রাজবাড়ী প্রতিনিধি: আত্নীয় স্বজন অ্যামেরিকায় থাকেন এমন কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মোঃ মনিরুজ্জামান রুবেল (৩৪) নামে এক প্রতারক । রাজবাড়ী সদর থানায় এই প্রতারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানীবহ ইউনিয়নের মহিষবাথান এলাকার মৃত আবুল হোসেন খানের ছেলে মোঃ আলী হোসেন খান। পরে বানীবহের বার্থা এলাকার মর্জিনার বাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয় এই প্রতারককে । গ্রেফতার মোঃ মনিরুজ্জামান রুবেল ঢাকার মীরপুরের রূপনগর এলাকার মোঃ বাহেজ উদ্দিনের ছেলে ।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানীবহ ইউনিয়নের মৃত মজিদ শেখের মেয়ে মোছাঃ রেখার সাথে তিন মাস যাবত বিয়ে হয় রুবেলের। বৈধ ভিসায় ভালো বেতনে অ্যামেরিকায় পাঠানোর কথা বলে গ্রামের লোকজনকে আশ্বস্ত করে রুবেল। পরে মামলার বাদী বানীবহ এলাকার মোঃ আলী হোসেন খান, লক্ষী নারায়নপুরের রোহিনীকান্ত বিশ্বাসের ছেলে রঘুনাথ বিশ্বাস, ও সৈয়দ আলী শেখের ছেলে মোঃ সাখাওয়াত ,ফজের আলী শেখের ছেলে মোঃ আবুল হোসেন প্রতিজনে ২০ লক্ষ টাকা করে অ্যামেরিকায় যাবার চুক্তিবদ্ধ হন। পরে ভিসা প্রোসেসিং বাবদ জন প্রতি তিন লক্ষ টাকা অগ্রিম দিতে হবে দাবী করে রুবেল।
পরে তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে মোঃ আবুল হোসেন তার ভাই আমজাদের বাড়ীতে ভাইকে স্বাক্ষী রেখে রুবেলের হাতে ২০২৩ সালের ২১শে অক্টোবর বিকেল সারে ৪টার সময় ২লক্ষ টাকা প্রদান করেন একই সময় মামলার বাদী মোঃ আলী হোসেন খানও ২লক্ষ টাকা প্রদান করেন। এরপর ৫ই নভেম্বর বিকেল ৫টার সময় রঘুনাথ বিশ্বাস, মোঃ সাখাওয়াত ২লক্ষ টাকা করে ৪ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। চারজনের নিকট থেকে মোট ৮ লক্ষ টাকা নিয়ে মামলার বিবাদী রুবেল বাকি টাকা অ্যামেরিকা পাঠানোর পর পর্যায়ক্রমে নিবে এবং ১মাসের মধ্যে কাগজপত্র করে দিবে বলে জানায়। কিন্তু ১ মাস পার হবার পর বিবাদী রুবেল আজকাল করে ঘুরাতে থাকে । এরপর ১০ই ডিসেম্বর ঢাকা থেকে মোঃ সাদ্দাম হোসেন ও মোঃ নাজমুল হোসেন নামে বিবাদী রুবেলের খোজ করতে রাজবাড়ীর বানীবহ আসলে জানাযায় বিবাদী রুবেল ঢাকার ভাটরা থানাধীন বসুন্ধারা এলাকার এল ব্লক,৯৬২ নং জনৈক হান্নান এর বাড়ীতে ভাড়া থাকাকালীন সময় অ্যামেরিকার পাঠানোর কথা বলে দুই জনের কাছ থেকে ৩লক্ষ টাকা করে মোট ৬ লক্ষ টাকা প্রতারণা করে পালিয়ে এসেছেন। এরপর প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে ১৪ই ডিসেম্বর রাত ৯টার সময় আলী হোসেন খান, আমজাদ হোসেন , মোঃ সাখাওয়াত হোসেন ,রঘুনাথ বিশ্বাস বানিবহের বার্থা এলাকার মোঃ হাসানের স্ত্রী মর্জিনার বাড়ীতে গিয়ে রুবেলের নিকট টাকা ফেরত চাইলে বিবাদী অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে ও ভয়ভীতি দেখায় । বিবাদী রুবেল একজন সঙ্ঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য বুঝতে পেরে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয় । রাজবাড়ী সদর থানার মামলা নং- ৩১ তাং- ১৫ই ডিসেম্বর ২০২৩ ধারা ৪০৬/৪২০/৫০৬ পেনাল কোড।
