স্টাফ রিপোর্টার: এবার সেরা শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশী অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন। গত ৪ঠা আগষ্ট লেকহেড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিষয়ক সিনেট কমিটি তাঁকে ২০২৩ সনের সেরা শিক্ষক হিসেবে মনোনীত করেন।
ড. নাসির উদ্দিন কানাডার লেকহেড বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশিল বিভাগের অধ্যাপক। ড. নাসির উদ্দিনের বাড়ি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার গোহাইলবাড়ি গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আরশেদ আলী মন্ডল। চার বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে নাসির দ্বিতীয়। স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে তিনি কানাডার অন্টারিওর ব্যারি শহরে বাস করেন।
অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন মুঠোফোনের মাধ্যমে বলেন, সম্প্রতি লেকহেড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কমিটি আমাকে সেরা শিক্ষক হিসেবে মনোনীত করেছেন। এতে আমি খুবই সম্মানিত বোধ করছি। আমার পরিবার, সহকর্মী তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। দেশবাসীর কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।
জানা গেছে, শিক্ষক হিসেবে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সম্মান। শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে মনোনীত হবার জন্য একজন শিক্ষকের অনেক বছর ধরে শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখা এবং নেতৃত্বদানসহ অভিনব পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা বিবেচনা করা হয়। উক্ত যোগ্যতার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিষয়ক সিনেট কমিটি প্রতি বছর একজন শিক্ষককে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সনে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. জিলিয়ান সিডাল আগামী ৩০শে অক্টোবর সিনেট মিটিংয়ের ড. নাসিরের হাতে সেরা শিক্ষকের সম্মাননা ও সনদ প্রদান করবেন। এছাড়া ড. নাসির উদ্দিনকে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে সর্বসাধারণের জন্য বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে সম্মান জানানো হবে। সর্বশেষ আগামী বছর সমাবর্তন (জুন ২০২৪ইং) অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে জনসাধারণের সামনে সম্মান জানানো হবে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ড. নাসির উদ্দিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশল বিভাগ থেকে ১৯৯৩ সালে ১ম শ্রেণিতে ২য় স্থান অধিকার করে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর একই বিভাগে যোগদান করে তিন বছরের অধিক সময় শিক্ষকতা করেন এবং পরবর্তীতে কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে কানাডার মেমোরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০০ সালে ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন।
সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তিনি গ্রামে ২০১১ সালে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। যেটি বর্তমানে একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘আরশেদ-সাজেদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’।
উল্লেখ্য, ড. নাসির ২০১১ইং সালে লেকহেড বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ গবেষক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। এছাড়া ২০২১ইং সনে বৈদ্যুতিক মোটরের উপর গবেষণা এবং সমাজের উপর এর অসামান্য অবদান রাখায় তড়িৎ কৌশলের সর্বোচ্চ সম্মান আই,ই,ই,ই ফেলো মনোনীত হন। আই.ই.ই.ই তড়িৎ কৌশলের আর্ন্তজাতিক সংগঠন যা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ পেশাজীবি সংগঠন। ইতিপূর্বে বৈদ্যুতিক মোটরের উপরে ড. নাসিরের অসাধারণ জ্ঞানের স্বীকৃতি স্বরুপ তার ছাত্ররা তাঁকে ‘মোটর মাস্টার’ উপাধিতে ভূষিত করে।
অধ্যাপক নাসির উদ্দিনের বড় বোন বালিয়াকান্দি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চাঁদ সুলতানা বলেন, নাসিরের ধারাবাহিক সফলতায় আমরা খুবই গর্বিত। সম্প্রতি সে কানাডার লেকহেড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা শিক্ষক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। এটি শুধু আমাদের পরিবার কিংবা এ উপজেলার নয়, বিষয়টি পুরো বাংলাদেশের জন্যই আনন্দের।’