দেশ উন্নত হচ্ছে এতে সন্দেহ নেই। মানুষের জীবনমান এগিয়ে যাচ্ছে উন্নত পথের দিকে। সরকার মানুষের চলাচল সুগম করতে পুরাতন সড়ক উন্নয়ন, নতুন সড়ক সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করেছে। আর এমনি সময়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ গড়া রাস্তা ভেঙ্গে দিয়ে মানুষ চলাচল ব্যাহত করেছে বলে অভিযোগ করেছে কমপক্ষে ১৫টি গ্রামের মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বাড়াদী গ্রামের বহরপুর রেলওয়ে ফুটবল মাঠ সংলগ্ন কার্পেটিং সড়কটি রেলওয়ে মেরামতের সময় ভেঙ্গে ফেলে। কাজ শেষে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করে দিতে অনুরোধ করলে তাতে কোনো ফল হয়নি বলে জানায় অনেকেই। রেলওয়ের কাজের শেষে যে অবস্থা করেছে এই পথ দিয়ে একটি বাইসাইকেল নিয়েও যাওয়ার উপায় নেই। অথচ এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন বাড়াদী, গাংচর পদমদী, ডাঙ্গাপাড়া পদমদী, দোপপাড়া পদমদী, ঠাকুরপাড়া পদমদী, বলদাখাল পদমদী, দক্ষিণবাড়ী পদমদী, বাগমাড়া পদমদী, ঘোড়ামারা, পাকুরিয়া, বিল পাকুরিয়া, বেরুলী, কুরশী, বকশিয়াবাড়ী, ত্রিলোচনপুর, দেওয়ালী, হিজলী, বথমদীয়া, নবাববাড়ী, নিকারীপাড়া, চর-দক্ষিণবাড়ীসহ অনেকগুলো গ্রামের মানুষ চলাচল করে এই সড়কটি দিয়ে। কালজ্বয়ী উপন্যাস বিষাদ সিন্ধু রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কমপ্লেক্স নবাববাড়ীতে অবস্থিত। এই কমপ্লেক্সে বাংলা একাডেমীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যাক্তিরা যখন তখন আসেন এখানে। আর সেখানে যাওয়ার একমাত্র যোগাযোগের পথ হলো এই সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ গ্রামের কমলমতি শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে ভ্যানে অথবা ইজিবাইক ও বাইসাইকেলে করে। এভাবে ভাঙ্গার কারণে শিক্ষার্থীরা অনেক সমস্যায় পড়ছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও সড়কটি মেরামত করে দেওয়া উচিৎ।
এই সড়কটি সম্পর্কে সরেজমিনে গেলে নবাবপুর ইউনিয়নের গাংচর পদমদী, নবাববাড়ী পদমদী, দক্ষিণবাড়ী, কুরশী, আনন্দবাজার, বলদাখাল, ঘোড়ামারা ও পাকুরিয়া গ্রামের খেটে খাওয়া কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, আমরা অত্র অঞ্চলের সাধারণ কৃষক। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজেমাঠে ফসল ফলাই। তা রাজবাড়ীর ঐতিহ্যবাহী হাট বহরপুরে এনে বিক্রি করি। আর সেই পয়সায় চলে আমাদের সংসার, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ নানাবিধ কাজকর্ম। ফসলাদী বাড়ী থেকে ভ্যানে করে বাজারে আনতাম এই সড়ক দিয়ে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সড়কটি ভেঙ্গে দেওয়ার আগে একমণ ফসল হাটে আনতে খরচ হতো ২০-২৫ টাকা। আর আজ খরচ হয় ৫০-৬০ টাকা। অনেক ঘোরার কারণে আবার ভ্যান চালকরা আসতেই চায় না। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট জোড় দাবী যেকোনো উপায়ে এই সড়কটি পূণরায় মেরামত করে দিয়ে চালু করার আহ্বান করছি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই রেল লাইন দিয়ে যেসব ট্রেন চলাচল করবে তার গতি হবে কম করে ১২০ কিলোমিটার গতিতে। এরজন্য অনেক সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হবে। শুধুমাত্র নির্ধারিত কিছু সড়ক ছাড়া। রেলওয়ের জনবল নগন্য হওয়ায় অনেক স্থানে গেইটের ব্যবস্থা নেই। যখন তখন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। আর দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা পেতেই অপ্রয়োজনীয় ছোট খাটো সড়ক বন্ধের প্রকৃয়া গ্রহণ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।