নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ২০২০ (২য় পর্যায়) পরীক্ষা চলাকালীন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি)’র অভিযানে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযানের সময় রাজবাড়ী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মাহাবুর রহমান (সার্বিক) এন ডিসি আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সালাউদ্দিন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ নেওয়াজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাঈনুদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সদর থানা পুলিশ ও ডিবি’র টিম রাজবাড়ী পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের মৃত আবুল খায়েরের ছেলে মিজানুর রহমানদের বাড়িতে প্রায় কয়েক ঘন্টা ব্যাপী অভিযান চালায় ও গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তাদের রাজবাড়ী ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেনঃ রাজবাড়ী পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের মৃত আবুল খায়েরের ছেলে মিজানুর রহমান (৪৩)। রাজবাড়ী জেলার কালুখালি উপজেলার সাং-খামারবাড়ী গ্রামের মৃত জুলমত মন্ডলের ছেলে ইব্রাহীম হোসেন (৩৪)। একই উপজেলার ছোট কলকলিয়া গ্রামের আকিম মন্ডলের ছেলে সাগর আহম্মেদ (২৮) । শিকজান গ্রামের বাদু মালার ছেলে বিজয় বালা (৩২)। সংগ্রামপুর এলাকার খবির উদ্দিনের ছেলে রেজাউল করিম(৩০) । চর নারায়নপুর এলাকার আঃ মাজেদের ছেলে আবু ছালমান (৩০)।কালিকাপুর এলাকার মৃত আমেদ আলী মন্ডলের ছেলে মুনছুর মন্ডল (৪০)। রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার চর আফড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে রুবেল মাহমুদ (৩৫) । মালিয়াট এলাকারপিতা-ছালাম শিকদারের ছেলে রুমান হাসান রনি (৩৬) । কালিকাপুর গ্রামের মুনছুর মন্ডলের মেয়ে ফরিদা বেগম (২৮)।
ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানার উত্তর তালগাছিয়া গ্রামের মৃত নাজেম আলীর ছেলে মোঃ নূরুল হক হাওলাদার (৪০)। একই জেলার মৃত শমশের আলী সরদারের ছেলে মোঃ হারুন সরদার (৪৪)। একই জেলার আওড়াবুনিয়া গ্রামের মৃত সুলতান আহম্মেদের ছেলে মাইনুল ইসলাম (৪০)।
রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি’র ওসি প্রানবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানান, পুলিশ সুপার রাজবাড়ী এম এম শাকিলুজ্জামান এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় ২০শে মে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ২০২০ (২য় পর্যায়) পরীক্ষা চলাকালীন গোপন সংবাদের ভিত্তিতেরাজবাড়ীর পৌরসভার ভবানীপুর, মুরগির ফার্ম বোম পুলিশের গলিতে মিজানুর রহমান(৪৩), পিতা-মৃত আবুল খায়ের এর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের কাজে নিয়োজিত বিশেষ ধরনের ডিভাইস (মাষ্টার কার্ড সদৃশ্য সিম সংযুক্ত ডিভাইস এবং ছোট এয়ার ফোন) দুইটি,২০ টি বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল ফোন উদ্ধার এবং ১৩ জন কে আটক করা হয়। আটক কৃতদের মধ্যে একজন মহিলা পরীক্ষার্থী সহ সরকারি প্রাইমারি স্কুলের ৫ জন স্কুল শিক্ষক রয়েছে। উদ্ধার কৃত আলামত সমূহ উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর উপস্থিতিতে জব্দ করা হয়েছে। বর্নিত ঘটনার মূল হোতা মোঃ মাঈনুল ইসলাম হাওলাদার (৪২) পিতা মোঃ সুলতান আহমেদ হাওলাদার, সাং আওরা বুনিয়া, থানা কাঁঠালিয়া, ঝালকাঠি, প্রশিক্ষক URC (উপজেলা রিসোর্স সেন্টার, মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী) কে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। তিনি তার সোনালী ব্যাংকে একাউন্টের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেছে বলে জানায়। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। ঘটনার সাথে আরো জড়িত সকলকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।
এ সময় তাদের দখলে থাকা ২০(বিশ)টি মোবাইল ফোন, মাষ্টার কার্ড সাদৃশ্য ডিভাইস (সীম সহ) দুইটি, ইয়ার ফোন দুইটি ।আড়ি পাতা ডিভাইসের ছোট ব্যাটারি ৬ টি, পুরাতন মডেম ১ টি, নগদ অর্থ দশ হাজার টাকা, হাতে লিখা পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর (সাদা কাগজে), পরীক্ষার্থীর প্রবেশ পত্রের ফটোকপি, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ফটোকপি, বিভিন্ন গাইড বই, সোনালী ব্যাংকের ভিসা ডেবিট কার্ড ১ টি এবং ইউনিয়ন ব্যাংক লি. এর ডেবিট কার্ড ১ টি, স্যামসাং পাওয়ার ব্যাংক ২ টি উদ্ধার করা হয়।