পরে রাজবাড়ী সদর থানার এস আই মোঃ আবুল হোসেন গ্রেফতার করেন মনিরুজ্জামান রুবেল কে । এরপর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের কাছে ৫দিনের আবেদন করেন এই আই আবুল হোসেন। আদালত ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলায় প্রধান আসামীকে গ্রেফতারের পরের সপ্তাহে ২২শে ডিসেম্বর (শুক্রবার) বানিবহ বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয় ঘটনার স্বাক্ষী ফজের আলীর ছেলে আমজাদকে । এ ঘটনায় এলাকায় গুনজন শুরু হলে এ বিষয়ে প্রতিবেদক কথা বলেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ ইফতেখারুজ্জামানের সাথে। এ বিষয়ে তিনি জানান মামলার তদন্ত স্বার্থে জিজ্ঞসাবাদের জন্য আমজাদকে আনা হয়েছে। পরদিন এস আই আবুল হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান আমজাদকে একই মামলার তদন্তে প্রাপ্ত আসামী হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের কাছে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এস আই আবুল হোসেন আসামী কোর্টে প্রেরণ নথিতে উল্লেখ করেন , তদন্তে প্রাপ্ত আসামী আমজাদ হোসেন গ্রেফতার মনিরুজ্জামান রুবেলকে রাজবাড়ীতে আনেন, প্রতিবেশী রেখার সাথে রুবেলের বিয়ে দেন এবং তারা যোগসাজশে অ্যামেরিকা দেশে নেওয়ার কথা বলে টাকা আত্নসাত করেছে । কিন্তু অনুসন্ধানে জানাগেছে , মূল ঘটনার ভিন্ন চিত্র । রেখার ভাই হারুনের পাশে ঢাকায় কাজ করতেন রুবেল , হারুনের সূত্র ধরেই মোবাইলে ফেসবুকে উভয়ের সম্পর্ক হয়। সম্পর্কের তিন মাস পর রুবেল রাজবাড়ীর বানিবহতে আসেন। রেখার সাথে রুবেলের সম্পর্কের খবর জানতেন আমজাদের স্ত্রী , রেখার প্রতিবেশী বোন নাসিমা আক্তার মর্জিনা । রুবেল আসার পর তাদের বিয়ের আয়োজন করা হলে এলাকাবাসীর প্রতিবেশীর একটা দায়ীত্ব থাকে এমন যায়গা থেকে কয়েকজন উপস্থিত থেকে বিয়ে হয় রুবেল ও রেখার । এ বিয়েতে উকিল বাবা মা হন আমজাদ ও তার স্ত্রী বিলকিস বেগম। তাদের বাড়ী খুব পাশাপাশি । প্রতিবেশী নাসিমা আক্তার মর্জিনা ধর্মের মেয়ে বানান বিলকিস বেগমকে ,সেই সুবাধে হাসানের স্ত্রী মর্জিনা রেখা আর রুবেলের বিয়ের রাতে মর্জিনার অনুরোধে বিয়েতে উকিল আমজাদ ও তার স্ত্রী বিলকিস । রেখার বিয়ে মেনে নিতে পারেন নি রেখার ভাই । পরে কয়েকদিন উকিল মা-বাবা’ হিসেবে আমজাদের বাড়ীতে উঠেন রেখা-আর রুবেল । ৩-৪দিন পর ঢাকায় চলেযায় রুবেল সাপ্তাহ খানের পরে আসেন। পরে বানিবহতে একটা ভাড়া বাসা নিবেন বলে আমজাদ কে জানান রুবেল। আমজাদ বলেন, আমি রাতে ঘুমিয়েছিলাম আমাকে ডেকে উকিল বাবা বানিয়েছে মাত্র , প্রতিবেশী মর্জিনার অনুরোধেই বাধ্য হয়ে উকিল হতে হয়। আমজাদের স্ত্রী বিলকিস জানান, প্রতিবেশী মর্জিনা আমাকে তার মেয়ে বানিয়েছে, যদিও আমি তার বয়েসে বড়। কিন্ত তার অনুরোধে সেই রাতে উকিল হতে হয়। এরপর মর্জিনার বাড়ীতে যাওয়া-আসা করে তারা সবাই। সেখানেও