরচ বেশি হয়। মহাজন চারশত টাকা দিয়েছেন, দুইজন মানুষ এই টাকায় কিভাবে চলে। খুব খারাপ অবস্থায় থাকতে হচ্ছে তার উপর প্রায় সারারাত জেগে থাকতে হয়।
আজ শুক্রবার (২০ আগষ্ট) সকাল ৯ টায় সরেজমিন দেখা যায়, নদী পারের জন্য দৌলতদিয়া-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের রাজবাড়ীর দিকে প্রায় ৬ কিলোমিটার আহলাদিপুর বাজার পর্যন্ত অপেক্ষা করছে প্রায় ৫ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক নদী পারের জন্য অপেক্ষা করছে। অপরদিকে দৌলতদিয়া ঘাটের ৫ নং ফেরি ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে নদী পারের জন্য আরো অপেক্ষা করছে প্রায় তিন শতাধিক যানবাহন। এরমধ্যে ৫০ টির মতো দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জামাল হোসেন বলেন, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের ফেরি চলাচল বন্ধ, পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ও তীব্র স্রোতের কারনে ফেরি চলাচলে ব্যহত হওয়ায় নদী পারের জন্য ট্রাকগুলোকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে এ সকল অপেক্ষমান পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে নদী পারের জন্য বর্তমান দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোটবড় ১৮ টি ফেরি চলাচল করছে।”