- গত কয়েকদিন ধরে সারাদেশেই দরজায় কড়া নাড়ছে শীত।কাঁধে বাশের লেপ তৈরির জিনিস নিয়ে ধুনটদের হাকঁ ঢাক আর চোখে পড়েনা।
পুরনো লেপ তোষক নতুন লেপ কিংবা নতুন লেপ তোষক তৈরি করতে কারিগররা গ্রামে গ্রামে ঘুরতো লেপ তৈরি করতো। গ্রামের চির চেনা দূশ্য না থাকলেও শীতের আগমনীর সাথে বিভিন্ন লেপ-তোষক কারিগরদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে।
রাজবাড়ী জেলাটি চারপাশ নদী বেষ্ঠিত হওয়ায় এবং কল কারখানা কম থাকায় ঘন কুয়াশা সহ শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। আর শীতের শুরুতেই কদর বাড়ছে লেপ তোষকের। ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন কারিগররা। শীত মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি হিসাবে লেপ-তোষক বানানোর ভিড় পরেছে দোকান গুলোতে। বছরে এসময় ক্রেতাদের ভিড় বাড়ে। সারা বছর অলস সময় পার করলেও শীতের এ সময় টা তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিরামবিহীন ভাবে চলে লেপ তোষক তৈরির কাজ। শীতের চার মাস ব্যস্ত সময় পার করেন তারা।
দীর্ঘ ষাট বছর ধরে লেপ তোষক বানানোর কাজে নিয়োজিত বিনোদপুরের বাসিন্দা মোঃ আসাদ সর্দার বলেন, আমরা লেপ তোষক তৈরির কারিগররা অনেক ব্যস্ত সময় পার করছি। তবে চলতি মৌসুমে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় স্বাভাবিক ভাবেই লেপ-তোষক তৈরিতে খরচ বেড়ে গেছে। আর একটি লেপ-তোষক তৈরি করে তাদের মজুরী দেয়া হয় তা অতি সামান্য। সব কিছুর দাম বাড়লেও আমাদের দাম বাড়েনি। কাপড়ের মান বুঝেই লেপ-তোষকের দাম নির্ধারণ করা হয়। ৪-৫ হাত লেপের দাম পড়ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। আর তোষক তৈরিতে দাম পড়ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা।তবে এবারে প্রতিগজ কাপড়ে ১০ থেকে পনের টাকা দাম বেড়েছে।তুলায় বেড়েছে ২০ থেকে পচিঁশ টাকা।গার্মেন্টের সাদা ঝুট,ফোমের কাটা অংশ সব কিছুই কিনতে হচ্ছে বেশী দাম দিয়ে।দেশে শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষক তৈরি ও বিক্রি আরও বাড়বে এমনটিই প্রত্যাশা করছেন তিনি ।
শহরের পান্না চত্বরের লেপ দোকানদার আঃ খালেক জানান, আধুনিক যন্ত্রে উৎপাদিত কম্বল মেট্রেস সহজে পাওয়ার কারনে লেপের চাহিদা কমে গেছে।তিনি বলেন, আমরা লেপ তোষক তৈরির কারিগররা অনেক ব্যস্ত সময় পার করছি। তবে চলতি মৌসুমে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় স্বাভাবিক ভাবেই লেপ-তোষক তৈরিতে খরচ বেড়ে গেছে। আর একটি লেপ-তোষক বিক্রি করে তাদের ২’শ থেকে ৩’শ টাকা লাভ হয়। জাজিম, বালিশ, লেপ, তোষক তৈরিতে লাভ কিছুটা কম হলেও কাজে ব্যস্ত থাকায় তারা এখন খুশি। কাপড়ের মান বুঝেই লেপ-তোষকের দাম নির্ধারণ করা হয়। ৪-৫ হাত লেপের দাম পড়ছে ১০০০ থেকে ৮০০ টাকা।
লেপ কিনতে আসা সুর্যনগরের আকলিমা জানান, যতই আধুনিক গরম নিবারনের কাপড় হোক লেপের মত আরাম দায়ক আর কিছুতেই হয় না।তাছাড়া নতুন জামাই কে লেপ তোষক বালিশ উপহার হিসাবে দেয়া বাঙ্গালীর যে ঐতিহ্য সম্ভবত আর কোন দেশে নাই।এটা বাঙ্গালীর গ্রামীন ঐতিহ্য ।