থাকে এখানেও থাকে। আমার ছেলেকে অ্যামেরিকা নেবার কথা বলেও টাকা নিয়েছে , আমার দেবরের থেকেও অ্যামেরিকা পাঠানোর কথা বলে টাকা নিয়েছে ,পরে জানলাম এলাকাতেও কয়েকজনের কাছে থেকে টাকা নিয়েছে। তাদেরকে আর অ্যামেরিকার দেশে নেয় না পরে তারা মামলা করেছে মর্জিনার বাড়ী থেকে পুলিশ রুবেলকে গ্রেফতার করে । এরপর আমার স্বামীকেও গ্রফতার করে । আমার স্বামীকে গ্রেফতারের বিষয়ে মর্জিনার হাত রয়েছে । মর্জিনা মনে করেছিলো আমরা রুবেলকে পুলিশে দিয়েছি। কিন্তু মোঃ আলী হোসেন খান মামলা করলে রুবেলকে পুলিশে ধরে নেয়। সেই থেকে মর্জিনা আমাকে বিভিন্ন রকম গালিগালাজ করে। আমাকে মা ডেকে বুকের ভেতরে ছুড়ি মেরেছে এই প্রতারক । এর কঠিন শাস্তি চাই।
বিলকিস বেগম বলেন, রাজবাড়ী থানার এস আই আবুল হোসেন মর্জিনার সাথে কোন আতাত করেছে , নইলে রুবেল কে গ্রেফতারের পর আমার স্বামীকেই কেন গ্রেফতার করলো ,মর্জিনার স্বামীকেও গ্রেফতার করতে পারতো । আবার রুবেল আমাদের কাছে পরিচয় দিয়েছে সে সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার, তার বিভিন্ন ব্যাবসার কাগজপত্র একাধিক পরিচয় , দিয়ে এলাকাবাসীর থেকে টাকা নিয়েছে । এইসকল কোন তথ্য এস আই আবুল আদালতে উল্লেখ করেন নাই । আমরা নাকি রুবেলের লাখ লাখ টাকা নিয়েছি আর রুবেলের গুরুত্বপুর্ন কাগজ নাকি আটকে রেখেছি , কিন্তু তিনি আমাদের ঘরের সবকিছু ভিডিও করে নিয়ে গেছেন ,ঘরে কিছু তো পান নাই ।
এ বিষয়ে জানতে মর্জিনার বাড়ীতে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজী হন না । তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন আমজাদ লোকজন নিয়ে আমার বাড়ীতে হামলা চালিয়েছে আর বাড়ীর গেইটের টিনের বেড়া কেটে ফেলেছে। পুলিশকে আমি জানিয়েছি।
মামলার বাদী মোঃ আলী হোসেন খান বলেন , আমরা জানি মর্জিনার বাড়ীতে থাকতো রুবেল। এলাকায় মর্জিনা রুবেলকে ভাইয়ের পরিচয় দিত । মর্জিনা অনেক ধনসম্পদের মালিক আর তার ভাই অ্যামেরিকা দেশে পাঠানোর কথা বলে টাকা নিচ্ছে এ জন্য আমরা আশ্বস্ত ছিলাম। পরে জানলাম আমাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। মামলা করেছি পরে রুবেলকে মর্জিনার বাড়ী থেকে পুলিশ ধরে নেয়।
রুবেলের স্ত্রী রেখা খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা প্রেম করেছি বিয়ে করেছি। এটা আমাদের অধিকার । এখানে আমাদের নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন জনে বিভিন্ন কথা বলছে । আমি তাদের কারো কথায় কিছু মনে করিনা ,আমরা সুখে আছি। তিনি জানান, ভাই হারুনের কাছাকাছি রুবেল কাজ করতো, সেখান থেকে রুবেলের সাথেই আমার ভাইয়ের পরিচয় হয়। আমার ভাই ই রুবেলের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে রুবেলের সাথে কথা বলতে না করে, কিন্তু মন না মানায় আমি কথা বলতে থাকি এবং পরে বিয়ে করি।’
