রাজবাড়ী জার্নাল ডেস্ক: স্ত্রী চামেলী বেগমকে ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘটনা ভিন্নখাতে রুপ দেওয়ার জন্য লাশ ঘর থেকে বারান্দায় এনে তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন পাষন্ড স্বামী রতন খা। পাংশা মডেল থানা পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে হত্যার মূল রহস্য। গ্রেফতার করা হয় রতন খা’কে । গেফতার রতন খা রাজবাড়ীর পাংশা’র বিলমন্ডব (বিল নিহারী) গ্রামের মো. হারিজ আলী খা’র ছেলে।
১৪ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১১ টার দিকে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী চামেলী বেগমকে তারই ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন রতন খা।
পাংশা মডেল থানা’র ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী চামেলী বেগমকে তারই ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন রতন খা। সে জানায় স্ত্রী মুরগী পালন করবে, তাকে একটি মুরগী’র খোপ (ঘর) বানিয়ে দিতে বলে। রতন খা সামান্য আয়ে স্ত্রীর কথা রাখতে পারছিলো না । এ বিষয় নিয়ে তার স্ত্রী চামেলী তার স্বামীকে চাপ দেয়, কেন পারবে না , তুমি কি কাজ করোনা , একটা সামান্য মুরগীর খোপ বানাতে বা কিনে দিতে তোমার সামর্থ্য হয় না কেন ? এ বিষয় নিয়ে চামেলীকে থাপ্পর দিলে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়, একপর্যায়ে স্ত্রী চামেলী রতন খা’কে অণ্ডকোষে লাথি মারে। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী চামেলীকে তারই ব্যবহৃত দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘটনা ভিন্নখাতে রুপ দেওয়ার জন্য লাশ ঘর থেকে বারান্দায় এনে তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ডাক চিৎকার করে এবং স্ত্রীর বাবার বাড়িতে খবর দেন রতন খা। পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী চামেলী বেগমকে (২৩) হত্যার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তার মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন রতন।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
তিনি জানান, শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১১ টার দিকে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী চামেলী বেগমকে তারই ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন রতন খা। এরপর এ হত্যাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য লাশ ঘর থেকে বারান্দায় এনে তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ডাক চিৎকার করে এবং স্ত্রীর বাবার বাড়িতে খবর দেন রতন খা। খবর পেয়ে পাংশা মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চামেলী বেগমের লাশ উদ্ধার করে সুরহতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এদিকে, এ ঘটনায় চামেলী বেগমের বাবা মো. আব্দুল মালেক মন্ডল বাদী হয়ে পাংশা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ রতন খা’কে গ্রেফতারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তার স্ত্রী চামেলীকে নিজ হাতে হত্যা করার অপরাধ স্বীকার করেন। পরে পুলিশ তার দেয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ওড়না এবং পরবর্তীতে ব্যবহৃত বিষের বোতলটি উদ্ধার করে।
রোববার আসামি রতন খাকে আদালতে পাঠানো হলে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম। ‘