কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, পেঁয়াজ উৎপাদনে দেশ শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে রপ্তানী করতে সক্ষম হবে।
তিনি বলেন, বছরে ৮ থেকে ১০ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানী করতে হয়। আমাদের প্রয়োজনের সময় বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ পাওয়া না যাওয়ায় দেশে অস্বাভাবিকভাবে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এজন্য আমরা পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চাই। ভোলায় বারি উদ্ভাবিত বারি-৪ জাতের পেঁয়াজের ফলন ভালো ও সুস্বাদু। এটিকে আমরা সারাদেশে ছড়িয়ে দেব।
ড. আব্দুর রাজ্জাক আজ জেলার সদর উপজেলার চর মনশা গ্রামে সমন্বিত ফল বাগান, বারোমাসি আম, সূর্যমুখী, চীনা বাদামসহ তেল জাতীয় ফসল ও পেঁয়াজের মাঠ পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন।
ভোলার লবণাক্ত জমিতে চাষ হচ্ছে ব্রি ধান ৬৭, বিনা ধান ১০। এছাড়াও অঞ্চলটিতে ভুট্টা, মুগ, সয়াবিন, সূর্যমুখী ও শশার আবাদ দিন দিন বাড়ছে। এখানে পেঁয়াজ, বার্লি ও পুঁইশাকসহ বিভিন্ন সবজি ফসল চাষ খুবই সম্ভাবনাময়। সরকারের প্রণোদনা পুনর্বাসন র্কাযক্রমের ফলে এসবের আবাদ দিন দিন বাড়ছে।
পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর, ভোলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক ।
এ সময় মাঠে কর্মরত কয়েকজন কৃষি শ্রমিকের কাছে তাদের মজুরি, চালের দাম ও বা অন্য কোন অভাব আছে কিনা তা জানতে চান মন্ত্রী।
শ্রমিকেরা জানান, তারা সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৬ পর্যন্ত কাজ করে দিনে ৫শ’ থেকে ৫শ’৫০ টাকা মজুরি পান, মোটা চালের দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আর তাই তাদের খাদ্যের কোন অভাব নেই।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আগে এক দিনের মজুরি দিয়ে শ্রমিকেরা ২-৩ কেজি চাল কিনতে পারতো, আর এখন এই মজুরি দিয়ে কমপক্ষে ১০ কেজি চাল কিনতে পারে। করোনা ভাইরাস মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে এই মুহূর্তে খাদ্যপণ্যের দাম রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, এ সকল কারণে দেশে কিছুকিছু নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু দেশে কোনো খাদ্য সংকট নেই- কোনো মানুষ না খেয়ে নেই।’
মন্ত্রী বলেন, অথচ কিছু অর্থনীতিবিদ, সুশীলসমাজ ও বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা সারা দিন ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছেন দেশ ডুইবা গেল, মানুষ না খাইয়া মরতেছে। মনে হয় যেন একটা দুর্ভিক্ষ চলতেছে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, কৃষিতে বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হলো কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা ও কৃষককে লাভবান করা। কিন্তু মুনাফাখোর, পাইকার-আড়তদার, মধ্যস্বত্বভোগী, সামাজিক সমস্যা, চাঁদাবাজি প্রভৃতির কারণে কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য পায় না।
তিনি বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা যাতে কৃষক এবং ভোক্তাকে শোষণ ও ঠকাতে না পারে- তা নিশ্চিত করতে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।