স্টাফ রিপোর্টারঃ ‘ইসলামের আলো আর ক্রীড়ার প্রাণ এক সুতোয় গেঁথে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির ঐতিহ্যবাহী বহরপুর রেলওয়ে ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত হলো এক নজিরবিহীন ও ব্যতিক্রমধর্মী ফুটবল টুর্ণামেন্ট।খেলার মাঠে আসরের নামাজ আদায় করে খেলাশুরু হয়। যেখানে পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও মাওলানারা ফুটবল মাঠে নেমে দেখালেন—ইসলামী অনুশাসনের সীমারেখায় থেকেও যে আনন্দ, খেলাধুলা ও শারীরিক সুস্থতা অর্জন সম্ভব, তা কেবল কথার নয়, বাস্তবতারই প্রকাশ।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বাড়াদী রেলওয়ে মাঠে অনুষ্ঠিত এই আয়োজন ছিল শুধু একটি ফুটবল ম্যাচ নয়, বরং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও খেলাধুলার অপূর্ব মেলবন্ধনের এক অনন্য উদাহরণ। আয়োজনের ব্যানারে ছিল বাড়াদী, নারায়ণপুর, বহরপুর, শেকাড়া (বিএনবিএস) স্পোর্টিং ক্লাব।
খেলায় অংশ নেয় দুই প্রতিবেশী জেলার হাফেজ-মাওলানা ফুটবল দল—রাজবাড়ী জেলা হাফেজ মাওলানা একাদশ এবং ফরিদপুর জেলা হাফেজ মাওলানা একাদশ। পুরো মাঠজুড়ে যেন ছড়িয়ে পড়েছিল ইসলামের শালীনতা আর ফুটবলের উত্তাপ। পাজামা-ট্রাউজার পরিহিত খেলোয়াড়রা দক্ষতায়, শৃঙ্খলায় এবং কৌশলে মাঠ মাতিয়ে তোলেন।
আয়োজকরা জানান, কোরআনের আলো বুকে ধারণ করে সমাজের মানুষকেও একটু বিনোদনের স্বাদ দিতে এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন। তারা বলেন, “ইসলাম কখনও সুস্থ বিনোদনের বিরুদ্ধে নয়। শরিয়তের সীমারেখা মেনে শরীরচর্চা ও খেলাধুলা করা সম্পূর্ণ বৈধ এবং সমাজে এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।”
ফরিদপুর জেলা হাফেজ মাওলানা একাদশের হয়ে মাঠ মাতান:মোঃ ফরহাদ হোসেন, মোঃ মুঈনদীন, মাসুদুর রহমান, অধিনায়ক সেনিম হুসাইন, আশিক রহমান, আশরাল, হুমায়ূন কবির, মতিয়ার রহমান, মোঃ সাহীম হোসেন, আনিছুর রহমান, মিজানুর রহমান, রায়হান হোসেন, মোঃ মুহসিন ও আবু জাফর।
রাজবাড়ী জেলা হাফেজ মাওলানা একাদশের পক্ষে ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখান: অধিনায়ক হাফেজ মাওলানা মুসা, মাওলানা জাহিদ হাসান, মাওলানা মনির হোসেন, হাফেজ আবুল বাসার, হাফেজ সাব্বির হোসেন, মাওলানা নূর ইসলাম, মাওলানা মনিরুল ইসলাম, হাফেজ মিকাইল ইসলাম, মাওলানা আমিন, হাফেজ আক্তার হোসেন ও হাফেজ সোহেল রানা।
টানটান উত্তেজনার মধ্যে অনুষ্ঠিত খেলায় শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নেয় ফরিদপুর জেলা হাফেজ মাওলানা ফুটবল একাদশ। মাঠের চারপাশে দর্শকদের উচ্ছ্বাস, হাততালি আর স্লোগানে মুখরিত হয় পুরো এলাকা।
খেলার রেফারির দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের অনুমোদিত রেফারি মোঃ নুরুল ইসলাম নুরু। তাকে সহযোগিতা করেন আবু বক্কার সিদ্দিক ও মোঃ নাজমুল হাসান।
খেলাকে ঘিরে বহরপুর রেলওয়ে ফুটবল মাঠ এলাকায় যেন উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। ধর্মীয় অনুশাসন ও ক্রীড়ার সৌন্দর্য একসঙ্গে মিলেমিশে এক বিরল দৃশ্যের জন্ম দেয় এই আয়োজন। আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতেও এমন ইতিবাচক ও ব্যতিক্রমী আয়োজন অব্যাহত থাকবে।”