গ্রেফতারের পর জামিনে এসে একের পর এক করে মোট ৫টি মামলা আদালতে দিয়েছেন উকিল বাবা -মা আমজাদ আর বিলকিস সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে । রাজবাড়ী বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ৫৩২৪ নাম্বার মামলা থেকে ১২ই ফেব্রুয়ারি/২৪ ৪জন আসামীর মধ্যে বিলকিস বেগম, মাজেদা বেগম অব্যহতি পেয়েছেন। সি আর ৭৪/২৪ নাম্বার মামলা সিআইডি’র তদন্তানাধীন।
আমজাদ -বিলকিস স্বামী স্ত্রী জানান, জীবনে কোর্টের বারান্দায় আসিনাই, আজকে উকিল মা বাবা হয়ে কোর্টের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে আমাদের । সাংসারিক কাজ কর্ম, রান্না- বান্না ফেলে অসুস্থ্য শরীর নিয়ে আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে । আমরা এ মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি চাই ,আর এমন প্রতারকের সুষ্ঠ বিচার চাই।
১২ই ফেব্রুয়ারি (সোমবার) কোর্ট চত্তর এলাকায় কথা হয় মনিরুজ্জামান রুবেলের সাথে। তিনি বলেন, উকিল মাম বাবা আমার কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়েছে আর আমার প্রয়োজনী কাগজপত্র আটক রেখেছে তাদের বাড়ীতে । আমি তাদের নামে আদালতে মামলা করেছি। আজকে একটা মামলায় কোর্টে এসেছিলাম।
প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে মনিরুজ্জামান রুবেল বলেন, আমার বাড়ী ঢাকা মীরপুরে । আরেক বাড়ী মানিকগঞ্জ, আরেক বাড়ী গোপালগঞ্জ । আমার বাবা বিয়ে করেছিলেন ছোট কালে আমার মা মারা যায় পরে আমাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যায়। আমার মাকে দেখিনাই। কি কাজ করেন -তিনি জানান, সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার ,কোথায় আছেন -তিনি জানান আর্টেলারি সেন্টার এন্ড স্কুল হালি চট্রগ্রামে,এখন অবসর নিয়েছি। এখন কি কাজ করেন – বিভিন্ন ইমপোর্টের কাজ করছি । বিভিন্ন প্রশ্নে এলোমেলো উত্তর পেয়ে সন্দেহ আরোও বেড়ে যায়।
একাধিক মামলায় জর্জড়িত পরিবারের কান্নায় শুরু হয় অনুসন্ধান । মামলায় উল্লেখ করা ঠিকানা মনিরুজ্জামান রুবেল পিতা -বাহেজ উদ্দিন, রোকেয়া বেগম, সাং-রুপনগর (টিন শেড) হোল্ডিং নং-৫৬১/৬২ রোড নং-১৫ আর বর্তমান ঠিকানা বানিবহ ।
যাত্রা শুরু হয় মামলার বাদী মনিরুজ্জামান রুবেলের ঠিকানা ঢাকার উদ্দশ্যে। খোঁজাখুঁজির পর পাওয়া যায় বাড়ী ঘর ঠিকানা । কিন্তু কোন কিছুই না মনিরুজ্জামান রুবেলের ।
আমাদের উপস্থিতি দেখে এগিয়ে আসেন অনেক মানুষ। স্থানীয় রিপন মিয়া, দীর্ঘ ২৮ বছর থাকেন হোল্ডিং নং-৫৬১/৬২ এর সামনের বিল্ডিং এ । তিনি জানান, বাহেজ উদ্দিন আর রোকেয়া বেগমের একটি-ই সন্তান । নাম রাজু। স্বপরিবারে তারা অ্যামেরিকা থাকেন। বাহেজ উদ্দিন খুবই নামীদামী লোক ছিলেন। বাংলাদেশে থাকার সময় একদিন গুরুত্বপুর্ন কাজে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গিয়ে বাড়ীতে আসেন রুবেল নামে একটি ছেলে সাথে নিয়ে আসেন।
