মোঃ আমিরুল হক : রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের দিয়াড়া গ্রামে দারুচ্ছুন্নাহ আল্ জামিয়া মাদ্রাসা কমিটির আয়োজনে মাদ্রাসার উদ্বোধন, আলোচনা সভা ও ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ১১ মে ) সন্ধ্যায় জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ১নং ইসলামপুর ইউনিয়নের দিয়াড়া গ্রামে সদ্য নির্মাণাধীন দিয়াড়া দারুচ্ছুন্নাহ্ আল্ জামেয়া মাদ্রাসা মাঠে এই প্রতিষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং বর্তমান বিশ্ব ব্যাংকের কনসালটেন্ট ডঃ শেখ মুহঃ রেজাউল ইসলাম। এলাকাবাসী দিয়াড়া দারুচ্ছুন্নাহ্ আল্ জামেয়া মাদ্রাসা নামে প্রতিষ্ঠান গড়ার উদ্দ্যোগ নেয়। তার ফলশ্রুতিতে উদ্বোধন করা হলো মাদ্রাসাটি।
উদ্বোধনকালে আলোচনা সভায় মোঃ আতাউর রহমান মুন্নু’র সঞ্চালনায় ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহমদ আলী মাস্টারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়েফর সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং বিশ্ব ব্যাংকের কনসালটেন্ট ডঃ শেখ মুহঃ রেজাউল ইসলাম, বিশেষ অতিথি বিশিষ্ট শিল্পপতি নজির আহমেদ, ঢাকা আইন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম, শামছুল আহমেদ (সাচ্চু) প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডঃ শেখ মুহঃ রেজাউল ইসলাম বলেন, “এ অঞ্চলে তমন প্রতিষ্ঠিত কোন হাফেজি মাদ্রসা নাই। এলাকার সন্তানদেরকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য দারুচ্ছুন্নাহ্ মাদ্রাসার বিশেষ প্রয়োজন ছিলো তা আজ পূরণ হলো বলে আশা করছি। ব্যাক্তি, সমাজ, দেশকে উন্নয়ন করতে হলে দ্বীনি শিক্ষার পরিবেশ তৈরী করতে হবে। একমাত্র দ্বীনি শিক্ষাই পারে সমাজ ও ব্যাক্তিকে অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখাতে। আর সেই শিক্ষা হতে হবে আল্লাহর উদ্দ্যেশে নবীর আদর্শগত শিক্ষা। যার মধ্যে মানবতার মুক্তির সকল নিয়ম-কানুন রয়েছে। মানব জাতির মেধা, মননশীলতা, বিবেক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের ক্ষেত্রে বিশ্বনবী রাসুলুল্লাহ (সাঃ) অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষায় ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতাও দিয়েছেন। কেননা, তিনি মনে করতেন, একটি শিশুকে শিক্ষাবঞ্চিত রেখে যেমন আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়, তেমনি শিক্ষিত জাতি গঠনে এবং পারিবারিক শিক্ষার ভিত্তি মজবুত করার জন্য সকল মানুষের শিক্ষা কার্যক্রমে আত্মনিয়োগ করা অনস্বীকার্য। যেমনভাবে উম্মুল মুমিনিন কাছে আগত সকল মানুষদের ধর্মীয়, ব্যক্তিগত, পারিবারিক প্রভৃতি বিষয়ে নৈতিক শিক্ষাদান করতেন। যেমনভাবে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘বলো, যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান?’ (সূরা আল-জুমার, আয়াত: ৯) তাই নবী করিম (সাঃ) স্বয়ং নারীদের বিদ্যাশিক্ষা গ্রহণের প্রতি বিশেষভাবে সতর্ক দৃষ্টি রাখতেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে নারীদের উদ্দেশে শিক্ষামূলক ভাষণ দিয়ে উদাত্তকণ্ঠে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জ্ঞানার্জন করা ফরজ।’ (ইবনে মাজা) ইসলাম নারীকে মৌলিক মানবাধিকার তথা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা প্রভৃতি ক্ষেত্রে পুরুষের সমান মর্যাদা প্রদান করেছে। ইসলাম নারীকে বিদ্যাশিক্ষার অধিকার দিয়েছে। ধর্মীয় ও বৈষয়িক জীবনের শিক্ষা-দীক্ষা এবং যাবতীয় দায়দায়িত্বের সঙ্গে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সুযোগ সব মানুষের রয়েছে। আমরা এখান থেকে ইসলামের আলোকে শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান, পরিবার পরিজন নিয়ে সমাজের ভালো কাজগুলো করবো ইনশাআল্লাহ।
পরে ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলে মাদ্রাসার জমিদাতা ক্বারী মোঃ ইউসুফ আলী মোল্লার সভাপতিত্বে কোরআন ও হাদিস থেকে ওয়াজ করেন, ঢাকা আল কোরআন রিসার্স ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাতীয় কোরআন রিসার্স গবেষক হযরত মাওলানা মোঃ গোলাম আজম, বিশেষ মেহমান কুমিল্লা লাকসাম তরকারি জামে মসজিদের খতিব ও পেচরা দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক হযরত মাওলানা মীর মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, প্রধান বক্তা পাংশা সিদ্দিকিয়া ফাযিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মোঃ আওয়াবুল্লাহ্ ইব্রাহিম, বিশেষ বক্তা লাকসাম ফতেহপুর রেলক্রসিং জামে মসজিদের খতিব ও দারুল কুরআন ইসলামিয়া মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল হযরত মাওলানা মোঃ নুরুল্লাহ নেছারী এবং মাহফিল পরিচালনা করেন পাংশা শাহ্জুঁই কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হযরত মাওলানা মোঃ আবু মুছা আশয়ারী।