রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ীতে জেলা পরিষদের সদস্যের বিরুদ্ধে কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতিকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার রাত ৯টায় শহরের দুই নম্বর রেলগেট এলাকায় সংগঠনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করা হয়।
বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়নের রাজবাড়ী জেলা কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, তাঁর বাড়ি শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভবানীপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হোসেন বক্তব্য দেন।
মারধর করার ঘটনায় ৬জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৮-১০জনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় রবিবার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আজম মন্ডলকে দুই নম্বর আসামী করা হয়েছে। তিনি রাজবাড়ী জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের (সদর উপজেলা) সদস্য ও মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহসভাপতি। তাঁর বাড়ি মিজানপুর ইউনিয়নের দয়ালনগর গ্রামে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিলো। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ভবানীপুরের বাসিন্দা মোমিন মন্ডল তাকে ফোন করে ডেকে নেয়। তিনি ভবানীপুর হোসেনের রাইস মিলের মোড় এলাকায় গেলে আজম মন্ডলের নেতৃত্বে চোখ, হাত বেঁধে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। এরপর তাকে একটি ইটভাটার পিছনের দিকে একটি ছাপড়া ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। চোখ, হাত-পা খুলে দেওয়া হয়। কাছে থাকা মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তাকে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথারী ভাে মারধর করা হয়। এতে তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফোলা জখম হয়। আজম মন্ডল তাঁর পকেটে থাকা দেড় হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। রাত আটটার দিকে গলায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে একশ টাকার তিনটি সাদা স্ট্যাম্পে সই নেয়। আবার সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য মারধর করা হয়। তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাকে মৃত ভেবে চরল²ীপুর নুরু মিয়ার ইটভাটা এলাকায় ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
তিনি অভিযোগ করেন, আজম মন্ডলরা একটি সমবায় সমিতি পরিচালনা করেন। ওই সমিতির নামে প্রতিটি বাল্কহেড থেকে কয়েকটি স্থান থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা চাঁদা তোলেন। আমরা শ্রমিকদের পক্ষে কাজ করি। এ কারণে আমাদের সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য আমাকে মারধর করা হয়েছে। সংগঠনের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি ও আমার সংগঠনের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আজম মন্ডল। তিনি বলেন, আমরা একটি ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি পরিচালনা করি। আমাদের সমিতি নিবন্ধিত। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এটি একেবারে ভিত্তিহীন। ওরা নদীতে চাঁদাবাজী করতে চেয়ে ছিল। কিন্তু পারেনি। পরে বিভিন্ন দপ্তরে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।