তিনি সবাইকে বলেন, ছেলেটার মা-বাবা নাই ,আমাকে নাকি তার বাবার মত লাগে,কোথাও যাবার যায়গা নাই ,আমার এখানে থাকবে আজ থেকে। সেই থেকে এ বাড়ীতে থাকতে শুরু করে, এরমধ্যে বাহেজ উদ্দিনের ছেলে পরিচয় দেওয়া শুরু করে, বাহেজ উদ্দিনের একটাই ছেলে নাম রাজু আমাদের সাথে একসাথে পড়েছি বড় হয়েছি। হটাত অ্যামেরিকা থেকে রাজু আমাকে ফোন করে বলে বাড়ীতে কি নাকি শুরু হইছে ,কারে এনে নাকি আব্বা ছেলে পরিচয় দিচ্ছে ? পরে তাকে সত্যি কথাটাই জানালাম। পরে আমার বন্ধু রাজু তার বাবার সাথে অনেক রাগারাগি করে। মাস তিনেকের মধ্যেই রুবেল তার আইডি কার্ডে বাবার নামের যায়গায় বাহেজ উদ্দিন আর মায়ের নামের যায়গায় রোকেয়া বেগম বানায়ে ফেলে কিভাবে জানিনা। এ আইডি কার্ড ব্যাবহার করে বিভিন্ন রকম কাজ করতে শুরু করে পরে রাজুর মা রোকেয়া বেগম নির্বাচন অফিসে গিয়ে অভিযোগ দিয়ে আসে। রিপন জানান, এ এলাকায় রুবেলের আসার সুজোগ নাই। এখানে এক মহিলা নেত্রীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে অনেক টাকা নিয়ে গেছে ,আবার অ্যামেরিকা পাঠানোর কথা বলে টাকা নিয়েছে । রাজুর মা রোকেয়া বেগমের নামে কয়েক লক্ষ টাকার ঝামেলা রেখে আর বিভিন্ন যায়গায় অভিযোগ দিয়ে পালাইছে ।
‘
স্থানীয় ঠিকাদার শাহ আলমের স্ত্রী বিউটি আলম জানান, রুবেলকে এখানে সবাই চিনে। আমার বাড়ীতে ৩-৪বার আসছে দাওয়াত ছাড়াই। প্রথমে মনে করছিলাম ভালোই । সে নিজেকে পরিচয় দিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চাকরি করে। পুলিশের ডি আইজি হাবি আমাদের একপ্রকার আত্নীয় ছিলো , সে কোন ভাবে শুনে আমাকে ধরে তার সাথে পরিচয় করায় দিতে । আমি দেই না ,আমাকে অনেকবার অনুরোধ করে, পরে আমি বলি আপনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চাকরি করেন তাহলে তো আপনার তার সাথে আমাদের চেয়ে ভালো সম্পর্ক থাকার কথা । পরে আর কথা বলে নাই। বাহেজ এখানে বাহেজ উদ্দিন এর বাড়ী ৫৬২ নাম্বার আর ৫৬১ নাম্বার বাড়ী মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল খালেক তালুকদার এই দুইজনের বাড়ীর মধ্যে বড় একটা গণ্ডগোল পাকায় দিছে । মানুষ আসে টাকার জন্য । রুবেল একটা বড় ধরনের প্রতারক । ‘
মনিরুজ্জামান রুবেলের ব্যাবহার করা আইডি কার্ড যেহেতু তার মা রোকেয়া বেগম নির্বাচন অফিসে গিয়ে আপত্তি দিয়ে এসেছে। আমরা খুজতে থাকি সে পরিচয় পত্র। অবশেষে
পাওয়া যায় । প্রাপ্ত আইডি নাম্বার – ১৯৮৬২৬৬৯৬৪০৬০০০৪১২ আর জন্ম তারিখ ১জানুয়ারি ১৯৮৬ এই নাম্বার দিয়ে খোঁজ নেওয়া হয় নির্বাচন কার্যালয়ে । একাধিকবার খোঁজা হলেও দেখা যায় নো রেজাল্ট ফাউন্ড। মানে কোন তথ্য পাওয়া যায় নি ।
এ বিষয়ে মনিরুজ্জামান রুবেলের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের । রুবেল জানান, রোকেয়া বেগম আমার সৎ মা , মায়ের সাথে টাকা পয়সা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে ,সে আমার আইডি কার্ড বন্ধ করে দিছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুজ্জামান রুবেল বলেন, হুমায়ুন কবীর আমার ডাক নাম ,আমার আসল নাম মনিরুজ্জামান রুবেল। সেনাবিহিনীতে হুমায়ুন কবীর নামেই চাকুরি করি । পরে ডাকনাম দিয়ে আইডি কার্ড পরিবর্তনের চেষ্টা করছি ।’
অনুসন্ধান পর্ব-০১